বাংলাদেশে এখনো ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা চালু হয়নি: মোস্তাফা জব্বার

শিক্ষকদের সঙ্গে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। ছবি: সংগৃহীত।
শিক্ষকদের সঙ্গে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। ছবি: সংগৃহীত।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘আগামী দিনের পৃথিবী হবে প্রযুক্তি ও মেধানির্ভর। তাই পরিবর্তিত প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে হলে আমাদের এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা প্রথম শিল্প যুগের। এই শিক্ষাব্যবস্থা দিয়ে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে না। বাংলাদেশে এখনো সেভাবে ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা চালু হয়নি।’

তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে দিনব্যাপী ‘শিক্ষক সম্মেলন ২০১৯’–এর সমাপনী অনুষ্ঠানে ‘ভবিষ্যৎ শিক্ষা-ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এর আয়োজন করে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এবং এ টু আই।

মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, ‘আমাদের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে কর্মসংস্থানের। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মোকাবিলায় আমাদের এখনো দক্ষতার অভাব রয়েছে। আমাদের ছেলেমেয়েদের ডিজিটাল যুগের দক্ষতা দেওয়াই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। একটা শিশু ৬ বছর বয়সে স্কুলে গেলে তারও ১২ বছর পর হয়তো কর্মজীবন শুরু করবে। অর্থাৎ যে শিক্ষা এখন পেলে শিশুটি ১৮ বছর পর কর্মজীবনে ভালো করবে, সেই শিক্ষা তাকে দিতে হবে।’

বাংলাদেশে এখনো সেভাবে ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা চালু হয়নি মন্তব্য করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘শুধু কম্পিউটার ব্যবহার করা, পাওয়ার পয়েন্টে কিছু স্লাইড তৈরি করা অথবা পাঠ্যপুস্তককে পিডিএফ করে ই-বুক তৈরি করাই ডিজিটাল শিক্ষা নয়। ডিজিটাল শিক্ষার মধ্যে আমরা যেটি করতে পেরেছি তা হলো কম্পিউটার নিয়ে মানুষের ভয় কমেছে।’

পরিবর্তিত প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে শিক্ষকদের আরও বেশি জ্ঞান চর্চার এবং সৃজনশীল হওয়ার আহ্বান জানান মোস্তাফা জব্বার। শিশুদের হাতে এখন পৃথিবীর সব থেকে বড় লাইব্রেরি ইন্টারনেট রয়েছে। তাই শুধু ভালো শিক্ষকেরা, সৃজনশীল শিক্ষকেরা টিকে থাকবেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, একটা ডিভাইস শিশুদের হাতে দিলে তারা খুব আগ্রহ নিয়ে সেটি ব্যবহার করে। খুব দ্রুত সেগুলো সম্পর্কে শেখে শিশুরা। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই শিশুদের তৈরি করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আইটি ল্যাব ও ডিজিটাল ক্লাসরুমগুলো অনেক জায়গায় অবহেলায় পড়ে থাকে। এগুলোর প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।

একসেস টু ইনফরমেশনের (এ টু আই) প্রকল্প পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন মোস্তফা আজাদ, ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রভাষক দিদারুল আলম।

শেষে ডিজিটাল কনটেন্ট প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষকদের মধ্যে পুরস্কার হিসেবে ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়।