হাতের নাগালে থ্রিডি প্রিন্টার

বাংলাদেশের বাজারে এখন পাওয়া যাচ্ছে থ্রিডি প্রিন্টার ও থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি সেবা। বাংলাদেশে থ্রিডি প্রিন্টার বিপণন করছে টেকনোনিডস নামের তরুণ উদ্যোক্তাদের একটি প্রতিষ্ঠান।

প্রিন্টারের নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে কাগজের ওপর কালি দিয়ে কোনো কিছু প্রিন্ট করার দৃশ্য। কিন্তু থ্রিডি প্রিন্টার এমন একটি প্রযুক্তি যাতে কাগজ বা কালির ব্যবহার নেই। কোনো জিনিসকে কাগজের ওপর প্রিন্ট না করে সম্পূর্ণ বস্তুটি বাস্তবে তৈরি করে ফেলতে পারে। সাধারণ প্রিন্টারে ব্যবহার হয় কালি আর থ্রিডিতে ব্যবহার হয় বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক। সুতরাং যা প্রিন্ট করা হয় সেগুলো তৈরি হয় প্লাস্টিক দিয়ে।
বাংলাদেশে থ্রিডি প্রিন্টার বিপণন করছে টেকনোনিডস নামের একটি প্রতিষ্ঠান। গত বছর বাংলাদেশে থ্রিডি প্রিন্টিংয়ের পরিপূর্ণ সমাধান নিয়ে তরুণ উদ্যোক্তাদের এই প্রতিষ্ঠানটি। টেকনোনিডস থ্রিডি প্রিন্টার বিক্রির পাশাপাশি থ্রিডি প্রিন্টিং সেবাও দেয়। তাইওয়ান থেকে আমদানি করা পাঁচটি মডেলের প্রিন্টারগুলোর দাম শুরু ৯৫ হাজার টাকা থেকে। এ ছাড়া থাকছে এক বছরের সার্ভিস ওয়ারেন্টি আর রেডি স্টকে থাকা বিভিন্ন রঙের প্রিন্টিং কার্টিজ।
উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে চার বন্ধু পথ চলার শুরু করেন টেকনোনিডসের মাধ্যমে। ইমরান আহমেদ আর আরিফুল হক এসেছেন খুলনা ইউনিভার্সিটি থেকে ফার্মেসি বিভাগে অধ্যয়ন শেষ করার পর। আমির জুবায়ের এসেছেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করার পর আর খালিদ সালাউদ্দিন বর্তমানে ইসলামি ইউনিভার্সিটিতে সিএসইতে অধ্যয়নরত আছেন। তিনটি ভিন্ন পেশা থেকে আসা চারজন একত্র হয় দেশেই নতুন ধরনের ইলেকট্রনিক সামগ্রী, বিশেষ করে ফার্মাসিউটিক্যালস এ প্রয়োজনীয় ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইকুইপমেন্ট তৈরির লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন। নিজেদের ডিজাইন করা নতুন ধরনের পণ্য তৈরির উদ্দেশ্যেই দেশে থ্রিডি প্রিন্টার আনেন তারা। বাংলাদেশে থ্রিডি প্রিন্টিংয়ের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ব্যবসা উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা।
উদ্যোক্তা ইমরান আহমেদ বলেন, থ্রিডি প্রিন্টিংয়ের ধাপ দুইটি। প্রথমত, যা প্রিন্ট করতে চান তার একটি থ্রিডি মডেল আপনার কাছে থাকতে হবে। যেকোনো থ্রিডি মডেল সফটওয়্যারে এটি তৈরি করে নেওয়া যায়। থ্রিডি মডেলিং না জানলেও ঘাবড়াবার কিছু নেই। ইন্টারনেটে অসংখ্য থ্রিডি মডেল বিনা মূল্যেই পাওয়া যায়। যেভাবে গান অথবা ছবি ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা হয় সেভাবে এই মডেলগুলো ডাউনলোড করে নিতে হয়। এরপর থ্রিডি প্রিন্টার সফটওয়্যার দিয়ে ওপেন করে প্রিন্ট দিলেই প্রিন্টারে কমান্ড বা নির্দেশনা চলে যাবে। এর পর স্তরে স্তরে প্রিন্ট করে সম্পূর্ণ বস্তুটি তৈরি করে দেবে প্রিন্টার।
ইমরান বলেন, নানা ক্ষেত্রে থ্রিডি প্রিন্টার ব্যবহৃত হচ্ছে। গবেষণা থেকে শুরু করে ড্রোন বানানো পর্যন্ত। বাড়ির নকশা, খেলনা, বিজ্ঞান প্রকল্প থেকে শুরু করে দরকারি ও শৌখিন অনেক বস্তুই এই প্রিন্টারে প্রিন্ট করিয়ে নেওয়া যায়। দুর্ঘটনায় হাড় ভাঙলে থ্রিডি প্রিন্টারে প্রিন্ট করিয়ে নেওয়া যাবে কৃত্রিম হাড়। রোবট নিয়ে যদি কেউ কাজ করতে চান তারও দরকার এই প্রিন্টার।
ইমরান বলেন, কেবল প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি বস্তুই নয়, থ্রিডি প্রিন্টারে প্রিন্ট করানো যাবে খাবার। এগুলো থ্রিডি ফুড প্রিন্টার। খাবারের উপাদান এতে যুক্ত করবেন সুন্দরভাবে আপনাকে সেই খাবার প্রিন্ট করে দেবে ফুড প্রিন্টার। শিগগিরই দেশের বাজারে এই প্রিন্টার বিক্রি শুরু করবে টেকনোনিডস।
টেকনোনিডসের সেবা সম্পর্কে তাদের ওয়েবসাইটে (www.technoneeds.com) বিস্তারিত জানা যাবে।