নিউইয়র্কে নামবে ৫০০০ চালকবিহীন ট্যাক্সি
চালকবিহীন গাড়ির ধারণাটি এত দিন পর্যন্ত বিজ্ঞান কল্পকাহিনির জগতেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে সুপরিচিত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগল শিগগিরই সেই ধারণাকে বাস্তবে রূপ দিতে যাচ্ছে। নিউইয়র্ক নগর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গুগল সম্প্রতি একটি চুক্তি সম্পাদন করেছে, যার আওতায় ভবিষ্যতে সেখানকার সব মোটরগাড়ির জায়গা নেবে চালকবিহীন গুগল কার। পরীক্ষামূলকভাবে আগামী বছরই শহরটিতে পাঁচ হাজার চালকবিহীন গাড়ি নামানো হবে। এসব গাড়িতে থাকবে স্বয়ংক্রিয় অর্থ লেনদেনের যন্ত্র (এটিএম), খাবার এবং কম্পিউটার মনিটর।
চালকবিহীন গাড়ি তৈরি এবং সেই প্রযুক্তির উন্নয়নের লক্ষ্যে গুগল বেশ কয়েক বছর ধরেই কাজ করছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকের ভবিষ্যদ্বাণী, আগামী ৩০ বছরের মধ্যেই নিউইয়র্ক সিটিতে গাড়ি চালানো বেআইনি হয়ে যাবে। কারণ, স্বয়ংক্রিয় মোটরগাড়িগুলোই তখন মানুষচালিত গাড়ির চেয়ে বেশি নিরাপদ হবে। আর নতুন গাড়িগুলোর চলাচলের ধরনও হবে মানুষচালিত গাড়ির চেয়ে অন্য রকম। এগুলোর গতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে স্মার্টফোনের সাহায্যে।
স্বয়ংক্রিয় গাড়ির বহুল ব্যবহার শুরু হতে এখনো অন্তত ১০ বছর অপেক্ষা করতে হবে বলে সংশয়বাদীদের অনেকে মনে করলেও বাস্তবতা কিন্তু ভিন্ন। গুগল কার ইতিমধ্যে সিলিকন ভ্যালিতে প্রায় ১০ লাখ কিলোমিটার দূরত্ব চালক ছাড়াই অতিক্রম করেছে। চালকের বিভিন্ন ত্রুটি এবং দুর্ঘটনায় পড়ার প্রবণতাগুলো স্বয়ংক্রিয় গাড়িতে নেই বললেই চলে। তবে চালকবিহীন গাড়ির সামনে অনেক কঠিন পরীক্ষাও রয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবর মানুষকে শোকাহত করে। কিন্তু সম্ভাব্য যেসব দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়, সেগুলোর মোট সংখ্যা সত্যিই বিস্ময়কর। মানুষের সূক্ষ্ম অনুভূতির কারণেই সেটা সম্ভব হয়। দেখা, অনুভব করা, সমন্বয় করা, শেখা এবং সংকেত পাওয়া ইত্যাদির সামগ্রিক ফলাফল হিসেবে মানুষ দুর্ঘটনা উপেক্ষা করে গাড়ি চালাতে পারে। একটি যন্ত্রের মধ্যে সেগুলো পরিপূর্ণভাবে সংযোজন করাটাই হবে প্রযুক্তিবিদদের সাফল্য। তাই চালকবিহীন গাড়িতে যুক্ত করা হয়েছে লিডার ও রাডারের মতো শনাক্তকরণব্যবস্থা এবং অবস্থান নির্ণয়ের জন্য জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমস), স্ক্যানিং, ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) ছবি ইত্যাদি প্রযুক্তি।
সূত্র: এপি ও দ্য জেরুজালেম পোস্ট।