করোনায় পরিবর্তন মোকাবিলায় ৫ উপায়

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জীবন বদলে দিচ্ছে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি। অনেক পরিবর্তন এসেছে অবধারিতভাবে। ভবিষ‌্যতের কর্মক্ষেত্র পরিচালনার ক্ষেত্রে ব‌্যবস্থাপকদের সামনে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে বর্তমান পরিস্থিতি। আগের চেয়ে আরও উন্নত কর্মপরিবেশ সৃষ্টির সুযোগের অনুঘটক হতে পারে কোভিড-১৯। যেখানে নতুন প্রযুক্তির প্রয়োজনে নতুন পদ সৃষ্টি হবে ও নতুন দক্ষতার প্রয়োজন পড়বে।

কর্মীদের নতুন দ্রুত পরিবর্তিত কর্মক্ষেত্রে নতুন মনগত পরিবর্তন, আচরণ ও মূল্যবোধ শেখানো থেকে উপকৃত হবেন। উইফোরাম ডটওআরজির এক প্রতিবেদনে ব‌্যবস্থাপকদের প্রয়োজনীয় এমন ৫টি উপায়ের কথা বলা হয়েছে।

দ্রুত দক্ষতা ঝালাই: কর্মীদের যদি শিক্ষার মানসিকতা তৈরির বিষয়টি ভালোভাবে শেখানো যায়, তবে তা ধারবাহিকভাবে —এমনকি কখনো আকস্মিকভাবে পরিবর্তিত পরিবেশের সঙ্গে মোকাবিলা করতে তাদের ভালভাবে প্রস্তুত করবে। নতুন, উন্নত প্রযুক্তির দ্রুত গ্রহণের বিষয়টি মূল অনুঘটক ও নতুন পদ তৈরির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। মহামারির সময় কাজের চাপে পরিবর্তনগুলোতে কখনো কখনো সম্পদ বরাদ্দের ভারসাম্যহীনতার দেখা দিতে পারে। কর্মীদের দক্ষতা ঝালাই ও নতুন দক্ষতা অর্জনের মাধ‌্যমে ব্যবসায়ের এক অংশ থেকে অন্য অংশে যেতে সহায়তা করতে পারে।

নেতৃত্ব ও পরিচালনার সক্ষমতা বদল: কোভিড-১৯ সঙ্কট শিল্প ও অর্থনীতির ওপর বড় ধাক্কা দিলেও এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে মানুষের ওপর। তাদের মধ‌্যে ভয় ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।এর একটি বড় অংশকে বাড়ি থেকে হঠাৎ করেই কাজ করতে হচ্ছে। আমরা যে পরিস্থিতির মুখোমুখি, বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়ী নেতারা এর তাল সামলাতে কৌশল পরিবর্তন করছেন। তবে তার কোনো নীলনকশা নেই। ডিজিটাল দক্ষতা ও উন্নত অবকাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্য করে কর্পোরেট সংস্কৃতি এবং নেতৃত্বের দক্ষতার বিষয়টির ওপর লক্ষ‌্য রাখতে হবে। কারণ রূপান্তর ও নতুন উদ্ভাবন এখন চলমান।

আস্থা, স্বচ্ছতা ও খোলামেলা সংস্কৃতি: এ সময় আমাদের মবাইকে পরস্পরের প্রতি সহমর্মী হওয়ার প্রয়োজন। কারণ, আমরা সবাই অনিশ্চয়তার মুখোমুখি। নিয়ন্ত্রণ না করে কিছুটা হলেও কর্মীদের ওপর আস্থা রাখা যেতে পারে। কম তদারকিতেই কীভাবে মরিয়া হয়ে কাজ করতে হয়, মানুষ তা শিখছে। কোনটা কাজ আর কোনটা তা নয়, মানুষ তার চাকরিতে এখন শিখছে। মানুষ এখন নিয়মিত ভার্চ‌্যুয়াল মিটিং করছে, যা আগে এতটা সম্ভব হয়নি। সত‌্যি কথা বলতে কী, সমাজিক দূরত্বের যুগে মানুষ এখন সামাজিকভাবে আরও কাছে আসছে। আরও সহনীয় দল তৈরি হচ্ছে, যাদের মধ‌্যে নিয়মিত ও দূর থেকে যোগাযোগ অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এর বাইরে আমরা উদ্দেশ্য নিয়ে সম্প্রদায় হিসেবে সংযুক্ত থাকছি।

ব্যক্তিগত ও সামাজিক কল্যাণ: মহামারি ও লকডাউন পরিস্থতি কর্মীদের ব‌্যক্তিগত জীবনে নিজে ভালো থাকার পাশাপাশি সামাজিকভাবে ভালো থাকার বিষয়টি ঠিক রাখতে চাপ সৃষ্টি করেছে। কোভিড আসার অনেক আগে জুরিখ বুঝতে পেরেছিল যে, কর্মক্ষেত্র ও কাজের পরিবেশের চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। তাই একটি বৈশ্বিক সুস্থতার কাঠামো তৈরির পথে হাঁটে সুইজারল‌্যান্ড। বর্তমানে বিভিন্ন গ্রুপ ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন‌্য তা প্রয়োগ করেছে। এর চারটি স্তম্ভ হচ্ছে মানসিক, সামাজিক, শারীরিক ও আর্থিক সুস্থতা।

এ কর্মসূচির সঙ্গে বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতির প্রয়োজীয়তার অনেক মিল। অনেক সংস্থা আগামী মাসগুলোতে তাদের অগ্রাধিকারগুলোর ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করবে। এ নীতি তাদের কৌশলগত চিন্তাভাবনার জন্য ব্যয় এবং দক্ষতার পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠবে।

আরও চটপটে কর্মপন্থা: হঠাৎ করে বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষ দূরে বসে কাজ শুরু করেছে। কত দ্রুত তাঁরা এসব বিষয়ে মানিয়ে নেন, এর একটা পরীক্ষা হয়ে গেছে। এতে দেখা গেছে, মানুষ দ্রুত পরিবর্তন করে নিতে পারে এবং আমাদের ভাবনার চেয়েও আর চটপটে কর্মদক্ষতা দেখাতে পারে। ব্যবসায়ী নেতারা এখন কিছু অর্থে তাদের প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্যগত প্রক্রিয়ার বাইরে কী কী করা যায় এবং কী করা যায় না, এর একটি ভাল ধারণা পেয়েছেন। অনেকে ব‌্যবসা পরিচালনার সহজ, দ্রুত ও কম ব্যয়বহুল উপায় খোঁজ করছেন। এর সবই আমাদের পরিবর্তনের জন্য এবং নির্ধারিত পদ্ধতির বাইরে গিয়ে সহজাত দক্ষতার দিকে নির্দেশ করে।