আমাজনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামছে আলিবাবা

চীনা ই-কমার্স বা অনলাইনে পণ্য কেনাবেচা প্রতিষ্ঠান আলিবাবা যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি আমাজনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে যাচ্ছে। আলিবাবা গতকাল মঙ্গলবার ঘোষণা দিয়েছে, তারা বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য বিক্রির সুযোগ উন্মুক্ত করতে যাচ্ছে।

এর আগে আলিবাবার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো শুধু পণ্য কিনতে পারত। এখন থেকে সারা বিশ্বের ব্যবসায়ীদের কাছে আলিবাবার মাধ্যমে মার্কিন কোম্পানিগুলো পণ্য বিক্রি করতে পারবে।

সিএনএন বলছে, আলিবাবার এই উদ্যোগের কারণে প্রতিযোগিতার মুখে পড়বে আমাজন ও শপিফাই। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই দুই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বড় বড় মার্কিন কোম্পানিগুলো বিশ্বব্যাপী পণ্য বিক্রি করছে। তবে এরই মধ্যে অফিস ডিপো (ওডিপি) ও রবিনসন ফ্রেশ নামের দুটি শীর্ষ মার্কিন পণ্য উৎপাদক আলিবাবার নতুন এই সেবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।

ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে পণ্য বিক্রির এই ব্যবস্থাকে বলা হয় বিটুবি প্রক্রিয়া। ইউনাইটেড স্টেট ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিশন এক প্রতিবেদনে বলেছে, বিটুবি প্রক্রিয়ায় পণ্য বিক্রির মাধ্যমে ২০১৬ সালে বিশ্বব্যাপী ২৩ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলার আয় হয়েছিল। একই সময় ই-কমার্সের মাধ্যমে সরাসরি ক্রেতাদের কাছে পণ্য বিক্রি করে আয় হয়েছিল ৩ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। ধারণা করা হচ্ছে, এই আয়ের বড় অংশই এখন বিভিন্ন চীনা কোম্পানির হাতে চলে যাবে।

এক হিসাবে দেখা যায়, ২০১৮ সালে আমাজনের মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৯৭২ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে একই সময় আলিবাবার সম্পদ ছিল ৪৩২ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার।

আলিবাবা গ্রুপের উত্তর আমেরিকার বিটুবি ব্যবসার প্রধান জন ক্যাপলান বলছেন, আলিবাবার লক্ষ্য উদ্যোক্তাদের শক্তিশালী করে তাদের ব্যবসায়িকভাবে সফল হতে সাহায্য করা। আমাজন, শপিফাই বা অন্য কারও সঙ্গে প্রতিযোগিতার বিষয়ে তারা ভাবছেন না।

আলিবাবার নতুন পদক্ষেপের এই ঘোষণা এমন এক সময় এল যখন চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ চলছে। এমন মুহূর্তে আলিবাবার এই পদক্ষেপে অনেকেই বিস্মিত। অবশ্য জন ক্যাপলান বলেছেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য রেষারেষি ও চীনা অর্থনীতির সাম্প্রতিক মন্থর প্রবৃদ্ধি নিয়ে অতটা চিন্তিত নন তিনি।

এদিকে মঙ্গলবারের ঘোষণার পরই একদিনের মাথায় আলিবাবার শেয়ার মূল্য এক শতাংশ হারে বেড়ে গেছে। চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি তুলনামূলক শ্লথ হলেও, চলতি বছরে আলিবাবার শেয়ারের দাম প্রায় ৩১ শতাংশ বেড়েছে।