ফেসবুকে সবাই বুড়ো ছবি দিচ্ছে কেন?

ফেসঅ্যাপ ব্যবহার করে তৈরি করা বুড়ো বয়সের ছবি। ছবি: সংগৃহীত
ফেসঅ্যাপ ব্যবহার করে তৈরি করা বুড়ো বয়সের ছবি। ছবি: সংগৃহীত

বুড়ো হলে আপনাকে কেমন দেখাবে? ফেসবুকে এমন ছবি পোস্ট করছেন অনেকেই। গত কয়েক দিনে ফেসবুকের টাইমলাইনে এমন ছবির সংখ্যা ছড়িয়ে পড়েছে। এটি মূলত ফেসঅ্যাপ নামের একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত অ্যাপের কারসাজি। ওই অ্যাপের মাধ্যমে নিজের ছবিকে পরিবর্তন করে বুড়ো ছবি বানিয়ে তা ফেসবুকে পোস্ট করাকে ‘ফেস অ্যাপ চ্যালেঞ্জ’ বলা হচ্ছে। এ চ্যালেঞ্জটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে। এ স্রোতে গা ভাসিয়ে অনেকেই ফেস অ্যাপ চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন।

ফেসবুকে ফেসঅ্যাপ ব্যবহার করে ছবি পোস্ট করার বিষয়টি নতুন নয়। ২০১৭ সালেই এ অ্যাপ বিভিন্ন ফিল্টারের কারণে ভাইরাল হয়েছিল। নিউরাল ফেস ট্রান্সফরমেশনস অ্যাপ হিসেবে তৈরি করেছে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়্যারলেস ল্যাব। অ্যাপটির মাধ্যমে মানুষের মুখের বিভিন্ন রূপ বদল করার সুবিধা ওই সময় থেকেই চালু ছিল। এবারে এতে নতুন ফিল্টার হিসেবে যুক্ত হয়েছে ‘ওল্ড ফিল্টার’। ৬০ বছর বয়স হলে আপনার চেহারা কেমন হবে, তা ওই ফিল্টারের মাধ্যমে তৈরি করে দেখা যায়।

ফিল্টারটি ভাইরাল হওয়ার কারণ সম্পর্কে প্রযুক্তিবিষয়ক বিভিন্ন সাইটে বলা হচ্ছে, এটি অনেকটাই বাস্তবসম্মত ছবি তৈরি করতে পারছে এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এটি চ্যালেঞ্জ আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। কার চেহারা বেশি মানানসই হয়েছে, তা দেখাতেই অনেকেই এ চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন।

নিজের বুড়ো চেহারা তৈরি করতে প্লে স্টোর থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। এরপর নিজের বা অন্য কারও ছবি নির্বাচন করে অ্যাপের বয়সের জায়গা থেকে নির্বাচন করে দিতে হবে। এতে নির্বাচন করে দেওয়া ছবিটিতে সম্পাদনা করে তাতে বলিরেখা, ধূসর চুলের মতো অন্যান্য পরিবর্তন চলে আসবে।

এনডিটিভির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যাপটি মানুষের মুখের আদল পরিবর্তন করে ফেলে। ছবি বিকৃত করে তা বয়স্ক, শিশু, নারী ও পুরুষের আদলে দেখায়। স্বাভাবিক ছবিতে মুখে কোনো হাসি না থাকলেও অ্যাপটির সাহায্যে তৈরি ছবিতে মুখে হাসি যুক্ত হয়। এতে ছবির ওপর ডিপ লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছবিটির ফিল্টার হিসেবে কাজ করে। যাঁরা নিজের মুখ নিয়ে খেলতে চান, তাঁদের খুশি করতেই এ অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। অ্যাপটিতে ব্যবহৃত হয়েছে নিউরাল নেটওয়ার্কস। এতে পরিবর্তিত ছবিটি বাস্তবের কাছাকাছি করার চেষ্টা করা হয়।

অ্যাপটি কি নিরাপদ?
ফেসঅ্যাপ অ্যাপ্লিকেশনটি ২০১৭ সাল থেকেই সমালোচনা রয়েছে। অ্যালগরিদম-সংক্রান্ত সমস্যা থাকায় শুরুতেই এতে বর্ণবৈষম্যের বিষয়টি উঠে আসে। এ ছাড়া প্রাইভেসি বা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয়গুলো নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। মজা করার জন্য অ্যাপটি ডাউনলোড করলেও এটি ডাউনলোডের সময় থার্ড পার্টি বা তৃতীয় পক্ষের হাতে আপনার ব্যক্তিগত কিছু তথ্য তুলে দেওয়ার জন্য সম্মতি দিতে হয়। অ্যান্ড্রয়েড ফোনে অ্যাপটি ডাউনলোডের সময় ইন-অ্যাপ পারচেজ, ফটো ও মিডিয়া ফাইল, ডিভাইস স্টোরেজ ও মাই ক্যামেরা অপশনের অনুমতি দিতে হয়। এ ছাড়া আরও ইন্টারনেট ডেটা গ্রহণ, নেটওয়ার্ক কানেকশন দেখা, পূর্ণ নেটওয়ার্ক সংযোগ, ফোন স্লিপিং মোডে যাওয়ার ঠেকানোর অনুমতি দিতে হয়।