রোমশ নাকে দূষণ থেকে সুরক্ষা!

.
.

চীনে বায়ুদূষণের তীব্রতা মোটেও খাটো করে দেখার বিষয় নয়। তবে নতুন একটি ভিডিওচিত্রে বিষয়টি এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা একই সঙ্গে হাস্যরসাত্মক এবং জনসচেতনতামূলক। মূলত, দেশটির নগরবাসীর দৃষ্টি কাড়াই এ ছবির লক্ষ্য।
‘হেয়ারি নোজ’ নামের ওই ভিডিওতে দেখানো হয়েছে এক নিরানন্দ ভবিষ্যৎ, যেখানে ক্ষতিকর ধোঁয়া থেকে বাঁচতে নারী-পুরুষ সবাই নাকের লোম লম্বা রাখতে শুরু করেছেন। এ কাহিনির সতর্কবার্তা হলো, মানুষ যদি নিজেদের জীবনযাত্রার ধরন না পাল্টায়, দূষণই তাদের বদলে দেবে।
দাতব্য সংস্থা ওয়াইল্ডএইডের চীন প্রতিনিধি মে মেই বলেন, সংকট নিরসনে সরকার কবে উদ্যোগ নেবে, সেই অপেক্ষায় জনগণের বসে থাকলে চলবে না। সমস্যা কতটা গুরুতর হতে চলেছে, সে সম্পর্কে রসিকতার মধ্য দিয়ে হলেও লোকে আলোচনা করুক—এটাই তাঁরা চান।
নতুন ছবিটির উপজীব্য হলো, চীনের কেতাদুরস্ত লোকজন নাকের লোম বড় রাখছেন এবং তার পরিচর্যাও করছেন। আর এতে বাতাসের ধোঁয়া ছাঁকার কাজটা হয়ে যায়। বায়ুদূষণ তো আর কমবার নয়! প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি তাই শিশু-কিশোর-তরুণ বয়সীরাও নাকের লোম লম্বা করতে শুরু করে। এভাবেই ব্যাপারটা তাদের জীবনধারার অংশ হয়ে যায়। কিন্তু একজন ব্যক্তি সিদ্ধান্ত নেন, তিনি অন্ধের মতো হাল ছেড়ে দেবেন না। তিনি নাকের লোম কেটে ফেলে ‘আগেকার দিনের’ মতোই শ্বাস নেবেন, যখন ‘আকাশের রং ছিল নীল’। শেষ কথা হলো এই, ‘বায়ুদূষণকে আগেই রোধ করতে হবে, না হলে তা আমাদেরই বদলে দেবে।’
ওয়াইল্ডএইড এই চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে জনগণকে বলতে চায়, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারের উদ্যোগের অপেক্ষা না করে নিজেরাই উদ্ভাবনী বিভিন্ন কাজ শুরু করে দিতে হবে। তাহলেই পরিবেশটাকে আরও সবুজ ও বসবাসের উপযোগী করা সম্ভব হবে। মে মেই বিবিসিকে বলেন, ‘বেইজিং ও সাংহাই নগরের দূষণ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ আছে। কিন্তু কেউই জানে না, কী করতে হবে। আমরা বলতে চাই, পরিবর্তন ঘটানোটা খুব কঠিন কাজ নয়। তবে প্রত্যেককেই এগিয়ে আসতে হবে। বেইজিংয়ের দূষণের ৩৫ শতাংশই যানবাহনের ধোঁয়ার কারণে ঘটে। তাই সাইকেল চালনা বা হাঁটার মাধ্যমে সত্যিকারের পরিবর্তন ঘটানো যেতে পারে।
লোকে সত্যি সত্যিই নাকের লোম লম্বা করার মতো অদ্ভুত জীবনধারা বেছে নেবে—ওয়াইল্ডএইড এমনটা আশা করে না। তবে এই প্রতীকী উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতের বিপদ সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করে তোলা সম্ভব বলে মনে করেন মেই।
নেচার সাময়িকীতে গত বছর প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনে প্রতিবছর দূষণের কারণে গড়ে ১৩ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়।