নিজে নিজে বেরিয়ে আসে ক্যামেরা

স্মার্টফোনটির পর্দায় কোথাও কোনো কাটা-ফুটো নেই। একদম আপাদমস্তক ডিসপ্লে। আর দুপাশে দুটো কান থাকলে বলা যেত একান-ওকান। আগে দর্শনদারি পরে গুণবিচারি হলে মোটামুটি সব পরীক্ষায় সহজেই উতরে যাবে অপো এফ১১ প্রো। চমৎকার নকশা আর ডিসপ্লের সঙ্গে পপ-আপ সেলফি ক্যামেরা, ৪ হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি আর ৪৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরার কথা যোগ না করে উপায় নেই। দামও অবশ্য কম না—৩৬ হাজার ৯৯০ টাকা।

 কী কী আছে

পর্যালোচনার শুরুতে অপো এফ১১ প্রো সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়া যেতে পারে। অপোর মধ্যম সারির স্মার্টফোন এটি। তবে স্পেসিফিকেশন মন্দ নয়। সামনের মোটামুটি পুরোটাজুড়ে ৬.৫৩ ইঞ্চি ডিসপ্লে। সেলফি মোড চালু করলে ১৬ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা বেশ সাড়ম্বড়েই ওপর থেকে বেরিয়ে আসে (পপ-আপ)। ৪ হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ারের বেশ বড়সড় ব্যাটারি আছে এতে। পেছনে দুটি ক্যামেরা। মূল ক্যামেরাটি ৪৮ মেগাপিক্সেলের। সঙ্গে আছে ৫ মেগাপিক্সেলের ডেপথ সেন্সর। বিষয়বস্তুর মধ্যের দূরত্ব নির্ণয় করা এই ক্যামেরার কাজ। ক্যামেরার ঠিক নিচেই আছে আঙুলের ছাপ শণাক্ত করার সেন্সর।

১২ ন্যানোমিটারের মিডিয়াটেক হেলিও পি৭০ চিপসেটের সঙ্গে আছে অকটা কোর প্রসেসর। ৪ গিগাবাইট র​্যাম ও ৬৪ গিগাবাইট রম এবং ৬ গিগাবাইট র​্যাম ও ১২৮ গিগাবাইট রমের দুটি সংস্করণ আছে স্মার্টফোনটির। একাধিক রঙের মিশেল বা গ্র্যাডিয়েন্টের চলতি ধারা মেনেই অপো এফ১১ প্রোর নকশা করা হয়েছে। দুই ধরনের গ্র্যাডিয়েন্ট আছে এটির। রিভিউর জন্য আমরা যে ‘থান্ডার ব্ল্যাক’ রঙের স্মার্টফোনটি পেয়েছিলাম, সেটি ৬ গিগাবাইট র​্যামের।

অপো এফ ১১ প্রো ক্যামেরায় তোলা ছবি
অপো এফ ১১ প্রো ক্যামেরায় তোলা ছবি

কাজ যেমন

দর্শনদারি হলো, এবার আসি গুণবিচারি পর্বে। মোটামুটি টানা এক সপ্তাহ রেসিং গেম ‘অ্যাসফালট ৯’ খেলেছি। কোনো সমস্যা হয়নি। হওয়ার কথাও না। হেলিও পি৭০ চিপসেটের সঙ্গে ৬ গিগাবাইট র​্যাম যথেষ্ট। পারফরম্যান্স সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে আনতুতু বেঞ্চমার্ক টেস্টে। এতে প্রসেসর, গ্রাফিকসসহ বেশ কিছু বিষয় পরীক্ষা করে দেখা হয়। আনতুতু বেঞ্চমার্ক অ্যাপ ব্যবহার করে পরীক্ষা করা হয়েছে এমন স্মার্টফোনগুলোর তালিকায় ৫০ নম্বরে আছে। আর স্ট্রেস টেস্টের সময় হালকা গরম হলেও ঠান্ডা হতে তেমন সময় লাগেনি।

আকারে একটু বড় হলেও বেজেল (পর্দার বাইরের অংশ) পাতলা হওয়ায় এক হাতে সহজেই ব্যবহার করা যায়। ব্যাটারি চমৎকার। গেম খেলা, ওয়েব ব্রাউজিং করা বা ভিডিও দেখলেও একবার পূর্ণ চার্জে মোটামুটি এক দিন অনায়াসেই পেরিয়ে যায়। আর ভুক চার্জারের মাধ্যমে চার্জ হতেও সময় নেয় অল্প। স্মার্টফোনের নিচের দিকে একটি স্পিকার রয়েছে। অনুভূমিক পর্দায় (ল্যান্ডস্কেপ) গেম খেলার সময় সেটি হাতের আড়ালে ঢাকা পড়তে পারে।

ক্যামেরা

এখন পর্যন্ত সবচেয়ে মুগ্ধ হওয়ার মতো ফিচার পপ–আপ সেলফি ক্যামেরা। সেলফি মোডে গেলেই সেটি ওপর থেকে নিজস্ব ছন্দে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেরিয়ে আসে। পর্যাপ্ত আলোয় বেশ ভালোই ছবি তোলা যায়। সেলফি ক্যামেরার পোর্টেট মোড অবশ্য কিছুটা হতাশাজনক। পোর্ট্রেট মোডে সেলফি তোলার চুলের দিকে তাকালে ব্যাপারটা বোঝা যায়। বিশেষ করে চেহারার বাইরের অংশে সফটওয়্যারে বোকাহ আবহ (ঘোলা করা দেওয়া) যোগ করতে গিয়েই এমনটা হয়। পেছনের মূল ক্যামেরায় বেশ চমকপ্রদ ছবি তোলা যায়। তবে নাইট মোড থাকলেও রাতের ছবিগুলোতে বেশ গ্রেইন ছিল।

কেনার সময় কী কী থাকে

স্মার্টফোনের সঙ্গে মিলবে ব্যাক কভার, ইয়ারফোন, চার্জার এবং মাইক্রোইউএসবি কেব্​ল। আর পর্দায় আগে থেকেই স্ক্রিন প্রোটেক্টর লাগানো থাকে। মানে কেনার পর ব্যবহারের জন্য তাৎক্ষণিক অন্য অনুষঙ্গ কেনার প্রয়োজন নেই। চার্জার এবং ডেটা কেব্​ল দুটোই অপোর নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি। ‘ভুক’ নামের এই প্রযুক্তিতে অল্প সময়ে দ্রুত চার্জ হবে।