হুয়াওয়ের স্বস্তি

যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের ৫–জি প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে অনেক দেশ। হুয়াওয়ে অস্বীকার করলেও মার্কিন সরকার প্রচার করেছে হুয়াওয়ের যন্ত্রপাতি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতে ৫–জি প্রযুক্তি পরীক্ষার জন্য অনুমতি পাওয়া হুয়াওয়ের জন্য স্বস্তির।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সম্প্রতি ভারত সরকার ৫–জি প্রযুক্তির ট্রায়ালে অংশ গ্রহণের অনুমতি দিয়েছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইসিটি যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়েকে। প্রতিষ্ঠানটির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতে চীন ও আমেরিকার মধ্যে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক কোন্দল শুরু হওয়ার পর এই প্রথম হুয়াওয়ের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করল ভারত সরকার। এর আগে ইতালির কাছ থেকেও ইতিবাচক সাড়া পায় প্রতিষ্ঠানটি। দেশটির একজন মন্ত্রী মন্তব্য করেন, হুয়াওয়েকে ৫–জি নেটওয়ার্কে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া উচিত।

হুয়াওয়ে ঘোষণা করেছে, ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত ভারতে পঞ্চম প্রজন্মের প্রযুক্তি স্থাপনে হুয়াওয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আশাটি আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

ভারতের টেলিকমমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ সম্প্রতি বলেন, সব ভেন্ডর ও অপারেটরদের সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ৫–জি চালুর কাজ করা হবে।

৫–জি সেবার বিষয়ে আগামী মার্চে দেশটিতে ৫–জির তরঙ্গ নিলাম বসার কথা রয়েছে। হুয়াওয়ের প্রতি ভারত সরকারের এই সবুজ সংকেতের ফলে তারা নিলাম প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। ঘোষণাটি হুয়াওয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে কি না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে দীর্ঘদিন সিদ্ধান্তহীনতায় ছিল ভারত সরকার।

৫–জি চালুতে করতে ফ্রান্স, হাঙ্গেরি, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, রাশিয়া ও মালয়েশিয়ায় অনুমতি পেয়েছে হুয়াওয়ে। সারা বিশ্বের ৫১টি বাণিজ্যিক ৫–জি নেটওয়ার্কের ৩৫টিতেই হুয়াওয়ের উপস্থিতি রয়েছে।

পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক তৈরিতে হুয়াওয়ের অংশগ্রহণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলে ইতিমধ্যে চীনা প্রতিষ্ঠানটিকে নিষিদ্ধ করেছে দেশটি। ৫–জি নেটওয়ার্কে হুয়াওয়ের যন্ত্রাংশের ব্যবহার বন্ধ করতে মিত্র দেশগুলোকেও আহ্বান জানিয়ে আসছে তারা। তাদের এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ড ও তাইওয়ান ইতিমধ্যে হুয়াওয়েকে নিষিদ্ধ করেছে।

অন্যদিকে টেলিনরের মতো টেলিযোগাযোগ কোম্পানি হুয়াওয়ের সঙ্গে কাজ করছে। সম্প্রতি নরওয়েতে ৫–জি নেটওয়ার্ক চালুর ক্ষেত্রে হুয়াওয়ের যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ঘোষণাও দিয়েছে টেলিনর।

৪–জি নেটওয়ার্ক নিয়ে হুয়াওয়ের সঙ্গে এক দশকেরও বেশি সময় কাজ করছে টেলিনর। এখন দেশটির প্রযুক্তি অবকাঠামো আধুনিকায়নেও এই অংশীদারত্ব অব্যাহত থাকবে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন টেলিনরের ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যানি নডসেন।