এইচআইভির 'বিকল্প টিকা'

মানুষের টি সেলে এইচআইভি ভাইরাসের সংক্রমণের আণুবীক্ষণিক ছবি l এনআইএআইডি, এনআইএইচ
মানুষের টি সেলে এইচআইভি ভাইরাসের সংক্রমণের আণুবীক্ষণিক ছবি l এনআইএআইডি, এনআইএইচ

প্রাণঘাতী এইডস রোগের জন্য দায়ী ভাইরাস এইচআইভি প্রতিরোধের জন্য একটি কার্যকর টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা করা হচ্ছে তিন দশকের বেশি সময় ধরে। এবার যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক দাবি করছেন, তাঁরা একটি পরীক্ষামূলক ওষুধ তৈরি করেছেন, যা এইচআইভির একধরনের বিকল্প টিকা হিসেবে কাজ করে।
মার্কিন বিজ্ঞানীদের এ সাফল্যে এইচআইভি প্রতিরোধের চেষ্টায় নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। ইতিমধ্যে পদ্ধতিটি বানরের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। এতে প্রাণীটি এইচআইভি থেকে অন্তত ৩৪ সপ্তাহ পর্যন্ত সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। নেচার সাময়িকীতে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
সাধারণত শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে কোনো সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন টিকা প্রয়োগ করা হয়। ক্যালিফোর্নিয়ার স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ওই গবেষকেরা একটি বিকল্প উপায়ে রোগের আক্রমণ প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। তাঁরা একদল বানরের ডিএনএ পরিবর্তন করে সেগুলোতে এইচআইভি-বিরোধী কিছু উপাদান যুক্ত করেন। মানুষের ক্ষেত্রে একই ধরনের পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে এ গবেষণায় যুক্ত নন—এমন গবেষকেরা বলছেন, এ ব্যাপারে আরও গভীর চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন।
নতুন এ পদ্ধতিতে সুস্থ পেশিকোষের মধ্যকার ডিএনএতে নতুন অংশ যুক্ত করার কাজে জিন থেরাপি ব্যবহার করা হয়। ডিএনএতে যুক্ত ওই বাড়তি অংশে এইচআইভিকে নিষ্ক্রিয় করার উপাদান তৈরির নির্দেশনা রয়েছে, যেগুলো নিরবচ্ছিন্নভাবে রক্তপ্রবাহে সঞ্চারিত হতে থাকে। গবেষকেরা আশা করছেন, ইতিমধ্যে এইচআইভিতে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রেও পদ্ধতিটি ফলপ্রসূ হতে পারে।
শীর্ষ গবেষক অধ্যাপক মাইকেল ফ্যারজান বলেন, এইচআইভি থেকে সার্বিক সুরক্ষা দেওয়ার প্রচেষ্টায় তাঁরা অন্যদের চেয়ে বেশি এগিয়ে গেছেন। তবে কিছু বাধা এখনো রয়ে গেছে; যেমন নতুন পদ্ধতিটি বহুসংখ্যক মানুষের ওপর প্রয়োগ করাটা কতটা নিরাপদ হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
এইচআইভি ভাইরাসটি অতন্ত দ্রুত বিকশিত হয়। তাই এটির টিকা তৈরি করাটা কঠিন। অধ্যাপক ফ্যারজান বলেন, তাঁদের উদ্ভাবিত পদ্ধতিটি অন্য যেকোনো প্রতিষেধকের চেয়ে বেশি সম্ভাবনাময়।
সূত্র: বিবিসি ও হাফিংটন পোস্ট