সেরা ১০ উদ্যোগ পাবে এক কোটি টাকা

প্রচারপত্র বিতরণ করছে রোবট।  প্রথম আলো
প্রচারপত্র বিতরণ করছে রোবট। প্রথম আলো

ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গতকাল সোমবার শুরু হয়েছে তিন দিনের ‘ডিজিটাল ডিভাইস এবং ইনোভেশন এক্সপো ২০১৯’। এই মেলার স্লোগান ‘মেড ইন বাংলাদেশ: কোনো কিছুই অসম্ভব নয়’।

গতকাল মেলায় গিয়ে দেখা যায়, ফটকের বাইরে দেশে তৈরি অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়ানো। ভেতরে ঢুকতেই আইডিয়া প্রকল্পের নানা উদ্ভাবন নিয়ে হাজির তরুণ উদ্যোক্তারা। দোতলায় উঠতেই হাত বাড়িয়ে দিল রোবট টিভেট। দেশি রোবট স্যালুট দিয়ে জানাল তার নাম—টিভেট। আরেকটু এগোলেই দেখি রোবট ফুটবল খেলছে। দুটি বড় হলজুড়ে নানা প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করছে।

মেলা ঘুরে এবং আয়োজকদের কাছ থেকে জানা যায়, মেলায় দেশীয় প্রযুক্তিপণ্য ও উদ্ভাবনকে প্রাধান্য দিয়ে শীর্ষ নতুন উদ্যোগ খুঁজে পেতে মেলার আগে মাসব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রচারমূলক কার্যক্রম চালানো হয়। সেখান থেকে নির্বাচিত সেরা ৩০টি উদ্ভাবন প্রদর্শিত হয় মেলায়। আর প্রদর্শনী শেষ হলে তরুণদের শীর্ষ ১০ উদ্যোগকে ১০ লাখ করে মোট ১ কোটি টাকা বঙ্গবন্ধু উদ্ভাবনী অনুদান (বিআইজি) দেওয়া হবে।

মেলায় অংশ নিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর দল ফ্রাইডে ল্যাব। তাঁরা রোবট ভালোবেসে উদ্ভাবন করেছেন বাংলায় কথা বলা হিউম্যানোয়েড রোবট ‘লি’। লি দেখতে অনেকটা মানুষের মতো। দুই পায়ে হাঁটতে পারে, বাংলা ভাষা বুঝতে পারে, কথা বলতে পারে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। এমনকি মানুষের চেহারা মনে রাখতেও পারে। লি মানুষের সঙ্গে করমর্দন করে, স্যালুট দেয়।

এর আগে বেলা তিনটায় মেলার উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘এখন বাংলাদেশেই তৈরি হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন কোনো স্বপ্ন নয়, বাস্তব। স্লোগান ধরেই বলি, কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।’

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এবারের মেলার মেড ইন বাংলাদেশের অ্যাম্বাসেডর হচ্ছে রোবট লি। এই লি আপনাদের এই মেলার তথ্য জানাবে। আপনারা পরিচিত হতে পারবেন তার সঙ্গে। এ ছাড়া স্থানীয় এবং বিদেশিদের মধ্যে বিপুলসংখ্যক বিনিয়োগকারী এক্সপোতে অংশ নিয়েছেন, যেখানে তাঁরা স্থানীয় উদ্ভাবনগুলো দেখবেন এবং সেটি থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহ, আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম, হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম এবং বিসিএসের সভাপতি মো. শহিদ-উল মুনীর।

বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) আয়োজিত এ মেলায় সহযোগিতা করছে সরকারের আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও স্টার্টআপ বাংলাদেশ। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিনা মূল্যে মেলায় প্রবেশ করা যাবে।