সরকার যেভাবে উদ্ভাবন এগিয়ে নিতে পারে

বিশ্বের শীর্ষ ১০ উদ্ভাবনী দেশ। ছবি: স্টাটিস্টটার সৌজন্যে
বিশ্বের শীর্ষ ১০ উদ্ভাবনী দেশ। ছবি: স্টাটিস্টটার সৌজন্যে

বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ১০ উদ্ভাবনী অর্থনীতির মধ্যে শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। এরপর জার্মানি, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, ইসরায়েল সিঙ্গাপুর, সুইডেন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ফ্রান্সের অবস্থান। বার্ষিক ব্লুমবার্গ উদ্ভাবনী সূচকে এবার ৫০টি দেশকে গবেষণা ও উন্নয়ন, পেটেন্ট কার্যক্রম, উৎপাদনশীলতার মতো ৭ বিভাগে উদ্ভাবনী স্কোর দেওয়া হয়। এতে সর্বোচ্চ ৮৭ দশমিক ৩৮ স্কোর করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। জার্মানির স্কোর ৮৭ দশমিক ৩০। ওই ৬০টি দেশের তালিকায় অবশ্য বাংলাদেশ নেই। ভারত আছে ৫৪ নম্বরে।

ওই সূচকের বিষয়টি উল্লেখ করে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কেন্দ্রে রয়েছে উদ্ভাবন। উৎপাদনশীলতাকে রূপান্তরের পাশাপাশি কার্যকারিতা বাড়াতেও উদ্ভাবনের বিকল্প নেই। জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তির মতো বিশ্বের দীর্ঘস্থায়ী ও উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলো সমাধানে উদ্ভাবনী হতে হবে।

মানুষ যাতে পিছিয়ে না পড়ে, বিভিন্ন দেশের সরকারের পক্ষ থেকে তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি উদ্ভাবনী উদ্যোগে ভারসাম্যপূর্ণ সমর্থন দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি বৈশ্বিক পরিবর্তন ও দ্রুত প্রযুক্তিগত উন্নতিতে উদ্ভাবনের গতিপথ বদলে গেছে। এতে পরিবর্তন ঘটছে আরও দ্রুতগতিতে।

নতুন ও উচ্চতর মানযুক্ত পণ্য এবং আরও বেশি দক্ষতা ও পরিষেবা যুক্ত হওয়ায় উত্পাদনশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে, যথাযথ তথ্য, যোগাযোগ ও বিনিয়োগের অভাবে সম্ভাবনাময় প্রটোটাইপ ও পণ্য প্রায়ই বড় আকারে রূপ নিতে পারে না। ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের পলিসি পাথওয়েস ফর দ্য নিউ ইকোনমি-শেপিং ইকোনোমিক পলিসি ইন দ্য ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভল্যুশন শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। যুগান্তকারী উদ্ভাবনগুলোকে বড় আকারে পরিণত কোর পরিকল্পনা থেকে তা শনাক্ত ও সাহায্য করতে কয়েকটি দেশ এগিয়ে এসেছ। ইকোনোমিক ফোরামের শ্বেতপত্রে তিনটি সরকারি উদ্যোগের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে ইউরোপিয়ান ইনোভেশন কাউন্সিল, টেক ন্যাশন ইউকে আপস্কেল, দুবাই স্মার্ট সিটি এক্সিলারেটর।

ইউরোপের বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনগুলোকে শনাক্ত করে তা ব্যবসায় রূপান্তর করতে কাজ করছে ইউরোপিয়ান ইনোভেশন কাউন্সিল। এটি দুই ধরনের উদ্ভাবককে আর্থিক সাহায্য ও মেনটরিং করে থাকে। এর মধ্যে যৌথ গবেষণায় নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবকদের পাথফাইন্ডার কর্মসূচির মাধ্যমে অর্থায়ন করা হয়। স্টার্ট-আপ, উদ্যোক্তা ও মধ্যম পর্যায়ের নানা উদ্যোগকে এক্সিলারেটর কর্মসূচির মাধ্যমে উন্নয়ন ও বড় হয়ে নানাভাবে সাহায্য করে ইউরোপিয়ান ইনোভেশন কাউন্সিল।

যুক্তরাজ্যের টেক নেশন ইউকে আপস্কেলের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রজন্মের ডিজিটাল ব্যবসাগুলোকে বড় হতে সাহায্য করা হয়। ২০১৬ সালে টেক সিটি ইউকে এটি চালু করে। এর মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ কোচদেরও কাছ থেকে শেখার সুযোগ থাকে। এটি বিনা মূল্যের সেবা হিসেবে পরিচিত। যেসব প্রতিষ্ঠান আরও বেশি ক্রেতা তৈরি ও বাজার দখল করতে চায়, তাদের জন্য এ উদ্যোগ।

স্মার্ট শহর উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তাদের সাহায্য করার জন্য তৈরি হয়েছে দুবাই স্মার্ট সিটি এক্সিলারেটর। ইন্টারনেট অব থিংস, অটোমেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ব্লকচেইনের মতো উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা উদ্যোক্তাদের মেন্টরিংয়ের পাশাপাশি সিড ফান্ডিংও দেওয়া হয়।