মনের কথা জেনে ফেলবে অন্যজন

ফেসবুক মন পড়ার যন্ত্র তৈরি করতে পারে।
ফেসবুক মন পড়ার যন্ত্র তৈরি করতে পারে।

মনে মনে যা ভাবছেন, তা পড়ে ফেলছে যন্ত্র। এমন যন্ত্রের কথা হয়তো গল্পে পড়েছেন বা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির চলচ্চিত্রে দেখেছেন। কিন্তু বাস্তবেও এমন ধরনের যন্ত্র তৈরির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন গবেষকেরা।

ফেসবুকের গবেষকেরা ভবিষ্যতে এমন যন্ত্র তৈরির কথা ভাবছেন, যা মস্তিষ্ক ব্যবহার করে কোনো শব্দ টাইপ করা এবং তা বার্তা আকারে পাঠাতে পারবে। গতকাল মঙ্গলবার নতুন এক গবেষণার আশানুরূপ ফলাফল পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ফেসবুকের কর্মকর্তারা।

এ গবেষণা সফল হলে ফেসবুকের পক্ষ থেকে অগমেন্টেড রিয়্যালিটি (এআর) গ্লাসসহ নানা পরিধানযোগ্য প্রযুক্তিপণ্য তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে স্মার্টফোন ব্যবহার না করেও পরস্পরের সঙ্গে বাস্তবে যোগাযোগ করা যাবে।

ফেসবুকের এক ব্লগ পোস্টে বলা হয়, পরস্পরের সঙ্গে সহজে যোগাযোগে ক্ষেত্রে এআরের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এতে মানুষকে আর ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। এ ছাড়া ল্যাপটপের দিকেও ঝুঁকে থাকতে হবে না। মানুষের চোখে চোখ রেখে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান–প্রদান করতে পারবে।

ফেসবুকের পক্ষ থেকে ২০১৭ সালে তাদের গবেষণা ল্যাব বিল্ডিং ৮–এর ঘোষণা দেওয়া হয়। সেখানে কম্পিউটার ব্রেইন ইন্টারফেস নিয়ে কাজ চলছে। ওই সময়ে ফেসবুকের কম্পিউটার ব্রেইন ইন্টারফেস প্রকল্পপ্রধান রেজিনা ডুগান বলেছিলেন, ফেসবুক একধরনের ‘সাইলেন্ট স্পিস সিস্টেম’ তৈরি করতে যাচ্ছে, যা মস্তিষ্ক থেকে সরাসরি মিনিটে ১০০ শব্দ টাইপ করতে পারবে। এটি একজন ফোনে যত শব্দ টাইপ করতে পারেন, তার চেয়ে দ্রুত কাজ করতে সক্ষম হবে।

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা পৃথক গবেষণায় প্যারালাইজড রোগীদের ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারে সফল হয়েছেন। তবে তাঁদের গবেষণার ক্ষেত্রে রোগীর মস্তিষ্কে আলাদা করে ইলেকট্রোড বসানো লাগে। তবে ফেসবুকের গবেষকেরা বলছেন, তাঁদের গবেষণায় মাথায় যন্ত্র পরলেই যোগাযোগ করা যাবে।

ফেসবুকের পক্ষ থেকে এ ধরনের কাল্পনিক প্রকল্পগুলো নিয়ে সব সময় মুখ বন্ধ রাখা হয়। এরই মধ্যে ফেসবুক তাদের তথ্য সুরক্ষা নিয়ে নানা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছে।

ফেসবুক তাদের গবেষণার ক্ষেত্রে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে।

তাদের গবেষণাসংক্রান্ত নিবন্ধ নেচার কমিউনিকেশনস সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।

ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের গবেষণা আরও সামনে এগিয়ে নিতে হবে। এ ধরনের যন্ত্রের উন্নয়ন হতে এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।

এলন মাস্কের কোম্পানি নিউরালিংক সম্প্রতি মস্তিষ্কের সঙ্গে কম্পিউটার যুক্ত করার একটি নতুন উদ্যোগের কথা জানিয়েছে।