দেশি রোবট ও উদ্ভাবনে তরুণদের বেশি আগ্রহ

মেলা ঘিরে নানা প্রযুক্তি পণ্য প্রদর্শণ করা হচ্ছে। ছবি: প্রথম আলো।
মেলা ঘিরে নানা প্রযুক্তি পণ্য প্রদর্শণ করা হচ্ছে। ছবি: প্রথম আলো।

ঘড়ির কাঁটায় সকাল সাড়ে ১০টা। মেলা শুরু হয়েছে ১০টায়। এরই মধ্যে জমে উঠেছে ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো। ঢুকতেই দেখা হলো আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সালমান হাবিবের সঙ্গে। রেস্তোরাঁয় কাজ করে এমন একটি রোবট বানিয়েছেন তিনি। হাবিব তাঁর রোবটকে সবার সঙ্গে পরিচয় করে দিচ্ছেন।

আরেকটু এগিয়ে দেখা গেল ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরের শিক্ষার্থীদের বানানো ‘স্মার্ট বাসা’ নামের এক যন্ত্র। এর সাহায্যে অ্যাপের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের যেকোনো জায়গা থেকে বাসাবাড়ির বাতি, ফ্যান, এসি সব নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। স্মার্ট বাসা তৈরিতে খরচ হবে সাত হাজার টাকার মতো।

ইলেকট্রনিক যন্ত্র নির্মাতা বাই-বিট লিমিটেড মেলায় এনেছে তাদের নতুন যন্ত্র পালস ইলেকট্রন ম্যাগনেটিক ফ্লিড। এটি ব্যথা দূর করার একটি যন্ত্র। বেল্টের মতো করে যন্ত্রটি বাঁধা থাকলে এটি শরীরের রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দেয়। ফলে ব্যথা কমে যায়। ঘাড় ও কোমরের ব্যথা নিরসনে এটি কাজ করবে বলে নির্মাতারা জানিয়েছেন। এর দাম আট হাজার টাকা। মেলায় সাড়ে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এটি।

ফুটবলার রোবট। মেলা ঘিরে এমন অনেক রোবটের দেখা মিলবে। ছবি: প্রথম আলো।
ফুটবলার রোবট। মেলা ঘিরে এমন অনেক রোবটের দেখা মিলবে। ছবি: প্রথম আলো।

ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির ঐন্তিলা বিশ্বাস ও তাঁর দল বানিয়েছেন লঞ্চ পর্যবেক্ষণের যন্ত্র। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো ঘুরে দেখা যায় এমন দৃশ্য।

একই সঙ্গে মেলায় ওয়ালটন, স্যামসাংসহ নানা প্রতিষ্ঠান দেখাচ্ছে তাদের তৈরি পণ্য। মেলায় নানা নিরাপত্তা পণ্য প্রদর্শন করছে জেডকেটেকো। প্রতিষ্ঠানটির যোগাযোগ ব্যবস্থাপক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘স্মার্ট সিটির প্রয়োজনীয় সব ধরনের নিরাপত্তা পণ্য আমরা দেখাচ্ছি মেলায়।’

বিসিএসের সভাপতি মো. শাহিদ-উল মুনীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যা আশা করেছি তার চেয়েও বেশি সাড়া পেয়েছি। এই মেলায় “মেইড ইন বাংলাদেশ” পণ্যের সঙ্গে দর্শকেরা পরিচিত হচ্ছেন। দেশে তৈরি যন্ত্র ও উদ্ভাবন নিয়ে এই আসর আমরা সফল করতে পেরে খুবই আনন্দিত।’

একই সঙ্গে মেলায় বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক সেমিনার চলছে। এসবের মধ্যে ছিল ইন্সপায়ারিং উইমেন ইন ইনোভেশন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল লিডারশিপ সামিট, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, রোবটিকস বিষয়ের সেমিনার। মেলা প্রাঙ্গণে রয়েছে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান মনের বন্ধু। তারা সাইবার জগতে নিরাপদ থাকা, প্রযুক্তি আসক্তি, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতামূলক পরামর্শ দিচ্ছে বিনা মূল্যে। কেন কাউন্সেলিং বা মনঃসেবা প্রয়োজন, তাও তুলে ধরছে তারা।

গতকাল সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে ছিল কনসার্ট। এতে গান পরিবেশন করে আর্টসেল ও নেমেসিস।

তিন দিনের এই মেলা শেষ হবে আজ বুধবার। বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) আয়োজিত এ মেলায় সহযোগিতা করছে সরকারের আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও স্টার্টআপ বাংলাদেশ। সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে। বিনা মূল্যে মেলায় প্রবেশ করা যাবে।