পানি থেকে পেট্রল!

পানি থেকে কৃত্রিম পেট্রল তৈরিতে কাজ করছেন জার্মানির গবেষকেরা
পানি থেকে কৃত্রিম পেট্রল তৈরিতে কাজ করছেন জার্মানির গবেষকেরা

একটি বিশেষ যন্ত্রে পানির সঙ্গে মেশানো হচ্ছে কার্বন ডাই-অক্সাইড। আর তা থেকে পাওয়া যাচ্ছে কৃত্রিম পেট্রোলিয়ামভিত্তিক জ্বালানি। জার্মানির সানফায়ার জিএমবিএইচ নামের প্রতিষ্ঠানটির তৈরি এ যন্ত্রটিকে ‘আশ্চর্য’ প্রযুক্তিই বলছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট সিনেটের এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গবেষকেরা বলেন, জৈব জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমানো রাতারাতি সম্ভব নয়। কারণ বর্তমান অবকাঠামো ও প্রযুক্তি বেশির ভাগই কয়লা ও পেট্রোলিয়ামনির্ভর। এই জ্বালানির ব্যবহার কমাতে এখনো অনেক সময় লাগবে এবং প্রচুর অর্থ খরচ হবে। তবে এর একটি সমাধান হতে পারে পরিশুদ্ধ জ্বালানি। সানফায়ার তা নিয়েই কাজ করছে।
জার্মানির এ প্রতিষ্ঠানটি ‘পাওয়ার-টু-লিকুইড’ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে, যা পানি ও কার্বনকে তরল হাইড্রোকার্বন যেমন—কৃত্রিম পেট্রল, ডিজেল ও কেরোসিনে রূপান্তর করতে পারে।
১৯২৫ সালে উদ্ভাবিত ফিসার-ট্রপস প্রসেসের ভিত্তিতে পানি থেকে পেট্রল তৈরি করা যায়। এতে সলিড অক্সাইড ইলেকট্রোলাইজার সেল (এসওইসি) ব্যবহার করা হয়, যাতে বাতাস বা সূর্যের আলোর মতো নবায়নযোগ্য উৎস থেকে প্রাপ্ত শক্তি কাজে লাগিয়ে বাষ্প উৎপাদন করা হয়। এরপর তা থেকে অক্সিজেন বাদ দিয়ে হাইড্রোজেনকে আলাদা করা হয়। এরপর কার্বন ডাই-অক্সাইড রিসাইকেল করে কার্বন মনোঅক্সাইডে রূপান্তর করা হয়। কার্বন মনোঅক্সাইড ও হাইড্রোজেনের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তরল হাইড্রোকার্বন পাওয়া যায়। এই পদ্ধতিতে জ্বালানি তৈরির প্রক্রিয়াটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করে সফল হয়েছেন গবেষকেরা। তাঁদের দাবি, তাঁদের তৈরি এই যন্ত্রে প্রতিদিন ৩ দশমিক ২ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড রিসাইকেল করে এক ব্যারেল জ্বালানি পাওয়া যেতে পারে।
সানফায়ারের প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা ক্রিস্টিয়ান ভন ওলসহাসেন বলেন, ‘পানি থেকে জ্বালানি তৈরির পরীক্ষা সফল হয়েছে এবং বাণিজ্যিকভাবে এই পদ্ধতি প্রয়োগ সম্ভব—সেই বিষয়টিও প্রমাণিত হয়েছে। এখন নীতিনির্ধারকদের কাজ হবে বিনিয়োগকারী আকৃষ্ট করা। বিনিয়োগ আকর্ষণ করা সম্ভব হলেই কেবল ধাপে ধাপে জৈব জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমবে। দীর্ঘমেয়াদে জ্বালানির সক্ষমতা অর্জন করতে হলে তার জন্য আজ থেকেই কাজ শুরু করতে হবে।’