দেশে দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে কাজ করবে ফুজিৎসু

বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে ফুজিৎসু রিসার্চ ইনস্টিটিউট। ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে ফুজিৎসু রিসার্চ ইনস্টিটিউট। ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি সেবা ও পণ্যসমূহ বিশ্ববাজারে সম্প্রসারণ, এ খাতে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি, জাপান ও বাংলাদেশি আইটি কোম্পানিসমূহের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ কয়েকটি বিষয়ে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও ফুজিৎসু রিসার্চ ইনস্টিটিউট একযোগে কাজ করবে। গতকাল সোমবার এ বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম ও জাপান ফুজিৎসুর পক্ষে প্রেসিডেন্ট এবং প্রতিনিধি পরিচালক শিনজো কাগাওয়া।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পরে ‘বাংলাদেশ-জাপান ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিস ইন আইসিটি সেক্টর’ শীর্ষক সংলাপে প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, জেট্রোর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ দায়সুকা আরাই, ডেটাসফটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব জামান। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পরিচালক খন্দকার আজিজুল ইসলাম ও বেসিসের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবির মডারেটর হিসেবে কাজ করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য এবং বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের মানবসম্পদকে উচ্চতর প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে ফুজিৎসু রিসার্চ ইনস্টিটিউট বিভিন্ন প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে। এসব প্রশিক্ষণের কোর্স কারিকুলামের মধ্যে থাকবে বিগ-ডেটা, ডেটা সায়েন্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, আইওটি, রোবোটিকস, ব্লক চেইন, সাইবার নিরাপত্তার মতো বিষয়। এ ছাড়া ফুজিৎসু হাইটেক পার্কগুলোয় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে কাজ করবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম দেশগুলোর মধ্যে জাপান অন্যতম। তখন থেকেই জাপান বাংলাদেশের পরম বন্ধু হিসেবে রয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপান সব সময় সহযোগিতা দিয়ে আসছে। আগামী পাঁচ বছর নাগাদ আইসিটি খাতে বাংলাদেশের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ৫ হাজার বিলিয়ন ডলার। এই লক্ষ্য অর্জনে জাপান বাংলাদেশের সেরা বন্ধু হিসেবে থাকবে বলে আমরা আশা করি।’

বাংলাদেশে জাপানকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে পলক বলেন, উ‘দ্যোক্তাদের জন্য সরকার আগামী অর্থবছরে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে। সরকার দেশের বিভিন্ন জেলায় ২৮টি হাইটেক পার্ক ও ইনকিউবেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করছে। বাংলাদেশের হাইটেক পার্কে বিনিয়োগের জন্য জাপানকে আমরা সব সময় স্বাগত জানাই। হাইটেক পার্কে বিনিয়োগকারীদের কর মওকুফসহ বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা আমরা দিচ্ছি।’

শিনজো কাগাওয়া বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উন্নতি দেখে জাপান আগ্রহী হয়ে উঠছে। দুই দেশের আইটি প্রতিষ্ঠানগুলো একে অপরের সঙ্গে কাজ করে আরও এগিয়ে যাবে এমন লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।’

জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, অনেক জাপানি প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশের আইসিটি খাত নিয়ে আগ্রহী। বিশেষ করে, এখন থেকে দক্ষ মানবসম্পদ নিতে চান তাঁরা।

উল্লেখ্য, চলতি বছরে জাপানে অনুষ্ঠিত ‘আইটি উইক-২০১৯’–এ বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষসহ বেসিস, বাক্য, বিসিএস এবং দেশের বেশ কিছু আইটি প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ করে।