ইন্টারনেটও ঘুমায়!

এশিয়ার কিছু অঞ্চলে কখনো কখনো ইন্টারনেট ঘুমিয়ে পড়ে। দেশ যত উন্নত হবে, ইন্টারনেট তত বেশি জেগে থাকবে।
এশিয়ার কিছু অঞ্চলে কখনো কখনো ইন্টারনেট ঘুমিয়ে পড়ে। দেশ যত উন্নত হবে, ইন্টারনেট তত বেশি জেগে থাকবে।

মার্কিন গবেষকেরা বলছেন, বিশ্বের নানা দেশে অনেকটা যেন যেকোনো প্রাণীর মতোই কোথাও কোথাও টুপ করে ঘুমিয়ে পড়ে ইন্টারনেট, আবার কোথাও দিনরাতই জেগে থাকে। ইন্টারনেটের এই জেগে থাকা আর ঘুমিয়ে পড়ার ওপর ভিত্তি করেই দেশের উন্নতির বিষয়টির ধারণা পাওয়া যায় এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া যায়। মার্কিন এই গবেষকেরা বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেটের ব্যবহার ও দৈনন্দিন কার্যক্রম বিশ্লেষণ করে দেখেছেন। তাঁদের দাবি, এশিয়ার কিছু অংশ, দক্ষিণ আমেরিকা ও পূর্ব ইউরোপে কখনো কখনো ইন্টারনেট ‘ঘুমিয়ে’ পড়ে।
চালু হলো আইপিভি ৬যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের যে অঞ্চলগুলোতে ব্রডব্যান্ড সংযোগ রয়েছে, সেই অঞ্চলে ইন্টারনেট সব সময় জেগে থাকে এবং সক্রিয়ভাবেই তা কার্যকর থাকে। আবার এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা ও পূর্ব ইউরোপের বেশ কিছু অঞ্চলে দিনের একটা সময়ে ইন্টারনেট ঝিমিয়ে পড়ে বা এর ব্যবহার কমে যেন ঠিক কোনো জীবন্ত প্রাণীর মতোই তা ঘুমিয়ে যায়।
এ গবেষণায় দেখা গেছে, যে দেশ যত বেশি উন্নত, সেই দেশে ইন্টারনেট তত বেশি জেগে থাকবে এবং ২৪ ঘণ্টা কার্যকর থাকবে।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, তাঁদের এই গবেষণা গবেষক ও নীতিনির্ধারকদের দেশের উন্নতির জন্য ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি পরিমাপ করতে ও উন্নত পদ্ধতি গ্রহণে সাহায্য করবে।

ইন্টারনেট কীভাবে ঘুমিয়ে পড়ে, সেটা বুঝতে পারলে তাঁরা ইন্টারনেট অচল বা অকার্যকর হয়ে পড়ার সঙ্গে ইন্টারনেটের ঘুমিয়ে পড়ার পার্থক্য ধরতে পারবেন। অর্থাৎ, ইন্টারনেটকে ঘুমিয়ে পড়তে দেওয়া যাবে না। ইন্টারনেট অচল হয়ে পড়লে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে তাকে চালু রাখতে পারলেই তবে উন্নতি আসবে।
ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার(ইউএসসি) গবেষক জন হেইডম্যান এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আমাদের জীবন ও ব্যবসার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট গুরুত্বপূর্ণ। ইন্টারনেটে বিনোদন থেকে শুরু করে অনলাইনে কেনাকাটা সবকিছুতেই লাগে। ইন্টারনেটনির্ভরতার বিষয়টি উন্নত করতে কখন ইন্টারনেট অচল হয়ে যায়, সে বিষয়টি পরিমাপ করে ব্যবস্থা নেওয়াটিই প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত।
এখন পর্যন্ত ৪০০ কোটি ইন্টারনেট প্রটোকল ভার্সন ৪ (আইপিভি৪) ইন্টারনেট ঠিকানা রয়েছে। এটি মূলত ইন্টারনেট ঠিকানা লেখার পদ্ধতি। হেইডম্যান ও তাঁর দল ৩৭ লাখ অ্যাড্রেস ব্লককে দুই মাস ধরে প্রতিদিন প্রতি ১১ মিনিট পরপর ইন্টারনেট চালু আছে কি না তা পরীক্ষা চালান। তিনি বলেন, ‘এই তথ্য ইন্টারনেটের জন্য একটি মূলভিত্তি দাঁড় করাতে সাহায্য করে। ইন্টারনেট জেগে থাকে নাকি ঘুমায় তা পরীক্ষা করে দ্রুত সমস্যা সমাধানের উপায় বের করা যায়।’
ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার (ইউএসসি) গবেষক হেইডম্যানের সঙ্গে লিন কুয়ান ও ইউরি প্র্যাডকিন এই গবেষণায় অংশ নেন। তাঁদের গবেষণা নিবন্ধটি আগামী মাসে ‘২০১৪ এসিএম ইন্টারনেট মেজারমেন্টস’ সম্মেলনে উপস্থাপন করবেন।