শুধু টাকার জন্যই ফেসবুক তৈরি করেননি জাকারবার্গ

মার্ক জাকারবার্গ। ছবি: রয়টার্স
মার্ক জাকারবার্গ। ছবি: রয়টার্স

মার্ক জাকারবার্গের সাফ কথা, শুধু টাকার জন্যই তিনি ফেসবুক তৈরি করেননি। গত ৩১ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের উটাহের সল্ট লেক সিটিতে সিলিকন স্লোপস টেক সামিটে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে চেষ্টা করলেন ফেসবুক ও তাঁর সম্পর্কে তৈরি হওয়া ধারণাগুলো কিছুটা খণ্ডন করতে। জানালেন, এই দশকে মানুষের কাছে পছন্দের ব্যক্তিত্ব হিসেবে নয় বরং নিজেকে বোধগম্য করে তোলাই তাঁর লক্ষ্য। এক অর্থে লাইক নয়, ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মানুষের মন চাইছেন!

জাকারবার্গের অবস্থা হয়েছে নন্দ ঘোষের মতো। বন্ধুতে বন্ধুতে বিবাদ—দোষ জাকারবার্গের। দেশে দেশে যুদ্ধ—দোষ ওই জাকারবার্গের। সব অভিযোগ যে ভিত্তিহীন, তা-ও নয়। কেননা ইতিমধ্যে একাধিকবার ফেসবুকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত করার প্রমাণ মিলেছে। বিচারের কাঠগড়াতেও দাঁড়িয়েছেন জাকারবার্গ। ফলে মানুষের ধারণা, জাকারবার্গ ফেসবুক তৈরিই করেছেন টাকার জন্য। মানুষের এই ধারণার ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য, ‘একটা ব্যবসা দাঁড় করাব অথবা অনেক বিজ্ঞাপন বেচব কিংবা অনেক অর্থ উপার্জন করব বলে এর মধ্যে আসিনি।’

জাকারবার্গ যেদিন এসব বলেছেন, ঠিক একই দিনে হাঙ্গেরীয়-আমেরিকান কোটিপতি সমাজসেবী জর্জ সোরোস ফেসবুকের বিরুদ্ধে দুই কলম লিখেছেন। গত শুক্রবার নিউইয়র্ক টাইমস-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে সোরোস বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, জনাব ট্রাম্প (ডোনাল্ড ট্রাম্প) ও ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ উপলব্ধি করেছেন যে তাঁদের আগ্রহ একই রকম। প্রেসিডেন্টের আগ্রহ ভোটে জয়লাভ করায়, জনাব জাকারবার্গের আগ্রহ টাকা বানানোতে।’

সোরোসের এই অভিযোগ যথারীতি মানতে নারাজ ফেসবুক। টেক সামিটে জাকারবার্গকে তাঁর ও ফেসবুকের ভাবমূর্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে সোরোসের বক্তব্যটি তোলেননি ঠিকই; তবে বলেছেন, ‘কিছু মানুষ ভাবে, সব প্রতিষ্ঠানই কেবল টাকার জন্য লালায়িত।’

টুইটার ইতিমধ্যে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন প্রচার করবে না বলে জানিয়েছে। ফেসবুক আছে আগের অবস্থানে—রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন প্রকাশ করবে, তবে যাচাই-বাছাই করে। প্রতিষ্ঠানটির যুক্তি, রাজনীতিবিদেরা যা বলছেন, তা যেন মানুষ দেখতে পায়।

টেক সামিটে জাকারবার্গ মনে করিয়ে দেন, তাঁর ভাবনাই ছিল সব মানুষকে কথা বলতে দিতে হবে। এবং শুরু থেকেই চেয়েছেন, বড় ব্যবসায়ীদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও একই ধরনের প্রচারমাধ্যম পাক।

নিজেকে আরও খোলাসা করে তোলার এই নতুন উদ্যোগের ব্যাপারে জাকারবার্গ বলেন, ‘এটি নতুন পদক্ষেপ। আমার বিশ্বাস, এতে অনেকের মুখ বন্ধ হয়ে যাবে। খোলাখুলিভাবে বললে, আগের পদক্ষেপও অনেকের মুখে কুলুপ এঁটে দিয়েছিল। তো অন্য রকম কিছু চেষ্টা করা যাক।’ সূত্র: সিনেট