খরচ বাঁচিয়ে জীবন রক্ষা করবে সৌর চিমনি

পরিবেশবান্ধব ভবনে সৌর চিমনির ব্যবহার করা যেতে পারে। ছবি: আরএমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌজন্যে
পরিবেশবান্ধব ভবনে সৌর চিমনির ব্যবহার করা যেতে পারে। ছবি: আরএমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌজন্যে

পরিবেশবান্ধব ও সবুজ ভবন তৈরিতে অস্ট্রেলিয়ার গবেষকেরা এমন সৌর চিমনির ধারণা দিয়েছেন, যাতে শক্তি খরচ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসে এবং ভবনে আগুন লাগলে মানুষের জীবন বাঁচানোর যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়।

চলতি সপ্তাহে ‘এনার্জি অ্যান্ড বিল্ডিংস’ সাময়িকী এই গবেষণাবিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে একটি নতুন ভবনের টেকসই বৈশিষ্ট্যগুলোর অংশ হিসেবে শক্তি সঞ্চয় এবং অগ্নিনিরাপত্তার কথা ভেবে এই সৌর চিমনির নকশা করেছেন গবেষকেরা। বিশ্বে এটিই প্রথম।

নতুন প্রকল্পে, আরএমআইটি বিশ্ববিদ্যালয় ও কিংসটন সিটির সহযোগিতায় গবেষকেরা এই সৌর চিমনির নকশা করেছেন, যাতে বায়ু চলাচল-সুবিধা রয়েছে, আবার অগ্নিকাণ্ডের সময় ভবন থেকে ধোঁয়া বের হয়ে যাওয়ার সুবিধাও রয়েছে।

গুড নিউজ নেটওয়ার্কের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশেষভাবে নকশা করা সৌর চিমনি আগুন লাগলে মানুষকে ভবন থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বাড়িয়ে দেবে । মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরে যাওয়ার বেলায় এটি ২ থেকে ১৪ মিনিট পর্যন্ত সময় বেশি দেবে।

সৌর চিমনি একটি পরোক্ষ সৌর উত্তাপ এবং শীতল ব্যবস্থা, যা কোনো ভবনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে প্রাকৃতিক ব্যবস্থাকে কাজে লাগায়।

ভবনের উত্তাপ, বায়ু চলাচল ও শীতলীকরণে বিশ্বের মোট শক্তির আনুমানিক ১৯ শতাংশ চলে যাচ্ছে। নতুন ভবনে সৌর চিমনি যুক্ত করার পাশাপাশি বিদ্যমান কাঠামোগুলোতে পুনর্নির্মাণ কৌশল নিলে এই বিশাল পরিবেশগত ব্যয় কমানো সম্ভব।

গবেষক লং শি বলেন, ‘সৌর চিমনির পরিবেশগত প্রশংসা আগেই সুপ্রতিষ্ঠিত, তবে আগুন থেকে সুরক্ষার ক্ষেত্রে সম্ভাবনার বিষয়টি আগে দেখা হয়নি। জরুরি সময়ে যেখানে প্রতিটি সেকেন্ড মূল্যবান, সেখানে মানুষকে ভবন থেকে বের হওয়া বাড়তি সময় দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।’

গবেষকেরা বলেন, গরম বাতাস সব সময় ওপরের দিকে ওঠে—এই নীতির ওপর ভিত্তি করে সৌর চিমনি নকশা হয়েছে। আধুনিক সৌর চিমনিতে সাধারণত দেয়ালের পাশে কাচের একটি দেয়াল থাকে, যা কালো রং করা থাকে। এর নির্গমন পথ চিমনিতে বাইরের বায়ুপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে। সূর্য যখন চিমনিকে উত্তপ্ত করে, এটি তার ভেতরের বাতাসের তাপও বাড়িয়ে দেয়। এতে নিচের দিকে আরও বাতাস চলে যায় এবং ভেন্টিলেশনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক উপায়ে ভবনকে ঠান্ডা রাখে। বাইরে ঠান্ডা থাকলে চিমনি বন্ধ রাখা যায়। এতে তাপ ঘরের ভেতরেই থাকে বলে ঘর উষ্ণ রাখে।

গবেষকেরা বলেন, এটি একটি সহজ উদ্ভাবনী ধারণা, যার নির্মাণ খরচ কম, কিন্তু শক্তি খরচ কমিয়ে দেয়।

গবেষকেরা তাঁদের গবেষণায় ভবনগুলোতে ব্যবহার উপযোগী সৌর চিমনি তৈরির কারিগরি দিকনির্দেশনাও দিয়েছেন।