পুরস্কার পেল রূপকথা

রূপকথার সঙ্গী কম্পিউটার
রূপকথার সঙ্গী কম্পিউটার

ওয়াসিক ফারহান রূপকথা, বয়স মাত্র ৭ বছর। কম্পিউটারে তাঁর বিস্ময়কর দক্ষতা আরও কম বয়স থেকেই দেখা গেছে। ২৬ অক্টোবর গোল্ডেন বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে পৃথিবীর সর্বকনিষ্ঠ কম্পিউটার পারদর্শী হিসেবে তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এর আগে রিপ্লি’স বিলিভ ইট অর নটের কমিক স্ট্রিপেও স্থান পেয়েছে সে। পৃথিবীর সর্বকনিষ্ঠ প্রোগ্রামার হিসেবে রূপকথা স্বীকৃতি পাওয়ায় ১১ নভেম্বর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় তাকে দুই লাখ টাকার চেক পুরস্কার দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফাহমিদা আখতার স্বাক্ষরিত সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রশংসাযোগ্য ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য এই অর্থ দেওয়া হচ্ছে। চলতি বছর অষ্টম শ্রেণীর ইংলিশ ফর টুডে এবং গার্হস্থ্য বিজ্ঞান পাঠ্যবইতে স্থান পেয়েছে রূপকথার কাহিনি।

১২ নভেম্বর ঢাকার নিকেতনে রূপকথাদের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, সে যথারীতি কম্পিউটার নিয়ে কাজ করছে। দিনের বেশির ভাগ সময় তার কম্পিউটারেই কাটে—জানালেন রূপকথার মা সিনথিয়া ফারহিন। তিনি আরও বললেন, ‘গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে সর্বকনিষ্ঠ কম্পিউটার প্রোগ্রামার বিভাগে রূপকথার নাম ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের পাঠানো একটি ফরম পূরণ করে পাঠিয়ে দিয়েছি আমরা।’

রূপকথা দুই হাতে দুই কম্পিউটার চালায় বলা চলে। তার ঘরে দেখা গেল টেবিলে ডেস্কটপ কম্পিউটারের পাশে একটি ল্যাপটপ রাখা। একটিতে ইউটিউব থেকে ভিডিও টিউটেরিয়াল দেখছে আর অন্যটিতে সে অনুযায়ী প্রোগ্রামিংয়ের কাজ করছে। দেড় বছর বয়স থেকেই মায়ের ল্যাপটপে হাতেখড়ি রূপকথার। সিনথিয়া বলেন, রূপকথা বর্ণমালা চিনেছে কম্পিউটার মনিটর থেকে। মাত্র আড়াই বছর বয়সে মেটাল গিয়ার সলিড স্নেকের মতো জটিল গেম খেলে অভ্যস্ত সে।

রূপকথা এখন নিজেই ছোটখাটো গেম তৈরি করতে পারে। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম-সংক্রান্ত নানা সমস্যার সমাধানও করতে পারে। রূপকথার বাবা ওয়াসিম ফারহান বলেন, ‘রূপকথার কাজ আমাকে রূপকথার গল্পের মতোই বিস্মিত করে, আমি অভিভূত।’

কম্পিউটার কি-বোর্ড আর মনিটরেই সব ধ্যানজ্ঞান রূপকথার। মায়ের কাছে তার একটিই অভিযোগ, খাবারটা কেন কম্পিউটার টেবিলে বসে খেতে পারব না! নিজের সাফল্যে চমৎকৃত হওয়ার মতো বয়স হয়তো রূপকথার হয়নি! কিছু জিজ্ঞেস করলেই বলে, ‘খুব ভাল্লাগে।’

মায়ের প্রত্যাশা, ছেলে একদিন বিশ্বখ্যাত কম্পিউটার প্রোগ্রামার হবে। সেভাবেই তিনি গড়ে তুলতে চান রূপকথাকে।