চলচ্চিত্র প্রযোজনায় সিদ্ধান্ত দেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
সিনেলাইটিক নামের এক স্টার্টআপের সঙ্গে চুক্তি করেছে মার্কিন চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্নার ব্রাদার্স। খবরটি কেন গুরুত্বপূর্ণ, তা বলছি। তবে চুক্তির কারণটা আগে জেনে নেওয়া যাক।
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসভিত্তিক স্টার্টআপটির মূল কাজ হলো কোনো চলচ্চিত্র ব্যবসাসফল হবে কি না, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তা পূর্বানুমান করা। কোনো চলচ্চিত্র নির্মাণের দায়িত্ব নেবে কি না, সে সিদ্ধান্ত গ্রহণে চুক্তি সই পর্বেই ওয়ার্নার ব্রাদার্সকে সাহায্য করবে সিনেলাইটিকের অ্যালগরিদম। এমনটাই জানিয়েছে দ্য হলিউড রিপোর্টার।
সিনেলাইটিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টোবিয়াস কুইজার অবশ্য জোর দিয়ে বলেছেন তাঁদের সফটওয়্যার সহায়ক মাত্র। জানিয়েছেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শুনলেই ভয়ংকর মনে হয়। তবে বর্তমানে এটি কোনো সৃজনশীল সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। প্রযুক্তিটি সংখ্যা ঘেঁটে ও বিশাল উপাত্ত থেকে ধারা (প্যাটার্ন) নির্ধারণে পারদর্শী, মানুষ যা সহজে পারত না।’
মানুষ কিংবা অ্যালগরিদম—শেষ সিদ্ধান্ত যারই হোক, চুক্তিটি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় হলিউডের যেখানে অনীহা ছিল। চলচ্চিত্রের মানুষেরা অবশ্য যন্ত্রের ওপর কখনোই পুরোপুরি ভরসা করেন না। চলচ্চিত্র প্রযোজক ও সিনেলাইটিকের গ্রাহক অন্দ্রিয়া স্কারসো দ্য ভার্জকে বলেন, স্টার্টআপটির সফটওয়্যার কখনোই তাঁর সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেনি। তবে ভিন্ন ভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনার সুযোগ করে দিয়েছে। বিশেষ করে চলচ্চিত্রের বাণিজ্যিক দিকটাতে ছোট ছোট উপাদান কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে, তা জানা যায়।
সিনেলাইটিকের ব্যবহারকারীরা সফটওয়্যারে চলচ্চিত্রের ঘরানা, বাজেট, কলাকুশলীদের নামসহ অন্যান্য বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে দেখতে পারেন কোনো উপাদানে পরিবর্তন আনলে কী হয়। টম ক্রুজের জায়গায় কিয়ানু রিভস নিলে কি চলচ্চিত্র সফল হবে? বাজেট একটু বাড়ালে ব্যাপারটা কী দাঁড়ায়?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সাধারণত বিদ্যমান তথ্যনির্ভর। আগের চলচ্চিত্রগুলোর তথ্য ইনপুট দিয়ে প্রযুক্তিটিকে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। অবশ্য গবেষণাও বলে অ্যালগরিদমের পূর্বানুমান মূল ফলাফলে বড়সড় প্রভাব ফেলে না।
তবে চলচ্চিত্র নির্মাণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিনিয়োগের একটা সুবিধা হলো, কম জটিল বিশ্লেষণের কাজটি মানুষের চেয়ে প্রযুক্তি ভালো করতে পারে।
ওয়ার্নার ব্রাদার্সের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট টনিস কিস বলেন, ‘কীভাবে চলচ্চিত্র তৈরি এবং দর্শকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে, তা ঠিক করতে আমরা প্রতিদিন অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। আমাদের তথ্য যত সঠিক হবে, তত দর্শকদের টানতে পারব।’ সূত্র: দ্য ভার্জ