কয়টি শূন্য থাকবে?

হিসাবে জট পাকিয়ে যাওয়ার মতো একটি গণিতের সমস্যা দেখুন। আপনি কেনাকাটার জন্য দোকানে গেছেন। বেশ ভিড়। একটা জামা কিনলেন। দাম ৭০০ টাকা। ক্যাশে দিলেন এক হাজার টাকার একটি নোট। দোকানি বেখেয়ালে আপনাকে ৩০০ টাকার পরিবর্তে ফেরত দিলেন সেই জামার পুরো দাম ৭০০ টাকা। আপনিও না গুনেই সেই টাকা নিয়ে চলে এলেন। পরে দেখলেন পকেটে ৩০০ টাকার পরিবর্তে আছে ৭০০ টাকা। বুঝলেন এটা দোকানির ভুল। কিছুক্ষণ পর আপনি আবার সেই দোকানে গিয়ে ৪০০ টাকা দামের একটি টি-শার্ট কিনে ৪০০ টাকা দিলেন। এখন আপনি ভাবছেন, যাক বাড়তি যে ৪০০ টাকা দোকানি আপনাকে ভুলে দিয়ে দিয়েছিলেন, সেটা ফেরত দিয়ে নৈতিকভাবে দায়মুক্ত হলেন। প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি কি আসলেই দায়মুক্ত হলেন? এর সঠিক উত্তর হলো, না, আপনি দায়মুক্ত হলেন না। কারণ, পরে আপনি যে ৪০০ টাকা দিলেন, সেটা কিন্তু টি-শার্টের দাম হিসাবেই দিয়েছেন। সুতরাং দিন শেষে ক্যাশ মিলাতে গিয়ে দোকানি দেখবেন, তাঁর ৪০০ টাকা কম পড়ছে। আপনাকে তিনি প্রথমে যে ৪০০ টাকা বেশি দিয়েছিলেন, সেটা তাঁর লোকসান হিসাবেই রয়ে গেছে। দ্বিতীয়বার দোকানে গিয়ে আপনি কোনো কিছু না কিনে যদি সরাসরি ৪০০ টাকা দিয়ে তাঁর ভুল ধরিয়ে দিতেন, তাহলেই কেবল আপনি দায়মুক্ত হতে পারতেন।


গণিতের আরেকটি সমস্যার সমাধান দেখুন। দুই অঙ্কের একটি সংখ্যার এককের ঘরে রয়েছে ৬। দশকের ঘরে কত তা জানি না। কিন্তু এটা জানি যে একক ও দশকের ঘরের অঙ্ক দুটির যোগফল পুরো সংখ্যাটির চার ভাগের এক ভাগ। এখন বলুন তো সংখ্যাটি কত? এর সমাধানের সহজ উপায় হলো দশকের ঘরে ১, ২, ৩ ... ইত্যাদি অঙ্কগুলো বসিয়ে মনে মনে হিসাব করে দেখা যে সংখ্যাটি অঙ্ক দুটির যোগফলের এক–চতুর্থাংশ হয় কি না। যেমন: দশকের ঘরে যদি ১ বসাই, তাহলে সংখ্যাটি হয় ১৬, যার অঙ্ক দুটির যোগফল ৭, কিন্তু সংখ্যাটির এক-চতুর্থাংশ ৪। শর্ত পূরণ হলো না। দশকের ঘরে ৩ বসালে সংখ্যাটি হয় ৩৬, যার অঙ্ক দুটির যোগফল ৯ এবং ৩৬–এর এক–চতুর্থাংশও ৯। সুতরাং আমরা উত্তর পেয়ে গেলাম।


অবশ্য বীজগণিতের নিয়মে আমরা এর সমাধান সহজেই বের করতে পারি। যেমন: মনে করি, দশকের ঘরে রয়েছে ‘ক’। তাহলে সংখ্যাটির অঙ্ক দুটির যোগফল = (ক + ৬), যা মূল সংখ্যা (১০ক + ৬)-এর এক–চতুর্থাংশ। অর্থাৎ, (১০ক + ৬) / ৪ = (ক + ৬)। এই সমীকরণ থেকে পাই, (১০ক + ৬) = (৪ক + ২৪)। অথবা ৬ক = ১৮। অথবা, ক = ৩। তাহলে সংখ্যাটি ৩৬। এখন মিলিয়ে দেখুন, (৩ + ৬) = ৯ যা ৩৬–এর এক–চতুর্থাংশ!

এ সপ্তাহের ধাঁধা
কম্পিউটার বা ক্যালকুলেটর ব্যবহার না করে শুধু গণিতের যুক্তি ব্যবহার করে বলুন তো ১ থেকে ১৫ পর্যন্ত সংখ্যাগুলো পরপর গুণ করলে যে বিরাট বড় সংখ্যাটি পাব, তার একদম ডান পাশে কয়টি শূন্য থাকবে?


খুব সহজ। অনলাইনে মন্তব্য আকারে অথবা [email protected] ই-মেইলে আপনাদের উত্তর পাঠিয়ে দিন। সঠিক উত্তর দেখুন আগামী রোববার অনলাইনে।


গত সপ্তাহের ধাঁধার উত্তর
ধাঁধাটি ছিল এ রকম : ১০টি অজানা ধনাত্মক সংখ্যার গড় ৪ হলে এদের কয়টি সংখ্যা ৫ বা ৫–এর চেয়ে বেশি হতে পারে?


উত্তর
৫–এর সংখ্যা ০ থেকে ৮-যেকোনোটি হতে পারে, এর বেশি নয়।


সবাই মোটামুটি সঠিক উত্তর দিয়েছেন, যদিও পূর্ণাঙ্গ উত্তর প্রায় কেউই দিতে পারেননি। অনেকেই ০ বা ৫ বা ৭ ইত্যাদি ধরনের উত্তর দিয়েছেন। উত্তরগুলো এক অর্থে সঠিক। কিন্তু পুরোপুরি উত্তর যে ০ থেকে ৮ পর্যন্ত যেকোনোসংখ্যক হতে পারে, সেটা বলেননি। তবে ধন্যবাদ জানাই সবাইকে, আংশিক হলেও সঠিক উত্তরের জন্য।

কীভাবে উত্তর বের করলাম
যেহেতু গড় ৪, তাই ১০টি সংখ্যার যোগফল হবে (৪ × ১০) = ৪০। এখন যদি ১০টি ৪ হয়, তাহলে গড় ৪ হবে এবং ৫ বা এর চেয়ে বড় কোনো সংখ্যা থাকবে না। আবার সংখ্যাগুলো এ রকমও হতে পারে: ১টি, ২টি বা এর চেয়েও বেশি ০ এবং বাকিগুলো সব ৪। বিভিন্নভাবে সাজিয়ে একই উত্তর আরও পাওয়া যাবে, যেখানে ৫ একটিও নেই। ৫ বা এর চেয়ে বেশি সংখ্যা একটি হতে পারে, যদি সংখ্যাগুলো হয় ৮টি ৪, একটি ১ ও একটি ৭। আবার ৮টি ৪ এবং এর সঙ্গে ২ ও ৬ বা ৩ ও ৫ হতে পারে। তাহলেও গড় ৪-ই থাকবে এবং ৫ বা এর চেয়ে বেশি সংখ্যা থাকবে একটিই। এভাবে আমরা বলতে পারি, ৫ বা এর চেয়ে বেশি সংখ্যা থাকতে পারে সর্বোচ্চ ৮টি। এর বেশি নয়।