ভারতের যে অ্যাপ বাংলাদেশে প্রতারণা করছে

ভারতের ব্যাঙ্গালুরুভিত্তিক অ্যাপ নির্মাতা রুপেশ ভান্ডারির তৈরি ‘ইমেইল স্পুফার’ অ্যাপটি প্রতারণার কাজে ব্যবহার হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ছবি: গ্যাজেটসনাউয়ের সৌজন্যে
ভারতের ব্যাঙ্গালুরুভিত্তিক অ্যাপ নির্মাতা রুপেশ ভান্ডারির তৈরি ‘ইমেইল স্পুফার’ অ্যাপটি প্রতারণার কাজে ব্যবহার হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ছবি: গ্যাজেটসনাউয়ের সৌজন্যে

মেইল ঠিকানায় আসা পরিচিত কোনো ব্যক্তির মেইলেও এখন বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘ইমেইল স্পুফিং’ অ্যাপ ব্যবহার করে কারও মেইল ঠিকানা নকল করে মেইল পাঠাতে পারে দুর্বৃত্তরা। এ অ্যাপ তৈরি করেছে ভারতের বেঙ্গালুরুভিত্তিক অ্যাপ নির্মাতা রুপেশ ভান্ডারি। তাঁর এ অ্যাপ ব্যবহার করে হাজারো অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারীর সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে বলে টাইমস অব ইন্ডিয়ার টেক সাইট গ্যাজেটসনাউ জানিয়েছে। অ্যাপটি বাংলাদেশ থেকেও ডাউনলোড করা হয়েছে।

ভারতের দিল্লি পুলিশের সাইবার সেল ২২ বছর বয়সী ওই অ্যাপ নির্মাতাকে আটক করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে ব্যাংকের বিভিন্ন ইমেইল, সামাজিক যোগাযোগের মিডিয়ার বিভিন্ন বার্তা ও টেলিকম অপারেটরদের বার্তা ব্যবহার করে মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গুগল প্লেস্টোরে ওই ভুয়া অ্যাপটি উন্মুক্ত করার পর তা দিয়ে নানা প্রতারণা করছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।

অ্যাপটি সম্পর্কে গুগল প্লেস্টোরে লেখা হয়েছে, অ্যাপটি মূলত মজা করার বা কৌতুক করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। অ্যাপটির মাধ্যমে যেকারও মেইল অ্যাড্রেস ব্যবহার করে কোনো ক্রেডেনশিয়াল (ইউজারনেম/পাসওয়ার্ড) না দিয়েই মেইল পাঠানো যায়। অ্যাপটি ভারত, যুক্তরাষ্ট্রে পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও প্রচুর ডাউনলোড হয়েছে।

ভারতের উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা রুপেশ ২০১৭ সালে জানুয়ারি মাসে অ্যাপটি চালু করেন তিনি। প্রথম বছরেই অ্যাপটি ১৪ হাজারের বেশি ডাউনলোড হয়। এর মধ্যে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, নাইজেরিয়া, তুরস্ক ও বাংলাদেশ রয়েছে। এ বছরের অক্টোবর মাসে অ্যাপটি নতুন সংস্করণ উন্মুক্ত করেছে রুপেশ। অ্যাপটি ব্যবহার করে প্রতারণা করতে রুপেশ বিভিন্ন ম্যাট্রমনি সাইট ও নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের ছদ্মবেশে মেইল পাঠাতেন।

অ্যাপের মাধ্যমে ইমেইলে আসা ব্যাংকের ঋণ, ডেটিং ও চাকরির নিয়োগের অফারে অর্থ দিয়ে অনেকেই প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ করেন। যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে মেইল পাঠানো হয়েছে সেগুলো দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে পরীক্ষা করে ভুয়া হিসেবে প্রমাণ পেয়েছে। পুলিশের সাইবার বিশেষজ্ঞরা এসব মেইল পরীক্ষা করে সেখানে ইমেইল স্পুফার অ্যাপের যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছেন। এরপরই রুপেশকে আটক করা হয়েছে।

সাইবার বিশেষজ্ঞরা ইমেইলে আসা লোভনীয় চাকরি, ডেটিং বা ঋণের অফার সম্পর্কে সতর্ক করেন। এসব ক্ষেত্রে অর্থ লেনদেনে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রতারিত হতে হয়।