পুরোনো মোবাইল ফোন কেনার আগে

হাতফেরত মোবাইল ফোন
হাতফেরত মোবাইল ফোন

বাংলাদেশে ক্লাসিফায়েড সাইটগুলোর পাশাপাশি ফেসবুকের মাধ্যমেও এখন সেকেন্ড হ্যান্ড বা হাতফেরত পুরোনো মোবাইল ফোন কেনাবেচা হচ্ছে। এ ধরনের হাতফেরত পুরোনো ফোন কেনার আগে কয়েকটি বিষয় জেনে নেওয়া জরুরি। সবার আগে ফোনটি ‘চোরাই ফোন’ কি না তা দেখে নেওয়া বেশি জরুরি।

ফোন কেনার রসিদ, ফোনের বাক্স ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি
পুরোনো ফোন কেনার সময় অবশ্যই ফোনটি কেনার রশিদ চাইবেন। এতে ফোনটি যে চোরাই নয়, এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারবেন। একই সঙ্গে ফোনটি কবে কেনা, দাম প্রভৃতি জানতে পারবেন। ফোনের বাক্স থেকে ফোনের আইএমইআই নম্বরটিও জানতে পারবেন। ফোনের সঙ্গে যদি আনুষঙ্গিক আসল যন্ত্রপাতি বিক্রেতা দিতে না পারে, তবে ফোনের দাম কম রাখতে অনুরোধ করুন। ফোনের ব্যাটারি আসল কি না, তা অবশ্যই পরীক্ষা করে নেবেন। কারণ ব্যাটারি আসল না হলে দুর্ঘটনার পাশাপাশি ফোন চার্জে সমস্যা হতে পারে।
কমপক্ষে দুই জিবি র‍্যাম
সাশ্রয়ী দামের মধ্যেই দুই জিবি র‍্যামের ফোনের সন্ধান পাবেন। পুরোনো স্মার্টফোন কেনার আগে ওই ফোনে র‍্যাম কতটুকু আছে তা নিশ্চিত হয়ে নিন। ১ জিবির কমে র‍্যাম রয়েছে এমন পুরোনো ফোন না কেনাই ভালো। এ ছাড়াও ফোনের প্রসেসরের দিকেও খেয়াল রাখা জরুরি। মিডিয়াটেক প্রসেসর বেশ পুরোনো, পারফরম্যান্সের দিক থেকেও উন্নত নয়। কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন কিংবা ইনটেল প্রসেসরের ফোন কেনার চেষ্টা করুন। তবে এতে ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়।
আইএমইআই
সবার আগে ফোনের আইএমইআই নম্বর পরীক্ষা করে দেখুন। আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইক্যুইপমেন্ট আইডেনটিটি) নম্বর জানতে ‘স্টার হ্যাস ০৬ হ্যাস’ ডায়াল করুন। ব্যাটারির নিচে মুঠোফোনের লেবেলে আইএমইআই ও সিরিয়াল নম্বর থাকে। অনেকেই ফোনের সিরিয়াল নম্বর জানেন না এবং কী করে এটা জানতে হয়, সেটাও জানেন না। *# ০৬# নম্বর ফোনের কি প্যাডে লিখলে, পর্দায় ১৫ সংখ্যার একটা নম্বর দেখা যাবে।
আইফোন কেনার ক্ষেত্রে একটু বিশেষ সতর্ক থাকা প্রয়োজন। বাংলাদেশের বাজারেও নকল আইফোন বিক্রি হয়। এগুলো ‘ক্লোন’ ও ‘রিকন্ডিশন্ড’ নামেই পরিচিত। দুই ধরনের ফোনই অ্যাপল কম্পিউটার ইনকরপোরেটেডের তৈরি আসল আইফোনের মতোই দেখতে। ক্লোন আইফোন হাতে ধরে সহজেই বোঝা যায় যে এটি নকল। এগুলো ওজনে হালকা। কিন্তু রিকন্ডিশন্ড আইফোনগুলো দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই যে, এগুলো আসল না নকল। এসব ফোনের দাম আবার একেক বাজারে একেক রকম। ক্লোন আইফোন ফাইভ, ফাইভ-এস এবং সিক্স বিক্রি হয় সাড়ে পাঁচ থেকে আট হাজার টাকায়। সে তুলনায় রিকন্ডিশন্ড আইফোন অনেক বেশি দামে বিক্রি হয়ে থাকে। রিকন্ডিশন্ড আইফোন ফোরের দাম ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা। রিকন্ডিশন্ড আইফোন ফাইভ বিক্রি করা হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায়। www. iphoneimei. info ঠিকানার ওয়েবসাইটে ফোনের তথ্য পাওয়া যায়। IMEIdetective. com ওয়েবসাইট থেকেও ফোনের আইএমইআই নম্বর পরীক্ষা করা যায়।
হার্ডওয়্যার পরীক্ষা
পুরোনো মোবাইল ফোন কেনার আগে ফোনের কাঠামো ঠিকঠাক আছে কি না, দেখে দিন। কোনো আঁচড়, চিড় আছে কি না, তা পরীক্ষা করুন। কোনো খুঁত মনে হলে ফোন খুলে পরীক্ষা করতে পারেন। ফোন যদি হাতে নেড়ে চেড়ে দেখার সুযোগ থাকে, তবে ল্যাপটপের সঙ্গে ইউএসবি কেবল লাগিয়ে দেখুন। তথ্য স্থানান্তর ও চার্জ দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা আছে কিনা দেখে নিন। সিম কার্ড ভরে নেটওয়ার্ক ঠিকমতো থাকে কিনা তাও পরীক্ষা করুন। ওয়েব ব্রাউজ, কয়েকটি অ্যাপ ডাউনলোড, ছবি ও ভিডিও অপশন ঠিকমতো কাজ করছে কিনা পরীক্ষা চালান।
অনলাইনে দাম যাচাই করুন
ক্লাসিফায়েড সাইটগুলোতে বিজ্ঞাপন ব্রাউজ করতে গিয়ে পুরোনো ফোনের দাম সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পাবেন। এ ছাড়া যে ব্র্যান্ডের ফোন কিনবেন তাদের ওয়েবসাইটে নতুন পণ্যের দাম দেখে পুরোনো ফোনের দাম সম্পর্কে ভালো ধারণা পেতে পারেন।
ওয়ারেন্টি বুঝে নিন
অনেকেই নতুন ফোন কেনার কিছুদিনের মধ্যে আবার অন্য আরেকটি নতুন ফোনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। তখন পুরোনো মোবাইল ফোনটি বিক্রি করে দিতে চান। এক্ষেত্রে ফোনের ওয়ারেন্টি থেকে যায়। যদি পুরোনো ফোনের ক্ষেত্রে ওয়ারেন্টি পেয়ে যান, তো ভালো। ওয়ারেন্টি দেওয়া ফোন কেনার চেষ্টা করুন।

আরও পড়ুন: