টিকটকে এবার আগ্রহ দেখাচ্ছে টুইটার

টিকটকের সঙ্গে আলোচনা করছে টুইটার। ছবি: রয়টার্স
টিকটকের সঙ্গে আলোচনা করছে টুইটার। ছবি: রয়টার্স

চীনের ভিডিও শেয়ারিং সাইট টিকটকের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের টুইটার। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, টিকটকের প্রতি আগ্রহ দেখানোর দৌড়ে টুইটারকে নতুন প্রতিযোগী হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে টিকটককে সম্ভাব্য অধিগ্রহণ নিয়ে টুইটার আলোচনা করছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। এ ধরনের কোনো চুক্তির ক্ষেত্রে বড় বাধা আসতে পারে।

কোনো চুক্তির ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ৬ আগস্ট সই করা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সই করা নির্বাহী আদেশ। ওই আদেশে টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে যুক্তরাষ্ট্রে কোনো আর্থিক লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ৪৫ দিনের মধ্যেই ওই আদেশ কার্যকর হবে। ট্রাম্প প্রশাসন চীনা প্রতিষ্ঠানের তৈরি টিকটক অ্যাপটিকে সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করেছে।

টিকটক বা বাইটড্যান্সের পক্ষ থেকে মার্কিন নাগরিকের কোনো তথ্য চীন সরকারকে দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। টিকটক কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা ট্রাম্প প্রশাসনের আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানানোর পরিকল্পনা করছে।

এখন পর্যন্ত বিশ্বের বৃহত্তম সফটওয়্যার নির্মাতা মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে টিকটককে কেনার আগ্রহের কথা বলা হয়েছে। মাইক্রোসফট বলেছে, টিকটককে কেনার জন্য তারা বাইটড্যান্সের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, টিকটককে কিনতে টুইটারের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে মাইক্রোসফট এগিয়ে থাকবে। কারণ টুইটার ছোট কোম্পানি। এতে তাদের মাইক্রোসফটের তুলনায় কম অ্যান্ট্রট্রাস্টের মুখোমুখি হতে হবে। কিন্তু তাদের মাইক্রোসফটের মতো অর্থ নেই।

মাইক্রোসফট ২ আগস্ট এক ব্লগপোস্টে বলেছে, তাদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সত্য নাদেলা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টিকটককে অধিগ্রহণের ব্যাপারে কথা বলেছেন। এর অর্থ যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যান্ডে টিকটকের যাবতীয় কার্যক্রম অধিগ্রহণ করতে পারে প্রতিষ্ঠানটি। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আলোচনা শেষ হবে বলে আশা করছে মাইক্রোসফট। টুইটারের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে টিকটক বা টুইটার কর্তৃপক্ষ কেউ মুখ খোলেনি।

বার্তা সংস্থা সিএনএন জানিয়েছে, চীনের জনপ্রিয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে হস্তগত করতে চাপ দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এ জন্য ৪৫ দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে যেকোনো মার্কিন প্রতিষ্ঠানের কাছে এগুলোকে বিক্রি হতে হবে। গত বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন, যাতে টিকটকের সঙ্গে চীনা ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং সেবা উইচ্যাটকেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে টিকটকের মার্কিন অপারেশন পুরোপুরি কেনার জন্য মাইক্রোসফটের ওপর চাপ দেওয়া হচ্ছে। গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রোসফট করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা জনপ্রিয় সংক্ষিপ্ত ভিডিও তৈরির অ্যাপ টিকটককে বাইটড্যান্সের কাছ থেকে কিনে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ চুক্তি সম্পন্ন করে ফেলতে চায় তারা। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনো মার্কিন কোম্পানি যদি টিকটককে কিনে নিতে ব্যর্থ হয়, তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট টিকটককে নিষিদ্ধ করার কথা বলেছেন।

চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির অফিশিয়াল পত্রিকা পিপল ডেইলি পরিচালিত গ্লোবাল টাইমস এক সম্পাদকীয়তে সম্প্রতি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকাভুক্ত বাইটড্যান্স ও হুয়াওয়ে টেকনোলজিসের প্রতি মার্কিন সরকার যে আচরণ করেছে, এতে মার্কিন সরকার চীনের সঙ্গে অর্থনীতি পৃথক করে ফেলতে চায়, তার প্রচেষ্টার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে চুরি করে নেওয়ার কোনো বিষয় চীনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হবে না। এমনকি ভিডিও শেয়ারের অ্যাপ টিকটকের নির্মাতা বাইটড্যান্সকে কেনার জন্য ওয়াশিংটনের চাপ প্রয়োগের পাল্টা জবাব তারা দিতে সক্ষম।