পুরোনো কম্পিউটারের দাম মিলিয়ন ডলার

নিলামে স্যামসাংয়ের তৈরি ১১ বছরের পুরোনো এই কম্পিউটারটির দাম উঠেছে ১২ লাখ ডলার
নিলামে স্যামসাংয়ের তৈরি ১১ বছরের পুরোনো এই কম্পিউটারটির দাম উঠেছে ১২ লাখ ডলার

১১ বছরের পুরোনো একটি ল্যাপটপ কম্পিউটার। ছয়-ছয়টি ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত। ঝাঁঝরাই বলা যায়। সেটার দাম নাকি অন্তত ১২ লাখ ডলার!

স্যামসাংয়ের তৈরি পুরোনো ল্যাপটপটিকে ‘একটুকরো শিল্প’ হিসেবে নিলামে তোলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ডিপ ইনস্টিংক্ট এবং চীনের বেইজিংয়ের শিল্পী গুয়ো ও ডংয়ের যৌথ উদ্যোগে নিলামটি পরিচালিত হচ্ছে। প্রকল্পটির নাম দিয়েছেন তারা ‘দ্য পারসিসটেন্স অব কেয়াস’। সর্বোচ্চ দর আহ্বানকারীর ঘরে উঠবে ল্যাপটপটি। এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত ১২ লাখ ডলারের কিছু বেশি দর দাম উঠেছে। নিলামটি শেষ হবে ২৭ মে।

ক্ষতির উদ্দেশ্যে ম্যালওয়্যার বিক্রি করা যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ। নিলাম পরিচালনাকারীরা বলছেন, এটা হয় শিল্প হিসেবে, নয়তো শিক্ষামূলক কাজে ব্যবহারের জন্য কিনতে হবে। তা ছাড়া মালিকের কাছে পাঠানোর আগে ‘এয়ার-গ্যাপড’ বা নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে ল্যাপটপটি।

নিলামে ল্যাপটপটি কেনার পর চালু না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। আর যদি চালু করতেই হয়, তবে ইন্টারনেটে যেন যুক্ত না করা হয়। কারণ, এতে ম্যালওয়্যারগুলো সক্রিয় অবস্থায় আছে। গুয়ো ও ডং বলেন, জ্যান্ত পরিবেশে জন্তুদের দেখা বেশি রোমাঞ্চকর।

ল্যাপটপে সক্রিয় ছয়টি ম্যালওয়্যার হলো:
ওয়ানা-ক্রাই: ২০১৭ সালে র‍্যানসমওয়্যারটি উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম চালিত কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে ব্যবহারকারীদের ফাইল কবজা করতে। ফাইল কবজা করে টাকা দাবি করা হতো।

আই-লাভ-ইউ: ২০০০ সালে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদর দপ্তর পেন্টাগন ও গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ এবং যুক্তরাজ্যের সংসদসহ মাত্র দুই সপ্তাহে পাঁচ কোটি কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে।

মাই-ডুম: ২০০৪ সালে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের ই-মেইলে দেখানো ত্রুটি-বার্তা দেখানো ওয়ার্ম।

সো-বিগ: ২০০৩ সালে ই-মেইলের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় এক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন, প্রতি ১৭টি ই-মেইলের একটিতে এটি পাওয়া যায়।

ডার্ক-টাকিলা: ব্যাংক ও লগ-ইনসংক্রান্ত তথ্য চুরির জন্য কি-লগার ম্যালওয়্যারটি নকশা করা হয়েছিল।

ব্ল্যাক-এনার্জি: ইউক্রেনের বিদ্যুতের গ্রিডগুলোতে হামলা চালানোর জন্য ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল।

এই নিলামে অবশ্য অবাক হয়েছেন অনেক সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ। কেভিন বিউমন্ট বলেছেন, ‘আপনি যদি লাখ দশেক ডলার বাঁচাতে চান তো আপনার কম্পিউটার অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার এবং নিরাপত্তা হালনাগাদ ছাড়াই কিছুদিন রেখে দিন।’

সূত্র: বিবিসি