১৭ বছর পর...

১৭ বছর পর বাড়িতে স্বজনদের কাছে ফিরে এসেছেন এক তরুণ। পানি আনতে গিয়ে ছয়-সাত বছর বয়সে পদ্মা নদীতে পড়ে নিখোঁজ শিশুটি এখন ২৪ বছরের তরুণ। তাঁর নাম সোনা মিঞা ওরফে জুয়েল।
গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী নগরের মনিবাজার এলাকার পাঠানপাড়ায় সোনা মিঞা নানার বাড়িতে ফিরে এলে তাঁকে নিয়ে হইচই পড়ে যায়। বাবার মৃত্যুর পর তাঁর মা আবার বিয়ে করেন। খবরে ছুটে আসেন মা নাসিমা খাতুনও। ছেলের ডান কনুইয়ের কাছে ও ডান গালে পোড়া দাগ দেখে মা ছেলেকে চিনতে পারেন।
সময়ের সঙ্গে সোনা মিঞার নামও বদলে গেছে। তাঁর বর্তমান নাম জুয়েল। বড় হয়েছেন ভারতের দিল্লির ভুবনিপুরা পাহাড়তলিতে এক সাঁওতাল পরিবারে। জালাল নামের এক সাঁওতাল সাপুড়ে সোনা মিঞাকে এত দিন লালনপালন করেছেন। সাঁওতাল সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির কাছ থেকে জালাল সোনা মিঞাকে কেনেন। জালাল ছেলের পরিচয়ে তাঁকে বড় করেন।
জুয়েল জানান, সপ্তাহ খানেক আগে জালালের মেয়ে মুক্তার সঙ্গে তাঁর বিয়ের আয়োজন করা হয়। তখন প্রতিবেশীরা নিজের ছেলে-মেয়েতে বিয়ে হয় না জানিয়ে প্রতিবাদ করেন। এরপর জালাল জুয়েল তাঁর নিজের ছেলে নয় বলে জানান। রাজশাহীর পাঠানপাড়া থেকে এনে একজন সাপুড়ে তাঁর কাছে জুয়েলকে বিক্রি করেছেন বলে জানান।
জুয়েল বলেন, এত দিন শুধু পাঠানপাড়া ও নানার নাম মনে ছিল। পাঠানপাড়া ভারতের কোনো জেলায়, নাকি বাংলাদেশে, তা তিনি জানতেন না। জালালের কাছ থেকে রাজশাহীর পাঠানপাড়ার নাম জানতে পেরে তিনি পালিয়ে আসেন।
মা নাসিমা খাতুন বলেন, ‘এত বছর ধরে আল্লাহর কাছে কেঁদেছি।’