রাইডের গতি হাঁটার চেয়ে কত গুণ ছিল?

গণিতের কিছু সমস্যা অনেক সময় মনে মনে হিসাব করে সমাধান করা যায়। যেমন ১০৬ সংখ্যাটির বর্গ বের করতে হবে। খুব সহজে এর মান বের করার একটি উপায় হলো ১০৬–থেকে ৬ বিয়োগ করি আবার সংখ্যাটির সঙ্গে ৬ যোগ করি। এবার নতুন সংখ্যা দুটির গুণফল সহজেই বের করা যায়। কারণ, ৬ বিয়োগ করলে থাকবে ১০০ এবং তখন যেকোনো সংখ্যাকে ওই ১০০ দিয়ে গুণ করা সেকেণ্ডের ব্যাপার। সেজন্যই ৬ বিয়োগের কৌশল। তাহলে হিসাবটা দাঁড়াল, (১০৬–৬) × (১০৬ + ৬) = (১০০ × ১১২) = ১১২০০। এবার এর সঙ্গে ৬–এর বর্গ যোগ করি। (৬) = ৩৬। (১১২০০ + ৩৬) = ১১২৩৬। এটাই ১০৬–এর বর্গ। একইভাবে ২০৫–এর বর্গ = (২০৫–৫) × (২০৫ + ৫) = (২০০ × ২১০) = ৪২০০০। এবার এর সঙ্গে ৫–এর বর্গ = ২৫ যোগ করি। (৪২০০০ + ২৫) = ৪২০২৫। এটাই ২০৫–এর বর্গ। প্রশ্ন হলো এত সহজে হিসাব করা সম্ভব হয় কীভাবে? বীজগণিতের সাহায্যে এর ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে। ধরা যাক মূল সংখ্যাটি ‘ক’। এবং ‘খ’ অপর একটি সংখ্যা। আমরা ক–এর বর্গ কত সেটা বের করতে চাই। এখন (ক–খ) × (ক + খ) = (ক–খ)। এবার এর সঙ্গে (খ) যোগ করলে থাকবে শুধু (ক), অর্থাৎ যে সংখ্যার বর্গ বের করতে চাচ্ছি, সেটাই। আমরা ১০৬ বা ২০৫–এর বর্গ বের করার সুবিধার জন্য খ–এর মান এমনভাবে ঠিক করেছি যেন মূল সংখ্যার সঙ্গে সেটা যোগ ও বিয়োগ করলে নতুন সংখ্যা দুটির গুণফল মুখে মুখে হিসাব করে বের করা যায়। কৌশল এখানেই।

আরেকটি বিষয় দেখুন। আমরা লক্ষ করি যে ১–এর ছোট কোনো সংখ্যাকে বর্গ করলে তার মান মূল সংখ্যার চেয়ে ছোট হয়ে যায়, কিন্তু ১–এর বড় যেকোনো সংখ্যার বর্গ সেই সংখ্যার চেয়ে বড় হয়। যেমন, (০.২৫) সংখ্যাটি ১–এর চেয়ে ছোট। এর বর্গ = (০.২৫) = (০.০৬২৫), যা (০.২৫) এর চেয়ে অনেক ছোট। অথচ (২) = ৪, যা ২–এর চেয়ে বড়। ১–এর ছোট–বড় সংখ্যা হওয়ার কারণে এর বর্গের এমন পার্থক্যের কারণ কী? বিভিন্নভাবে এটা ব্যাখ্যা করা যায়। সহজে বোঝার জন্য আমরা বলতে পারি, (০.২৫) = (/৪), একটি ভগ্নাংশ। এখন একে বর্গ করলে হবে (/৪) = (/১৬)। এখানে হরের মান ৪–এর বর্গ, হরের মানের চেয়ে অনেক বড় হবে। কারণ (৪) = ১৬। কিন্তু লব–এর মান ১–এর বর্গ =১, যা অপরিবর্তিত থাকবে। যেহেতু ভগ্নাংশের বর্গ করলে লব–এর চেয়ে হর–এর মান বেড়ে যায়, তাই পুরো ভগ্নাংশের বর্গের মান কমে যাবে। এ কারণেই আমরা লক্ষ করি, ১–এর চেয়ে ছোট কোনো সংখ্যার বর্গ, মূল সংখ্যাটির চেয়ে ছোট হয়ে যায়।

এ সপ্তাহের ধাঁধা
এক ব্যক্তি মোটরসাইকেলে অফিস যাচ্ছেন। মোট দূরত্বের দুই–তৃতীয়াংশ পথ যাওয়ার পর প্রচণ্ড যানজটে পড়লেন। তিনি অবশিষ্ট পথ হেঁটে অফিসে পৌঁছলেন। এতে মোটর সাইকেলে যত সময় তিনি চলেছেন, তার ৫ গুণ সময় হাঁটতে হয়েছে। তাঁর হাঁটার তুলনায় মোটর সাইকেলের গতি কত গুণ ছিল?
খুব সহজ। অনলাইনে মন্তব্য আকারে অথবা [email protected] ই–মেইলে আপনাদের উত্তর পাঠিয়ে দিন। সঠিক উত্তর দেখুন আগামী রোববার অনলাইনে।

গত সপ্তাহের ধাঁধার উত্তর
ধাঁধাটি ছিল এ রকম: এক ব্যক্তি ট্রেনে যাচ্ছেন। গন্তব্যের অর্ধেক অংশ পার হওয়ার পর তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন। অবশিষ্ট দূরত্বের চারভাগের একভাগ দূরত্ব অতিক্রমের পর তিনি জেগে দেখেন গন্তব্যে যেতে বাকি আরও ৬ কিলোমিটার। বলুন তো তাঁর মোট গন্তব্য কত দূর ছিল?

উত্তর
তাঁর গন্তব্যস্থলের মোট দূরত্ব ছিল ১৬ কিলোমিটার।
প্রায় সবাই সঠিক উত্তর দিয়েছেন। ধন্যবাদ।

কীভাবে উত্তর বের করলাম
ওই ব্যক্তি প্রথমে অর্ধেক = (/২) অংশ পার হয়েছেন। বাকি থাকল (/২) অংশ। এরপর ঘুমিয়েছেন বাকি পথের এক–চতুর্থাংশ = (/২) এর (/৪) = (/৮) অংশ। সুতরাং তিনি মোট দূরত্ব অতিক্রম করেছেন (/২) + (/৮) = (/৮) অংশ। বাকি থাকল (১ – /৮) অংশ = (/৮) অংশ। এটা ৬ কিলোমিটারের সমান। সুতরাং পুরো পথের দূরত্ব = (৬ × /৩) = (২ × ৮) = ১৬ কিলোমিটার।


আব্দুল কাইয়ুম
, সম্পাদক, মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা