করোনাভাইরাস নিয়ে ভুয়া তথ্যের প্রসার রোধে উদ্যোগ

করোনাভাইরাস সম্পর্কে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স
করোনাভাইরাস সম্পর্কে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাস–আতঙ্কে প্রাথমিকভাবে চীনে একটি দোকান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল। এবার জানাল, শুধু একটি নয়, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত চীনে তাদের সব দোকান ও কার্যালয় ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে চীনে আইফোন উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে কিংবা হবে কি না, এমন কিছু জানা যায়নি। এদিকে অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের চীন ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করছে। পাশাপাশি করোনাভাইরাস নিয়ে ভুল তথ্যের প্রসার রোধে উদ্যোগ নিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো।

ফেসবুক
গত বৃহস্পতিবার ফেসবুক ঘোষণা দিয়েছে, করোনাভাইরাস–সংক্রান্ত ভুয়া তথ্যের প্রসার রোধে অতিরিক্ত সতর্কতা নেবে তারা। এর অন্যতম হলো প্ল্যাটফর্মটি থেকে ভুয়া তথ্য সরিয়ে ফেলা। তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তৃতীয় পক্ষের (থার্ড পার্টি) প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করে ফেসবুক। এই যাচাইকারীরা যেসব পোস্টে ভুয়া তথ্য আছে বলে চিহ্নিত করেছে, সেগুলো ব্যবহারকারীর নিউজফিডে কম দেখাচ্ছে তারা। কোনো তথ্য যদি আগে যাচাই করা হয়ে থাকে, তবে ফেসবুকে শেয়ার করার সময় তা দেখাবে। তবে গোপন গ্রুপ এবং ব্যক্তিগত বার্তার সত্যতা যাচাই করার সুযোগ নেই তৃতীয় পক্ষের যাচাইকারীদের।

টিকটক
এদিকে টিকটক অ্যাপে কেউ করোনাভাইরাস হ্যাশট্যাগ লিখে খুঁজলে ব্যবহারকারীদের সতর্কতামূলক নোটিফিকেশন পাঠানো হচ্ছে। তাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে নির্ভুল তথ্য খুঁজতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। আর যেসব বিষয়বস্তু নীতিমালা ভঙ্গ করছে, তা টিকটিককে জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে নীতিমালা সম্পর্কে টিকটক জানিয়েছে, ‘আমাদের কমিউনিটি কিংবা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ক্ষতি করে, এমন কোনো ভুয়া তথ্য প্রচার করা যাবে না।’ পাশাপাশি ভুয়া তথ্য ছড়ানো রোধে তাদের দল কাজ করছে বলেও জানিয়েছে।

টুইটার
এক বিবৃতিতে টুইটার জানিয়েছে, গত চার সপ্তাহে করোনাভাইরাস নিয়ে দেড় কোটির বেশি টুইট করা হয়েছে। তবে এ নিয়ে ভুয়া তথ্য প্রসারে বিশেষ কোনো সংগঠিত চক্রের খোঁজ এখনো তারা পায়নি। ভুয়া তথ্য প্রচার অবশ্য থেমে নেই। তবে টুইটারে কেউ করোনাভাইরাস লিখে খুঁজলে ‘সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ থেকে পাওয়া সঠিক তথ্য জানতে ব্যবহারকারীকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

ইউটিউব
করোনাভাইরাস লিখে খুঁজলে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস–এর মতো নির্ভরযোগ্য সূত্রের খবরের লিংক দেখাচ্ছে ভিডিও ভাগাভাগির প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব। সংবাদমাধ্যম রিকোডকে ইউটিউব জানিয়েছে, ভুয়া তথ্যে যদি হয়রানি, ঘৃণামূলক কিংবা সংঘাতে উদ্বুদ্ধ করার মতো বিষয়বস্তু না থাকে, তবে তা সাধারণত তাদের নীতিমালা ভঙ্গ করে না। পাশাপাশি যেসব ভিডিওতে ভুয়া তথ্য থাকতে পারে বলে তারা মনে করে, সেগুলো ব্যবহারকারীর সামনে কম দেখানো হয়। এর আওতায় রয়েছে করোনাভাইরাসও।
অবশ্য শত চেষ্টা সত্ত্বেও এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর পক্ষে করোনাভাইরাস সম্পর্কে ভুয়া তথ্য প্রসার শতভাগ রোধ করা কার্যত অসম্ভব। এসব ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকেই দায়িত্বের পরিচয় দেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। সূত্র: ম্যাশেবল, রিকোড