১৭ বছর পর...

উইন্ডোজ এক্সপি
উইন্ডোজ এক্সপি

মাইক্রোসফটের জনপ্রিয় উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এক্সপির কথা মনে আছে নিশ্চয়ই? এক্সপি সংস্করণটি বাজারে ছাড়ার ১৭ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো অনেকে এর মায়া ছাড়তে পারেননি। এখনো উইন্ডোজ এক্সপির বিভিন্ন সংস্করণের ব্যবহার দেখা যায়। তবে মাইক্রোসফট আর এই অপারেটিং সিস্টেমের কোনো সংস্করণের মেয়াদ টেনে নিতে চায় না।

পুরোনো এ অপারেটিং সিস্টেমের একটি সংস্করণের জন্য বর্ধিত সমর্থনসুবিধা ৯ এপ্রিল বন্ধ করে দিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি।

উইন্ডোজ এমবেডেড পিওএসরেডি ২০০৯ সংস্করণটি পয়েন্ট-অব-সেল ডিভাইসগুলোর জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছিল। এবারে ওই সংস্করণের জন্য নিরাপত্তা প্যাচসহ অন্যান্য সমর্থন বন্ধ করে দিয়েছে মাইক্রোসফট। এতে ১৭ বছর ৭ মাস ১৬ দিন পর উইন্ডোজ এনটি ৫.১ সংস্করণের জন্য সেবা বন্ধ করার ঘোষণা এল। ফলে, এটি সবচেয়ে বেশি দিন চালিত ওএস হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে।

প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট টেকরিপাবলিকের তথ্য অনুযায়ী, উইন্ডোজ এক্সপির অন্য এন্টারপ্রাইজ সংস্করণগুলোর মেয়াদ সম্প্রতি শেষ হয়েছে। উইন্ডোজ এক্সপি হোম ও প্রফেশনাল ডেস্কটপ সংস্করণগুলোর সমর্থন ২০১৪ সালে শেষ হয়।

তবে নেটমার্কেটশেয়ারের তথ্য অনুযায়ী, এখনো ৩.৭২ শতাংশ ডেস্কটপ অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহৃত হচ্ছে উইন্ডোজ এক্সপি। অর্থাৎ উইন্ডোজ ৮ ও লিনাক্সের চেয়ে এখনো এগিয়ে এক্সপি।

এ বছরের জানুয়ারিতে ডেস্কটপ অপারেটিং সিস্টেমে জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে আসে উইন্ডোজ ১০। এর আগে এই অবস্থানে ছিল ১০ বছর পুরোনো উইন্ডোজ ৭।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ডেস্কটপ ওএস বাজারের ৩৯.২২ শতাংশ দখল করেছে উইন্ডোজ ১০। আর উইন্ডোজ ৭-এর দখলে ছিল ৩৬.৯ শতাংশ বাজার।

প্রযুক্তি সাইট ভার্জের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাড়ে তিন বছরে ডেস্কটপ ওএস বাজারের শীর্ষে উঠেছে উইন্ডোজ ১০। উন্মোচনের পর থেকে প্রায় ১০ বছর শীর্ষে ছিল উইন্ডোজ ৭।

তবে বিশ্বব্যাপী উইন্ডোজ ৭ ব্যবহারকারীদের জন্য বড় ধরনের দুঃসংবাদ হচ্ছে, এ অপারেটিং সিস্টেম এ বছরই নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যাবে। ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি থেকে উইন্ডোজ ৭–এর নিরাপত্তা আপডেট বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। ওই সময়ের পরে উইন্ডোজ ৭ ব্যবহার অব্যাহত রাখলে তার দায়দায়িত্ব মাইক্রোসফট নেবে না বলে জানিয়েছে। তবে বাণিজ্যিক ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে সময়সীমা বৃদ্ধির সুযোগ পাবেন।

আগামী বছরের ১৪ জানুয়ারি থেকে সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য উইন্ডোজ ৭ ব্যবহার করা খুব ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে। কারণ, নিরাপত্তা আপডেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কম্পিউটার সহজেই ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার আক্রমণের ঝুঁকিতে থাকবে।

মাইক্রোসফট ইতিমধ্যে উইন্ডোজ ৭ বিক্রয় এবং নতুন ফিচার আপডেট বন্ধ করে দিয়েছে। ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর এই অপারেটিং সিস্টেম বাজারে নিয়ে আসে মাইক্রোসফট। পরবর্তী সময়ে ২০১২ সালের ২৬ অক্টোবর আরও উন্নত অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে উইন্ডোজ ৮ নিয়ে আসে। কিন্তু স্টার্ট মেন্যু না থাকাসহ আরও কিছু কারণে উইন্ডোজ ৮ এবং ৮.১ ব্যবহারে অনেকেই আগ্রহী হয়নি। এমনকি পরবর্তী ভার্সন উইন্ডোজ ভিস্তাতেও আগ্রহ দেখায়নি। বরং পুরোনো উইন্ডোজ ৭ ভার্সনেই আগ্রহ দেখিয়েছে।