ফ্রিল্যান্সাররা ফেসবুক-টুইটারে যা করবেন না

ফ্রিল্যান্সাররা প্রতিষ্ঠিত হতে পারলে ভালো আয় করেন। তবে সেই আয় টিকিয়ে রাখতে তাঁদের একজন বিক্রয়কর্মীর মনোভাব তৈরি করতে হয়। নিজের আর্থিক অবস্থা ভালো রাখতে নিজের ব্র্যান্ডের নিয়মিত ব্র্যান্ডিং জরুরি। এ কাজে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফ্রিল্যান্সারকে সাহায্য করতে পারে।

দক্ষ ও অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সাররা জানেন, নিজের ওয়ালেট ঠিক রাখতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিজের ব্র্যান্ডের সঠিক উপস্থাপন জরুরি। এ জন্য নিজেকে একজন বিক্রয়কর্মীর মানসিকতা নিয়ে সেখান থেকে লাভ খুঁজে নিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমকে ব্যবসা বা কাজের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে কল করা, যোগাযোগ ও মিটিং ঠিক করার মতো কাজগুলো করতে পারেন। আপনার দৈনিক রুটিনের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের ব্যবহারের সময়সীমা ঠিক করে নিতে পারেন।

একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আপনি ভূমিকা রাখতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আপনার সবচেয়ে বেশি কাজে লাগবে লিংকডইন। এটা দারুণ নেটওয়ার্কিং টুল। তবে সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পাবেন ফেসবুক থেকে। টুইটারে আপনার দক্ষতা বিষয়ে সুচিন্তিত মতামত জানাতে পারবেন।

অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারদের মতে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে একজন ফ্রিল্যান্সারকে সামাজিক হতে হবে। মনে রাখতে হবে, এ নিয়ে মাতামাতি আপনার জন্য খুব বেশি ভালো ফল দেবে না। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সামাজিক না হলে আপনি নতুন মানুষের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না। লিংকডইনের মতো সাইটে আপনার পরিচিত পেশাদার ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন। যেকোনো বিষয়ে অভিনন্দন জানানো বা সময় সুযোগ বুঝে কাজের খোঁজখবর রাখতে পারেন।

যাঁরা উদ্যোক্তা বা নিজের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন, তাঁদের ফেসবুকে ৫০ শতাংশের বেশি ব্যবসাসংক্রান্ত বন্ধু হওয়া উচিত। এতে ব্যক্তিগত পর্যায়ের যোগাযোগের চেয়ে নেটওয়ার্কিং বাড়বে। ফেসবুকে আজেবাজে পোস্ট দেওয়ার চেয়ে আপনার কাজসংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে পোস্ট দিতে পারেন। টুইটারে টুইট করার ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে হ্যাশট্যাগ যুক্ত করে নিজের সেবাগুলো সম্পর্কে জানাতে পারেন।

প্রবাদে আছে, মুচির ছেলের পায়ে জুতো থাকে না। ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষেত্রে কথাটি খাটে। অনেক সময় নিজের সামাজিক যোগাযোগের সাইট নিজে চালাতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে পারেন। এ কারণে সহকারী সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারকে দায়িত্ব দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে কয়েকটি টুল আপনার কাজে লাগতে পারে। এমন একটি টুল হচ্ছে পকেট ব্রাউজার। এ ব্রাউজারের মাধ্যমে বিভিন্ন আর্টিকেল সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন। এ ছাড়া কাজে লাগাতে পারেন বাফার নামের সোশ্যাল মিডিয়া শিডিউল টুল। এতে বিভিন্ন পোস্ট প্রকাশ করার জন্য আগে থেকে শিডিউল করে রাখতে পারবেন। এ ছাড়া বানান ও গ্রামার ঠিক করতে গ্রামারলি ওয়েব অ্যাপ ও ক্রোম এক্সটেনশন ব্যবহার করতে পারেন।

সামাজিক যোগাযোগের সাইট ব্যবহারের ক্ষেত্রে সময় ঠিক করে নিতে পারেন। প্রতিদিন সকালে ১৫ মিনিট পড়ার জন্য, সপ্তাহে ১৫ মিনিট পকেটে সংরক্ষণ করা লেখা শিডিউল করতে ও প্রতিদিন সকালে কয়েক মিনিট আপনার প্রয়োজনীয় যোগাযোগের ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারেন।

সঠিক নিয়মে সামাজিক যোগাযোগের সাইট ব্যবহার করলে তা ফ্রিল্যান্সারের জন্য সম্পদ হয়ে উঠতে পারে। তা না হলে কাজের সময়ের বেশির ভাগই ‘ফেসবুক’ খেয়ে ফেলবে।