জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার ফল ঘোষণা

জুনাইদ আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
জুনাইদ আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভালোভাবেই তৈরি হচ্ছে নতুন প্রজন্ম। কোভিড-১৯-এর বর্তমান পরিস্থিতিও থামিয়ে রাখতে পারেনি এই খুদে প্রোগ্রামারদের আগ্রহকে। ‘জানুক সবাই দেখাও তুমি’—এই স্লোগান সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের আইসিটি ও প্রোগ্রামিংয়ের প্রতি আগ্রহী করে তোলা ও তাদের প্রোগ্রামিং দক্ষতা যাচাই করার জন্য অনলাইনে অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ২০২০ (এনএইচএসপিসি ২০২০)।

সারা দেশের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনলাইন প্রস্তুতি প্রতিযোগিতা, অনলাইন মহড়া প্রতিযোগিতা, অনলাইন বাছাই প্রতিযোগিতা ও অনলাইন জাতীয় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় প্রতিযোগিতা শেষে গতকাল শনিবার অনলাইনের মাধ্যমে এ প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা এবং সমাপনী পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ। তিনি বলেন, সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে এখন অনলাইনে ক্লাস করার সুযোগ পাচ্ছে, অনলাইন প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিশ্ব পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে প্রোগ্রামিংকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।

অনলাইনে এনএইচএসপিসি ২০২০–এর নিবন্ধন ঘোষণার তিন দিনে এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আবেদন করে ৫ হাজার ৪৭৭ শিক্ষার্থী। দেশের সব জেলা এবং ৩৪৪ উপজেলা থেকেই শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনের কুইজ ও প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এ আয়োজনে শিক্ষার্থীরা জুনিয়র ক্যাটাগরি (ষষ্ঠ-নবম শ্রেণি) এবং সিনিয়র ক্যাটাগরি (দশম-এসএসসি-দ্বাদশ শ্রেণি ও পলিটেকনিক প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী), এই দুটি ক্যাটাগরিতে কুইজ অথবা প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এ ছাড়া একই সময়ে আইসিটিতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজন করা হয় আইসিটি কুইজ প্রতিযোগিতা।

প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার জুনিয়র বিভাগে বিজয়ী হয়েছে যথাক্রমে নুফিক চৌধুরী (হবিগঞ্জ সরকারি হাইস্কুল, সিলেট), দেবজ্যোতি দাস সৌম্য (জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিলেট), যারিফ রহমান (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল, রাজশাহী), আরিয়ান আহমেদ (ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড স্কুল, ঢাকা), ওয়াসিফ জামিল সিদ্দিকী (হবিগঞ্জ সরকারি হাইস্কুল, সিলেট), আহসান হারিছ আহমেদ (পাবনা জিলা স্কুল, রাজশাহী), জিতেন্দ্র বড়ুয়া (ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চট্টগ্রাম), আসনাফ মুহতাদী (দিনাজপুর জিলা স্কুল, রংপুর), মোহাম্মাদ আবু সাদিক (বরিশাল জিলা স্কুল, বরিশাল), মহতাসিম মনোয়ার (কুমিল্লা জিলা স্কুল, চট্টগ্রাম)। মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তাজরিয়ান তাহলিল (ড. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, চট্টগ্রাম)।

প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার সিনিয়র বিভাগে বিজয়ী হয়েছে যথাক্রমে রেজওয়ান আরেফিন (ঢাকা কলেজ, ঢাকা), আরমান ফেরদৌস (নটর ডেম কলেজ, ঢাকা), তাসমীম রেজা (নটর ডেম কলেজ, ঢাকা), মামনুন সিয়াম (চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রাম), দাইয়ান নুরী দাহী (এম সি কলেজ, সিলেট), সাফিন আলম (ঢাকা সিটি কলেজ, ঢাকা), সাফিন আহমেদ (রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা), আহমেদ নাসের তাহসিন চৌধুরী (স্কলারসশম, সিলেট), আল আমিন তুষার (একাডেমিয়া, ঢাকা), আরশাদ আয়মান (রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা)। মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নাজিয়া জান্নাতী (খুলনা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, খুলনা)।

অন্যদিকে, কুইজ প্রতিযোগিতার জুনিয়র ক্যাটাগরিতে বিজয়ী হয়েছে যথাক্রমে তাসনিম তমাল (ব্রাহ্মণগাঁ হাইস্কুল), মেহেরাব হোসেন (সেরোয়েল সরকার উচ্চবিদ্যালয়), মোসাম্মৎ আমেনা আকতার (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ), আরিফ উদ্দিন আহমেদ (ঢাকা সিটি কলেজ), সামিয়া রহমান (পটিয়া সরকারি কলেজ), সাজিদ মোশাররফ (কাফকো স্কুল অ্যান্ড কলেজ), রাতুল পাল (সরকারি সুন্দরবন আদর্শ কলেজ), দুর্গা প্রসাদ সরকার (সরকারি বিএম কলেজ, বরিশাল), প্রিতম দাস (নটর ডেম কলেজ), মো. আবির হোসেন (নটর ডেম কলেজ)।

কুইজ প্রতিযোগিতার সিনিয়র ক্যাটাগরিতে বিজয়ী হয়েছে যথাক্রমে গাজিউর রহমান নূর (বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিলেট), জান্নাত জামিমা (হাউসিং সেটেলমেন্ট পাবলিক স্কুল), নাজিফা বিনতে হাসান (বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টিউটোরিয়াল লিমিটেড), অর্ণব সুর (নোয়াখালী জিলা স্কুল), মাজেদুল কবির বাইতুল (অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়), মোজতাবির মাহফুজ রাহাত (হরিমোহন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়), তানভির ইয়াসির (রংপুর জিলা স্কুল), আনাস ইসবাত হাসান (খুলনা পাবলিক কলেজ), সাফায়াত হোসেন সাফি (ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়), মাস্রুর উল আলম (হালিশহর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ)।

বিজয়ীদের মধ্য থেকে প্রোগ্রামিংয়ে দুই ক্যাটাগরির সেরা তিনজনকে ল্যাপটপ এবং কুইজে দুই ক্যাটাগরির সেরা তিনজনকে স্মার্টফোন উপহার দেওয়া হবে।

দেশের হাইস্কুল ও কলেজ তথা ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি এবং সমমানের মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংকে জনপ্রিয় করার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে ২০১৫ সালে এই কার্যক্রম শুরু হয়।