সংসার সামলে আয়ও করছেন ফাতেমা

ফাতেমা–তুজ–জোহরা ঘরে বসেই করে ফেলেন আউটসোর্সিংয়ের কাজ। ছবি: সংগৃহীত
ফাতেমা–তুজ–জোহরা ঘরে বসেই করে ফেলেন আউটসোর্সিংয়ের কাজ। ছবি: সংগৃহীত

শরীফ ফাতেমা-তুজ-জোহরা টেলিভিশনে হঠাৎই একদিন দেখলেন ফ্রিল্যান্সারদের নিয়ে একটি প্রতিবেদন। সফল ফ্রিল্যান্সারদের পুরস্কৃত করা হচ্ছে। আর পুরস্কার বিজয়ীদের মধ্যে মেয়েরাও আছেন। সেখানেই ফাতেমা জানলেন, ঘরে বসেই অনলাইনে কাজ করে আয় করা যায়। এরপর নিজে শুরু করেন। আর এখন মেয়ে নুজহাত আলভিনাকে কোলে নিয়েই দিনের পর দিন দিব্যি কাজ করে যাচ্ছেন।

সন্তান-সংসার সামলানোর পাশাপাশি বৈশ্বিক ও স্থানীয় অনলাইনে কাজের বাজারগুলোতে (মার্কেটপ্লেস) ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে কাজ করছেন তিনি। বেশি কাজ করেন আপওয়ার্কে। প্রথম আয় ছিল ৪০০ ডলার। ফাতেমা এখন এইচটিএমএল টেমপ্লেট, ওয়েবসাইট, ল্যান্ডিং পেজ এবং ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট নকশার কাজ করে ভালোই আয় করছেন বলে জানিয়েছেন।

ঘরে বসেই কাজ করতে চেয়েছিলেন
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন ফাতেমা। তবে তিনি ভাবতেন, চাকরি না করে ঘরে বসে কিছু করা যায় কি না। এরপর টিভিতে সেই প্রতিবেদন দেখার পর খোঁজখবর নিতে শুরু করেন। স্বামী মো. আরিফুজ্জামানকে সঙ্গে নিয়ে খুলনার বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে গিয়ে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করেন। সেখান থেকে জানতে পারলেন, এ জন্য ইন্টারনেট সংযোগসহ কম্পিউটার দরকার।

তবে সবচেয়ে বেশি দরকার ধৈর্য এবং কাজ জানা। তখন ওয়েবে বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখা শুরু করেন ফাতেমা। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে প্রশিক্ষণও নিতে শুরু করেন।

দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ২০১৫ সালের মাঝামাঝি ক্রিয়েটিভ আইটির খুলনা শাখায় প্রশিক্ষণ নেন ফাতেমা। প্রশিক্ষণের বিষয় ছিল ওয়েব ডিজাইন।

প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার আগেই টুকটাক
 কাজ শুরু করেন তিনি। সেই প্রশিক্ষণই বদলে দিয়েছে তাঁকে বলে জানিয়েছেন। ফাতেমা বলেন, প্রশিক্ষণের প্রতিটি মৌলিক বিষয় আত্মস্থ করার মাধ্যমেই আপওয়ার্কে ভালো কাজ করতে থাকি। আয়ের টাকা ঘরে বসেই ব্যাংকে পেয়ে যেতাম

পরিবারের সহযোগিতা

অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার মাধ্যমে আর্থিকভাবে সচ্ছল হয়ে ওঠে ফাতেমার পরিবার। ফাতেমা বলেন, ‘ফ্রিল্যান্সিংয়ে সাফল্য অর্জনের পেছনে মা, ছোট ভাই, স্বামী ও প্রশিক্ষকদের উৎসাহ ও অবদানের কথা স্বীকার করতে চাই।’

‘আমি যখন প্রথমে আমার স্বামীকে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে কাজের ব্যাপারে বললাম, এককথায় প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি করিয়ে দেন। আমার মা–ও যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করেছেন।’

নতুনদের জন্য পরামর্শ

১. কাজ শিখে তবেই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে হবে।

২. এটা ছেলেদের কাজ, মেয়ে বলে আপনি পারবেন না—এমন ধারণা মন থেকে সরিয়ে ফেলুন।

৩. ধৈর্য ধরতে হবে। অল্পতে হতাশ হওয়া
যাবে না।