সংখ্যা চারটি কত?

গণিতের কতগুলো সহজ বিষয় প্রথমে জেনে নিই। আমরা জানি শূন্য ছাড়া কোনো সংখ্যার পাওয়ার শূন্য হলে তার মান ১।সংখ্যাটি ৫ না ১০, সেটা কোনো ব্যাপার নয়। পাওয়ার শূন্য হলে তার মান হয়ে যাবে ১। কিন্তু কেন ১? কারণ আমরা জানি, ধরা যাক, (১৬÷১৬) = ১। এই হিসাবটি আমরা অন্যভাবেও লিখতে পারি: (২ ÷ ২) = ২(৪–৪) = ২ = ১। এখানে আমরা স্মরণ করতে পারি যে, দুটি সংখ্যাকে যদি একই সংখ্যার বিভিন্ন পাওয়ার হিসাবে প্রকাশ করা যায়, তাহলে সংখ্যা দুটির ভাগফল ওই সংখ্যার পাওয়ার দুটির বিয়োগফল হিসাবে প্রকাশ করতে পারি।এখানে যেহেতু ১৬ কে আমরা ২ এর পাওয়ার ৪ হিসাবে প্রকাশ করেছি, তাই এদের ভাগফলকে ২ এর পাওয়ার শূন্য হিসাবে প্রকাশ করা যায়। এবং এর মান তখন ১ হয়ে যাবে।

আরেকটি মজার বিষয় দেখুন। যদি প্রশ্ন করি, দুইটি মৌলিক সংখ্যার গুণফল কি কখনো মৌলিক সংখ্যা হতে পারে? না, এটা সম্ভব না। উৎপাদক দুটি মৌলিক সংখ্যা হলেও গুণফলটি মৌলিক সংখ্যা হবে না। কারণ এর দুটি উৎপাদক রয়েছে। তবে মৌলিক সংখ্যার সংজ্ঞা অনুযায়ী কোনো সংখ্যা ১ অথবা ওই সংখ্যাটি ছাড়া অন্য কোনো সংখ্যা দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য হবে না। যদি এটাই সংজ্ঞা হয়, তাহলে ১ তো একটি মৌলিক সংখ্যা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ১ ও অন্য একটি মৌলিক সংখ্যার গুণফল নিশ্চয়ই মৌলিক সংখ্যা।এ রকম যুক্তি কেউ দিতে পারেন। তবে সেটা সঠিক হবে না। কারণ ১ কে মৌলিক সংখ্যা হিসাবে ধরা হয় না।১ কেন মৌলিক সংখ্যা নয়, এর ব্যাখ্যা নিশ্চয়ই সবাই জানেন।

এ সপ্তাহের ধাঁধা
এমন চারটি পৃথক সংখ্যা বের করুন তো যাদের বিপরীত সংখ্যাগুলোর যোগফল হবে ১? অর্থাৎ এমন চারটি পৃথক সংখ্যা ক, খ, গ ও ঘ বের করতে হবে যেন (১/ক + ১/খ + ১/গ + ১/ঘ) = ১।
খুব সহজ। অনলাইনে মন্তব্য আকারে অথবা [email protected] ই-মেইলে আপনাদের উত্তর পাঠিয়ে দিন। সঠিক উত্তর দেখুন আগামী রোববার অনলাইনে।

গত সপ্তাহের ধাঁধার উত্তর
ধাঁধাটি ছিল এ রকম: দুই অঙ্কের একটি সংখ্যার অঙ্কগুলোর স্থান পরিবর্তন করলে সংখ্যা দুটির বিয়োগফল যদি ১৮ হয়, তাহলে দুই অঙ্কের এ রকম কতটি সংখ্যা আছে?

উত্তর
দুই অঙ্কের মোট ৮টি সংখ্যা আছে যাদের অঙ্ক দুটির স্থান পরিবর্তন করলে বিয়োগফল হবে ১৮।

কীভাবে উত্তর বের করলাম
এখানে আমরা বীজগণিতের নিয়ম ব্যবহার করব। মনে করি অঙ্ক দুটি ক ও খ। ক-এর মান ১ থেকে ৯ পর্যন্ত যে কোনো একটি হতে পারে। খ-এর মান হতে পারে ০ থেকে ৯ পর্যন্ত যেকোনো একটি অঙ্ক। ক ও খ দিয়ে গঠিত সংখ্যাটি (কখ)। এর মান (১০ক + খ)। অঙ্ক দুটির স্থান পরিবর্তন করে লিখলে সংখ্যাটি হবে (খক)। এর মান (১০খ + ক)। শর্ত অনুযায়ী, (১০ক + খ) -(১০খ + ক) = ১৮। অথবা, (৯ক - ৯খ) = ১৮। অর্থাৎ, ৯(ক - খ) = ৯×২। এই সমীকরণ থেকে আমরা পাচ্ছি, (ক - খ) = ২।

এখন আমরা হিসাব করে দেখতে পারি, যদি ক = ২ হয় তাহলে খ = ০। যদি ক = ৩ হয়, খ = ১। ক = ৪ হলে খ = ২।... ক = ৫, ৬, ৭, ৮ বা ৯ হলে, ক এর মান হবে যথাক্রমে ৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭। সুতরাং সংখ্যাগুলো হবে ২০, ৩১, ৪২, ৫৩, ৬৪, ৭৫, ৮৬ ও ৯৭। মোট ৮টি। এখন মিলিয়ে দেখি। (২০ - ০২) = ১৮। (৩১ - ১৩) = ১৮। (৪২ - ২৪) = ১৮। (৫৩ - ৩৫) = ১৮। (৬৪ - ৪৬) = ১৮। (৭৫ - ৫৭) = ১৮। (৮৬ - ৬৮) = ১৮ এবং (৯৭ - ৭৯) = ১৮। প্রতিটি ক্ষেত্রে অঙ্ক দুটি স্থান পরিবর্তন করে বিয়োগ করলে আমরা পাচ্ছি ১৮।

অবশ্য কেউ বলতে পারেন মোট সংখ্যা হবে ১৫। সেটাও এক অর্থে চলে। কিন্তু এখানে লক্ষণীয়, আমরা বলেছি,‘অঙ্ক দুটির স্থান পরিবর্তন করলে বিয়োগফল হবে ১৮।’ যদি ‘বিয়োগফল’ না বলে বলতাম, ‘সংখ্যা দুটির পার্থক্য হবে ১৮’, তাহলে হয়তো মোট সংখ্যা ১৫ বলা যুক্তিযুক্ত হতো। কেন ১৫, কেন ১৬ নয়? কারণ ২০ একটি দুই অঙ্কের সংখ্যা। এর অঙ্ক দুটি উল্টিয়ে লিখে আমরা যে ০২ পাই, এটা বিয়োগ করে আমরা পাব ১৮, এটা ঠিকই আছে। কিন্তু আমরা মূল সংখ্যাটি ০২ ধরতে পারি না, কারণ এটি দুই অঙ্কের নয়, এক অঙ্কের।