করোনার যে পরীক্ষায় ফল মিলবে ১ ঘণ্টায়

করোনা পরীক্ষায় সিআরআইএসপিআর প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স
করোনা পরীক্ষায় সিআরআইএসপিআর প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাসের জরুরি প্রয়োজনে পরীক্ষার জন্য জিন সম্পাদনা করার প্রযুক্তি সিআরআইএসপিআর ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। করোনা পরীক্ষার নতুন এ পদ্ধতিটি প্রথমবারের মতো অনুমোদন পেয়েছে। মাত্র এক ঘণ্টার মধ‌্যে এ পরীক্ষার ফল জানা যায়।

এ পদ্ধতি সিআরআইএসপিআর মেশিনারি প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে কাজ করে। নির্দিষ্ট জিনগত অনুক্রম পরীক্ষা করে নমুনা থেকে সার্স-কোভ-২ এর জেনেটিক উপাদানের অংশ বিশেষ শনাক্ত করতে পারে।


গবেষকেরা বলছেন, কিটের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে জমে থাকা কাজ দ্রুত সারা যায় এবং আরও বেশি পরীক্ষা করার সুযোগ আসতে পারে। তবে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে পরীক্ষার ফল আর বাস্তব পরিস্থিতিতে হাসপাতাল বা চিকিৎসাকেন্দ্রে পরীক্ষার ফল কী আসে, তা এখনো দেখার বাকি।


বিজ্ঞান সাময়িকীর নেচারের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিটটিকে 'জরুরি ব্যবহারের' বিধানের আওতায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যাতে দেশে জমে থাকা পরীক্ষার কাজ সহজ হয়।


নেচারের তথ্য অনুযায়ী, নতুন ডায়াগনস্টিক কিটটি ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনেোলিজির (এমআইটি) ব্রড ইনস্টিটিউটের সিআরআইএসপিআর প্রকৌশলী ফেং জাং, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ‌্যালয়ের গবেষেকেদের গবেষণার ভিত্তিতে তৈরি। ডায়গনিস্টিক কিট তৈরি করেছে কেমব্রিজভিত্তিক জৈব প্রযুক্তি বা বায়োটেকনোলজি সংস্থা শার্লক বায়োসায়েন্স।


গবেষকেরা বলেন, নাক, মুখ বা গলার সোয়াব বা ফুসফুস থেকে নেওয়া তরলের নমুনা সিআরআইএসপিআর পদ্ধতিতে জিনগত বিশ্লেষণ করা হয়। যদি ভাইরাসের জিনগত উপাদানটি পাওয়া যায়, তবে একটি সিআরআইএসপিআর এনজাইম ফ্লুরোসেন্ট আভা তৈরি করে।এক ঘণ্টাতেই ফল পাওয়া যায় বলে দাবি করেছে কিট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি।


২০১৭ সালে প্রকৌশলী ফেং জাং ও এমআইটির গবেষক জেমস কলিন্সের নেতৃত্বে গবেষকেরা প্রথম সিআরআইএসপিআর পরীক্ষার পদ্ধতির বর্ণনা করেন। ২০১৮ সালে তাঁরা জিকা ওডেঙ্গু নির্ণয়ের পদ্ধতিও উদ্ভাবন করেন।


নিউ ইয়র্কের রচেস্টার ইউনিভার্সিটির বায়োকেমিস্ট মিচেল ও'কনেল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে করোনা পরীক্ষায় গতি পেলেও এখনও অনেক জায়গায় টেস্ট কিটের স্বল্পতা রয়েছে। এফডিএ অনুমোদন পাওয়া কিটের ব্যবহার ব্যাপক বাড়িয়ে জমে থাকা পরীক্ষাগুলো দ্রুত শেষ করা যায়।


আরও বেশ কয়েকটি ল্যাব সিআরআইএসপিআর ভিত্তিতে সার্স-কোভ-২ ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা করার পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছে। গত মাসে ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকোয় ৪০ মিনিটের মধ্যে ফলাফল দেখাতে পারে, এমন টেস্টের বিবরণ প্রকাশ করেছেন। আর্জেন্টিনার গবেষকেরাও এ ধরনের পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছেন।


শার্লক বায়োসায়েন্সের প্রধান নির্বাহী রাহুল ধনদা বলেন, সংস্থাটি এখন একটি একক কার্তুজ তৈরির জন্য কাজ করছে, যা পরীক্ষাগারে প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রয়োজন হবে না। ঘরে বসে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এ জাতীয় পরীক্ষার জন্য বাড়তি বৈধতা ও আলাদা করে এফডিএ অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।