তিন পাখার দেশি ড্রোন

ড্রোন উড়ছে ষ ছবি: সুমন ইউসুফ
ড্রোন উড়ছে ষ ছবি: সুমন ইউসুফ

নাম দিয়েছেন ‘ট্রাই কপ্টার’। আদতে তিন পাখার উড়ন্ত যান—ড্রোন। পণ্য পরিবহন, দুর্গম এলাকায় সহজে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কথা
মাথায় রেখে এই চালকবিহীন উড়ন্ত ড্রোন তৈরির পরিকল্পনা করেন ঢাকার ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্নাতক শ্রেণির চার ছাত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই ড্রোনের কাজ শুরু করেন মো. মিরাজ হোসাইন, আবু আল রাব্বি, কাজী গোলাম মাহামুদ ও সারেম দ্বীন নাসৌরী। আর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস কৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জি এম এ এহসানুর রহমান।
শুধু যে একটি ড্রোন বানানো হবে, এমন নয়, বরং এটি যেন বাংলাদেশে উৎপাদন করা যায় এবং সাধারণ মানুষের কাজে লাগানো যায়, এমন লক্ষ্য ছিল চার নির্মাতার। বিভিন্ন ধরনের নকশা ও প্রযুক্তিপদ্ধতি নিয়ে ভাবা হয়। শেষ পর্যন্ত তাঁরা একটি ট্রাই কপ্টারের নকশা নিয়ে কাজ শুরু করেন। তিন বাহুর এই ড্রোনে তিনটি ডিসি মোটর ব্যবহার করা হয়েছে। আকাশে ওড়া নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে মাল্টি উই প্রো ২.১ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র। ভূমি থেকে ২.৫ গিগাহার্টজের বেতার নিয়ন্ত্রকের (রেডিও কন্ট্রোলার) মাধ্যমে এই উড়ন্ত যান নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আগে থেকে নির্ধারিত কোনো স্থানে যাওয়া বা একটি নির্দিষ্ট পথ অনুযায়ী যাওয়া-আসার জন্য এতে জিপিএস যুক্ত করা হয়। ফলে প্রোগ্রামের মাধ্যমে ওড়ার গতিপথ নির্ধারণ করে দেওয়া হলে এ ড্রোনটি সে অনুযায়ী কাজ করতে পারে। দুর্যোগপূর্ণ বা গুরুত্বপূর্ণ কোনো নির্দিষ্ট অবস্থান বা এলাকা পর্যবেক্ষণ করতে পারে এটি।
নির্মাতারা জানান, কার্যকরভাবে ড্রোনটি প্রায় দুই কেজি ভর নিয়ে প্রায় ৩০০ ফুট উচ্চতায় উড়তে পারে। প্রথম ১০ সেকেন্ডেই উঠে যাবে ১০০ ফুটের কাছাকাছি। নির্মাতা দলের সদস্য মো. মিরাজ হোসাইন

বাঁ দিক থেকে) আবু আল রাব্বি, মিরাজ হোসাইন, সারেম দ্বীন নাসৌরী ও কাজী গোলাম মাহামুদ
বাঁ দিক থেকে) আবু আল রাব্বি, মিরাজ হোসাইন, সারেম দ্বীন নাসৌরী ও কাজী গোলাম মাহামুদ

জানান, ‘অ্যারোডাইনামিক কাঠামো তৈরি করা এবং কপ্টারটিকে স্থির রাখা ছিল প্রকল্পের সবচেয়ে জটিল অংশ। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকে নিয়ে আসাও খুব সহজ ছিল না।’ এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের একটি ই-কমার্স সাইট টেক এন টুলস (www.tekntools.com) থেকে তাঁরা বিশেষ সহযোগিতা পেয়েছেন।
গবেষণার অংশ হিসেবে তৈরি করা হয়েছে বলে সার্বিকভাবে প্রকল্পের খরচ কিছুটা বেশি হয়েছে। তবে বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা হলে কম খরচেই বানানো যাবে এই নকশার ড্রোন।