সবচেয়ে শক্তিশালী এআই প্রসেসর

হুয়াওয়ের কর্মকর্তারা সবচেয়ে শক্তিশালী এআই প্রসেসর উন্মুক্ত করেছেন।
হুয়াওয়ের কর্মকর্তারা সবচেয়ে শক্তিশালী এআই প্রসেসর উন্মুক্ত করেছেন।

শক্তিশালী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রসেসর অ্যাসসেন্ড ৯১০ বাজারে আনার ঘোষণা দিল চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। শুক্রবার চীনের গুয়াংডং প্রদেশের শেনঝেনে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রসেসরের পাশাপাশি এআই কম্পিউটিং ফ্রেমওয়ার্ক মাইন্ডস্পোরের ঘোষণাও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হুয়াওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান এরিক ঝু সহ কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

হুয়াওয়ের দাবি, ‘অ্যাসসেন্ড ৯১০’ দ্য ভিঞ্চি সিস্টেম আর্কিটেকচারের ওপর নির্মিত একটি এআই প্রসেসর। দারুণ পারফরম্যান্স সত্ত্বেও ‘অ্যাসসেন্ড ৯১০’ প্রসেসরের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ ব্যবহারের মাত্রা ৩১০ ওয়াট, যা আগের পরিকল্পিত বিদ্যুৎ ব্যবহারের ধারণাকৃত মাত্রার (৩৫০ ওয়াট) চেয়ে অনেক কম।

মাইন্ডস্পোর এমন একটি এআই কম্পিউটিং অবকাঠামো, যা সব ডিভাইস, এজ এবং ক্লাউড এনভায়রনমেন্ট সকল পরিস্থিতিতে এআই অ্যাপ্লিকেশনের বিকাশকে সমর্থন করে। এ ছাড়াও, বাজারে বিদ্যমান নেতৃস্থানীয় ফ্রেমওয়ার্কে ন্যাচারাল ল্যাংগুয়েজ প্রসেসিংয়ের (এনএলপি) জন্য একটি সাধারণ নিউরাল নেটওয়ার্কে যে পরিমাণে মূল কোড রয়েছে, সে তুলনায় মাইন্ডস্পোরের কোডের পরিমাণ ২০ শতাংশ কম। এর ফলে এটি ডেভেলপারদের কর্মদক্ষতা ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়।

অ্যাসসেন্ড ৯১০ প্রসেসর এআই মডেল প্রশিক্ষণ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এর একটি পরীক্ষা হিসেবে শুক্রবারের অনুষ্ঠান উপলক্ষে একটি প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হয়। সেখানে দেখা যায় যে, অ্যাসসেন্ড ৯১০ এবং মাইন্ডস্পোর সিস্টেমকে একত্রীকরণ করে এআই মডেল প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে যে গতি পাওয়া যায়, তা টেনসরফ্লোর গতির তুলনায় দ্বিগুণ।

এ প্রসঙ্গে হুয়াওয়ের রোটাটিং চেয়ারম্যান এরিক ঝু বলেন, ‘অ্যাসসেন্ড ৯১০ আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি ভালো দক্ষতা দেখিয়েছে। নিঃসন্দেহে, বিশ্বের অন্য এআই প্রসেসরের তুলনায় এর আরও বেশি কম্পিউটিং শক্তি রয়েছে।’

এআই অ্যাপ্লিকেশন বিকাশকে আরও সহজ, বিস্তৃত এবং প্রাইভেসি সুরক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এআই কম্পিউটিং অবকাঠামো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৮ সালে, হুয়াওয়ে এআই কাঠামোর উন্নয়নের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করে। লক্ষ্যগুলো ছিল সহজ বিকাশ, কার্য দক্ষতা এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা। মাইন্ডস্পোর, এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে হুয়াওয়ের উল্লেখযোগ্য কাজ।

বিংশ শতাব্দীর রেলরোড এবং বিদ্যুৎ এবং একবিংশ শতাব্দীর গাড়ি, কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের মতোই এআইকে শতাব্দীর একটি অন্যতম প্রযুক্তি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করছে হুয়াওয়ে। ঝু এর মতে, এআই এখনো বিকাশের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং সত্যিকারের সাধারণ প্রযুক্তিতে পরিণত করতে হলে এআই প্রযুক্তিতে বিদ্যমান ব্যবধানগুলি দূর করতে হবে। হুয়াওয়ের এআই পরিকল্পনা এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন, এই ব্যবধানগুলি দূর করার মাধ্যমে অতি দ্রুত বিশ্বে এই নতুন প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেওয়া যায়।