মাঝের সংখ্যা দুটি কত?

গণিতে অনেক সময় আমরা কিছু মান ব্যবহার করি, যা স্বতঃসিদ্ধ হিসেবে ধরে নিই। প্রমাণ নিয়ে মাথা ঘামাই না। যেমন আমরা বলি ০.৯৯৯৯৯... = ১। এর প্রমাণ কী? এটা প্রমাণের জন্য আমরা প্রথমে (১/৩)–এর মান বের করি। ১-কে ৩ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল (১/৩) = ০.৩৩৩৩৩... । এখন এর বাঁ ও ডান পাশের অংশকে ৩ দিয়ে গুণ করলে, (১/৩) × ৩ = (০.৩৩৩৩..) × ৩ = ০.৯৯৯৯৯...। অথবা ১ = ০.৯৯৯৯৯...। প্রমাণিত।

আরেকটি মৌলিক প্রশ্ন দেখুন। আমরা বলি ১, ২, ৩, ... ১৬ ইত্যাদি একেকটি সংখ্যা। কিন্তু যদি প্রশ্ন করি শূন্য কী? এটি কি কোনো সংখ্যা? এর উত্তরে আমরা কী বলব? বিষয়টি আমরা এভাবে চিন্তা করতে পারি। ধরুন, আমার বন্ধু ১০ টাকা ধার করল। আমি বন্ধুর কাছে ১০ টাকা পাওনা থাকলাম। তিন দিন পর বন্ধু আমাকে ১০ টাকা পরিশোধ করে দিল। তাহলে বন্ধুর কাছে আমি কত টাকা পাওনা রইলাম? গণিতের হিসাব অনুযায়ী (-১০) + (+১০) = ০ টাকা পাওনা রইলাম। অর্থাৎ, ১০ যেমন একটি সংখ্যা, শূন্যকেও আমরা একটি সংখ্যা হিসাবে ধরে নিতে পারি। প্রাচীন ভারতে এভাবেই শূন্যের আবিষ্কার হয়। কৃষক চাষাবাদের সময় মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিত, আবার ফসল বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করত। একসময় দেখা যেত ঋণের খাতে কিছু নেই। এই কিছু না থাকা কীভাবে প্রকাশ করা যায়? এই প্রশ্নের সমাধানই শূন্য আবিষ্কারের পথ দেখায়। অর্থাৎ কৃষকের ঋণ = ০।

এ সপ্তাহের ধাঁধা
কাগজ-কলম বা ক্যালকুলেটর ব্যবহার না করে চট করে বলুন তো, চারটি ক্রমিক বিজোড় সংখ্যার গড় ৩৪ হলে সংখ্যা চারটির মধ্যবর্তী সংখ্যা দুটি কত?
খুব সহজ। অনলাইনে মন্তব্য আকারে অথবা [email protected] ই-মেইলে আপনাদের উত্তর পাঠিয়ে দিন। সঠিক উত্তর দেখুন আগামী রোববার অনলাইনে।

গত সপ্তাহের ধাঁধার উত্তর
ধাঁধাটি ছিল এ রকম: বর্তমানে মায়ের বয়স ২৩ ও মেয়ের বয়স ৫। বলুন তো, কত বছর আগে মা ও মেয়ের বয়সের গুণফল ছিল ১৯?

উত্তর
৪ বছর আগে মা ও মেয়ের বয়সের গুণফল ছিল ১৯।
প্রায় সবাই সঠিক উত্তর দিয়েছেন। ধন্যবাদ।

কীভাবে উত্তর বের করলাম
আমরা এখানে ধরে নেব মা-মেয়ের দুজনের বয়স পূর্ণ সংখ্যায় হিসাব করা হচ্ছে। যেহেতু তাদের বয়সের গুণফল হতে হবে ১৯ এবং ১৯ একটি মৌলিক সংখ্যা, সুতরাং যখন মায়ের বয়স ১৯ ও মেয়ের বয়স ১ বছর ছিল, একমাত্র তখনই তাদের বয়সের গুণফল ছিল ১৯। অর্থাৎ ৪ বছর আগে। সে সময় মায়ের বয়স ছিল (২৩ - ৪) = ১৯ এবং মেয়ের বয়স = (৫ - ৪) = ১।

বীজগণিতের সূত্র ব্যবহার করেও এর উত্তর বের করা যায়। মনে করি ‘ক’ বছর আগে মা ও মেয়ের বয়সের গুণফল ছিল ১৯। অর্থাৎ, (২৩ - ক) (৫-ক) = ১৯। অথবা, ক - ২৮ক + ৯৬ = ০। এই সমীকরণ থেকে পাই, (ক - ২৪) (ক - ৪) = ০। অর্থাৎ ক = ২৪ অথবা ৪। কিন্তু ক-এর মান ২৪ হওয়া অসম্ভব, কারণ এখনই মায়ের বয়স ২৩, তাই ২৪ বছর আগে মেয়ের জন্মের প্রশ্নই আসে না। সুতরাং ক = ৪। তাই নিশ্চিতভাবে বলা যায়, ৪ বছর আগে মা ও মেয়ের বয়সের গুণফল ছিল ১৯।