জাকারবার্গের ভয়

ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ উদ্বেগে রয়েছেন। উদ্বেগের কারণ কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্বের অনেক দেশ চীনের নীতি অনুসরণ করে ইন্টারনেটের ওপর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরোপের চেষ্টা করবে বলে আশঙ্কা তাঁর। এটা মানবাধিকার অবমাননা করার শামিল বলে মনে করেন তিনি। প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট দ‌্য ভার্জের এক প্রতিবেদনে এ তথ‌্য জানানো হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তা থিয়েরি ব্রেটনের সঙ্গে কোভিড -১৯ সৃষ্ট হুমকির বিষয়ে এক ঘণ্টার দীর্ঘ কথোপকথনে জাকারবার্গ বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোকে ইন্টারনেটের গণতান্ত্রিক পদ্ধতি দিয়ে চীনের বিরুদ্ধে লড়াই করা উচিত।

জাকারবার্গ বলেন, তার উদ্বেগের বিষয় হলো চীনা ইন্টারনেট মডেলের উত্থান। তিনি মনে করেন, চীনের মতো দেশ থেকে একটি মডেল উঠে আসছে, যা পশ্চিমা দেশগুলোর মূল্যবোধের তুলনায পৃথক। পশ্চিমে ইন্টারনেট অনেক বেশি গণতান্ত্রিক।
জাকারবার্গের কাছে ভয়ের ব্যাপার হচ্ছে, এখন অনেক দেশ চীনা মডেলটির দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছে। জাকারবার্গ এ প্রসঙ্গে বলেন, তারা মনে করছে, তাদের মডেল কিছু কিছু বিষয়কে সরকারকে আরও নিয়ন্ত্রণ দেয়। প্রত্যেকের কাছে ডেটা স্থানীয়করণে বাধ্য করার বিষয়টি আকর্ষণীয় হতে পারে। এতে সমাজটি পরিচালনার ক্ষেত্রে মানবাধিকারের যথেষ্ট সম্মান করতে হবে না। তিনি বলেন, 'আমি মনে করি, এটি সত্যিই বিপজ্জনক এবং আমি মডেলটি অন্য দেশে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে চিন্তিত।'

ফেসবুকের প্রধান নির্বাহীর মতে, চীনা মডেলের সেরা প্রতিষেধক হতে পারে পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলেো থেকে বেরিয়ে আসা একটি পরিষ্কার কাঠামো, যা বিশ্বজুড়ে একটি স্ট্যান্ডার্ড হয়ে উঠতে পারে।

চীন ধারাবাহিকভাবে ইন্টারনেটের স্বাধীনতার তালিকায় খুব নীচে অবস্থান করেছে। আমেরিকান এনজিও ফ্রিডম হাউস ৬৫ টি দেশের তালিকায় ইন্টারনেট স্বাধীনতায় দেশটিকে নিচের সারিতে রেখেছে।

জাকারবার্গ বলেন, মুক্ত মতামত, সুরক্ষা, গোপনীয়তা, প্রতিযোগিতার মতো বিষয়ে ভারসাম্য রক্ষার একটি বড় প্রশ্ন রয়েছে। তবে প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে নয়, বিশ্বজুড়ে কার কাঠামো জিততে চলেছে, সেটাই এখন সবচেয়ে ভীতিকর প্রশ্ন।