তথ্যপ্রযুক্তিতে ৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্য অর্জনে যা প্রয়োজন

ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উদযাপনে বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরামের (বিআইজেএফ) সদস্যরা। ছবি: বিআইজেফের সৌজন্যে
ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উদযাপনে বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরামের (বিআইজেএফ) সদস্যরা। ছবি: বিআইজেফের সৌজন্যে

২০২১ সাল নাগাদ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যথাযথ পরিকল্পনা ও রূপরেখা তৈরি করে না এগোলে তা অর্জন করা চ্যালেঞ্জিং হবে। এখন পর্যন্ত মাত্র ১ বিলিয়ন ডলার আয়ের মাইলফলকে পৌঁছানোর কথা বলা হচ্ছে। আগামী দুই বছরে আরও ৪ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্য অর্জনে তাই এখনই কার্যকর রূপরেখা তৈরি করে এগোতে হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকার কারওয়ান বাজারের জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে ‘বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ) আয়োজিত ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ১১ বছর পেরিয়ে দুর্দান্তভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষকেও ডিজিটাল উন্নয়ন স্পর্শ করেছে। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচনী ইশতেহারে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা দেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিনটিকেই বর্তমান সরকার 'ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস' হিসেবে উদযাপন করছে। এ লক্ষ্যে আইসিটি বিভাগ 'সত্য-মিথ্যা যাচাই আগে, ইন্টারনেটে শেয়ার পরে' এবং টেলিযোগাযোগ বিভাগ 'সংযুক্তিতে উৎপাদন, দেশের হবে উন্নয়ন' স্লোগানে দেশজুড়ে দিনটি উদযাপনে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

গত ১১ বছর তথ্যপ্রযুক্তির নানা সূচকে এগিয়েছে বাংলাদেশ। বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের অক্টোবর শেষে দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি। মোবাইল ফোন সাবসক্রাইবার ১৬ কোটি ৪১ লাখের বেশি।

আইসিটি বিভাগ সূত্র বলছে, তাদের ইনফো সরকার প্রকল্পের তৃতীয় ফেজের আওতায় ইতিমধ্যে দেশের ৩ হাজার ৮০০–এর বেশি ইউনিয়নে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে গেছে। কিন্তু প্রকৃত ডিজিটাল উন্নতির ক্ষেত্রে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবহার আরও বাড়াতে হবে। এখন পর্যন্ত মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করে উৎপাদনশীল কাজের খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি। দেশে তাই উৎপাদনশীলতা বাড়াতে ইন্টারনেট পরিষেবার যথাযথ ব্যবহার বাড়ানো, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বাড়ানোয় যথাযথ প্রশিক্ষণে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।

বিশ্বের ৬৭টি দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন পণ্য ও সেবা রপ্তানি হচ্ছে। ১ বিলিয়ন ডলার এ খাত থেকে রপ্তানি আয় আসছে। তবে ২০২১ সালের মধ্যে এ খাত থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার আয় করতে চায় সরকার। এ জন্য দেশে ২৮টি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক তৈরি করা হচ্ছে। তবে এসব পার্ক স্বল্প পরিসরে চালু হয়েছে। এসব পার্কে দ্রুত উৎপাদনশীল কার্যক্রম চালু করতে হবে। তা না হলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে বাংলাদেশ যথাসময়ে পৌঁছাতে পারবে না।

‘মেড ইন বাংলাদেশ’ স্লোগানে যেমন বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এ অগ্রযাত্রা আরও বেগবান করতে হবে। প্রয়োজনে দেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে বাড়তি সহযোগিতার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে নিতে হবে। দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাতে হবে বলে উল্লেখ করেন বক্তারা।

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভুয়া খবর ঠোকানোর বিষয়টি গোটা বিশ্বের সামনে এখন চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবার জন্য সচেতনতা সৃষ্টিতে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সাংবাদিকেরা।

বাংলাদেশ আইসিটি ফোরাম (বিআইজেএফ) আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিআইজেএফ সভাপতি মোজাহেদুল ইসলাম, সহসভাপতি নাজনিন নাহারসহ বিআইজেএফের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।