কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে আধুনিক প্রযুক্তি

কোভিড-১৯ অ্যান্টিবডি পরীক্ষা দ্বারা সংক্রমণ থেকে নিরাপদ ব্যক্তিদের শনাক্তের সহজ একটি উপায় নিয়ে এসেছে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় সফটওয়্যার রপ্তানিকারক কোম্পানি সিকিউর লিংক সার্ভিসেস (সেলিস)। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক এ সফটওয়্যার কোম্পানি একটি অ্যাপ নিয়ে এসেছে।

যেকোনো ব্যক্তি শুধুমাত্র মোবাইল নম্বর দিয়েই একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবে। অ্যাকাউন্ট খোলার সঙ্গে সঙ্গেই তারা একটি ইউনিক টেস্টিং নম্বর পাবে, যা সংযুক্ত হবে তাদের শরীরের অ্যান্টিবডি পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে। বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করা পরীক্ষার ফলাফল ওই বিশেষ নম্বরের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। এতে কোভিড-১৯ থেকে নিরাপদ ব্যক্তিদের আলাদা করে চিহ্নিত করা যাবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরের সহায়তা নেওয়া গেলে এটি আরও সহজ ও দ্রুত গতিতে সম্পন্ন করা যাবে।

পুরো বিষয়টি দাঁড়িয়ে আছে হার্ড ইমিউনিটির তত্ত্বের ওপর। যখন একটি দেশের আনুমানিক ৬০ শতাংশ মানুষ কোনো একটি রোগের সংক্রমণ থেকে নিরাপদ হয়ে যায়, তখন রোগতত্ত্ব অনুযায়ী তাকে হার্ড ইমিউনিটি বলে। অর্থাৎ, এই পর্যায়ে রোগের সংক্রমণ এতটাই বিলম্বিত হয় যে, সেটা জনস্বাস্থ্যের জন্য আর ঝুঁকিপূর্ণ থাকে না।

কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ পর্যায়ে পৌঁছাতে মাসখানেক বা বছরখানেক সময়ও লাগতে পারে। কার্যকরী টীকা আবিষ্কার করতে তার থেকেও বেশি সময় লাগতে পারে। এই পরিস্থিতিতে রোগটি থেকে নিরাপদ থাকা লোকেদের খুঁজে বের করা গেলে, তা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে। সমাজে এমন অনেকেই আছেন, যারা অজ্ঞাতভাবেই রোগ সংক্রমণ থেকে সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ। সংক্রমণের হার যত বাড়বে, এমন লোকের সংখ্যা ততই বাড়বে।

এই নিরাপদ ব্যক্তিদের শনাক্ত করাটা দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জন্য অতিশয় জরুরি। এটি পরবর্তী যেকোনো বড় সংক্রমণ রোধেও কার্যকর হতে পারে। আবার এই নিরাপদ ব্যক্তিরা দেশ ও সমাজের স্বার্থে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত হতে পারবেন। এতে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের আলাদা করা যেমন সহজ হবে, তেমনি তা রোগ প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখবে।

এই কার্যক্রমটি সফল করতে হলে বেশ কয়েকটি বিষয়কে নিশ্চিত করতে হবে। প্রথমেই আসে জনগণের বিষয়টি, যারা নিজেদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। সক্রিয় হতে হবে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকেও। ভ্রাম্যমাণ স্টল স্থাপনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের শরীরের অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে হাসপাতাল, রেস্তোরাঁ, অফিস, বিভিন্ন শপিংমল অথবা বিমানবন্দরের মতো জনসমাগম হয় এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তৃপক্ষকে জোর ভূমিকা নিতে হবে। ভূমিকা নিতে হবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের। তারা কিউ-আর কোড ও জাতীয় পরিচয়পত্রের সমন্বয়ে অ্যান্টিবডি পরীক্ষার বৈধতা যাচাই করবেন।

অ্যাপটির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি ও তাদের প্রদত্ত বিশেষ নম্বরের সঙ্গে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষার ফল জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। প্রতিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার একটি সমন্বিত ডাইরেক্টরিতে লগ-ইন করে প্রবেশ করতে পারবে, যেখানে তারা নিবন্ধন করা ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে https://selise.ch— ওয়েবসাইট থেকে। বিজ্ঞপ্তি