তথ্যপ্রযুক্তিতে ভালো করছে বাংলাদেশ

কোরসেরার সূচকে বাংলাদেশ
কোরসেরার সূচকে বাংলাদেশ

অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম কোরসেরা তাদের বৈশ্বিক স্কিল বেঞ্চমার্কিং বা দক্ষতা নির্ণায়ক প্রতিবেদন বৈশ্বিক দক্ষতা সূচক বা ‘গ্লোবাল স্কিলস ইনডেক্স ২০১৯’ (জিএসআই) প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে দক্ষতা বিষয়ক বর্তমান ট্রেন্ড ও বিভিন্ন দেশের পারফরম্যান্স তুলে ধরা হয়েছে।

বিশ্বের ৬০টি দেশ ও ডেটা সায়েন্স, প্রযুক্তি ও ব্যবসা শিল্পের ১০টি খাতের বিশ্লেষণ ওই প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছে। প্রতিবেদনে প্রযুক্তিগত দক্ষতার দিক থেকে অপারেটিং সিস্টেম, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো ক্ষেত্রে ভালো করছে বাংলাদেশ।

কোরসেরা বৈশ্বিক দক্ষতা সূচকে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক পারফরম্যান্স দেখানো হয়েছে। ওই তালিকায় বাংলাদেশসহ এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর পারফরম্যান্স তুলে ধরা হয়েছে। ওই সূচকে দেখানো হয়েছে, ৯০ শতাংশ উন্নয়নশীল অর্থনীতি এখন ক্রিটিকাল স্কিল বা জটিল দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে পেছনে পড়ে যাচ্ছে বা ঝুঁকিতে পড়ছে। ডেটা সায়েন্স, প্রযুক্তি ও ব্যবসা শিল্প নিয়ে কাটিং এজ, কম্পিটিটিভ, ইমার্জিং ও ল্যাগিং এ চারটি ভাগ করে দেশগুলোর অবস্থান দেখিয়েছে কোরসেরা। তাদের প্রথমবার প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে ওই তিনটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ল্যাগিং বা পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে। তবে আঞ্চলিক বিচারে বেশ কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ইতিবাচক। বৈশ্বিক পর্যায়ে ব্যবসা খাতে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৯, প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ৫৬ আর ডেটা সায়েন্সের ক্ষেত্রে ৫৭।

আঞ্চলিক পর্যায়েও বাংলাদেশ বেশ খানিকটা পিছিয়ে। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় ১৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান শেষের দিকে। তবে প্রযুক্তি ও কম্পিউটার দক্ষতার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ইতিবাচক দিকে যাচ্ছে। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অগ্রগতি ও এখাতে বিনিয়োগের বিষয়টি এখাতটিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তিগত দিক থেকে আঞ্চলিক পর্যায়ে বাংলাদেশের অবস্থান কিছুটা ভালো। বিশেষ করে প্রযুক্তি ও ডেটা সায়েন্সের দিক থেকে আঞ্চলিক পর্যায়ে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।

বৈশ্বিক পর্যায়ে ব্যবসা ক্ষেত্রে বিশ্বের ৬০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৯। বাংলাদেশের পরই মিসর। বাংলাদেশের ঠিক ওপরে সৌদি আরব (৫৮) আর পাকিস্তান (৫৭)। ভারতের অবস্থান ৫০। বিশ্বের পিছিয়ে থাকা দেশের মধ্যে মালয়েশিয়া, ডমিনিক রিপাবলিক, তাইওয়ান, ইউক্রেনের মতো দেশও রয়েছে। ব্যবসার উন্নত দেশ হিসেবে শীর্ষে ফিনল্যান্ড। এ ছাড়া সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডসও এগিয়ে রয়েছে।

অবশ্য প্রযুক্তিগত দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান কিছুটা ভালো। বিশ্বের ৬০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৬। বাংলাদেশের পেছনে রয়েছে মিশর, কেনিয়া, পাকিস্তান ও নাইজেরিয়া। তবে বাংলাদেশের অবস্থান পিছিয়ে পড়া দেশের তালিকাতেই আছে। প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে ৪৪ তম অবস্থানে আছে ভারত। উন্নত প্রযুক্তি দক্ষতা গ্রহণে আর্জেন্টিনা, চেক প্রজাতন্ত্র, অস্ট্রিয়া, স্পেন, পোল্যান্ড শীর্ষে।

ডেটা সায়েন্সের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৭ তম। বাংলাদেশের পেছনে রয়েছে সৌদি আরব, পাকিস্তান ও নাইজেরিয়া। এ তালিকায় ভারতের অবস্থান ৫০ তম। তালিকার শীর্ষে রয়েছে ইসরায়েল, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, অস্ট্রিয়া।

কোরসেরা তাদের সূচক তৈরিতে বর্তমান সময়ে যেসব দক্ষতা বেশি চাহিদাসম্পন্ন সেগুলো গ্রহণের হার বিবেচনায় ধরেছে। কোরসেরার প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রযুক্তিগত দক্ষতার দিক থেকে অপারেটিং সিস্টেম, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রে ভালো করছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া গণিত, পরিসংখ্যান, মেশিন লানিংয়ের বিষয়গুলোতেও দক্ষতা উর্ধমুখী। ব্যবসা ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্টিং ও ফিন্যান্সে কিছুটা ভালো করলেও কমিউনিকেশন, ম্যানেজমেন্ট ও সেলসের ক্ষেত্রে আরও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।