মানুষের কত টাকা হতে পারে!

ল্যারি অ্যালিসন
ল্যারি অ্যালিসন

একজন মানুষের কত টাকা হতে পারে? কত টাকা হলে তার প্রয়োজন ফুরায়? জীবন কি শুধু টাকার জন্যই? প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পারেন একজনই। নাম তাঁর ল্যারি অ্যালিসন। মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওরাকলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী তিনি।
সম্প্রতি এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সামনে বক্তব্য দিতে গিয়ে অর্থবিত্ত সম্পর্কে নিজের ধারণার কথা তুলে ধরেন ল্যারি। তিনি বলেন, ‘একটা সময় আসবে কষ্ট করে আয় করা অর্থ পুরোটা খরচ করতে পারবেন না। বিশ্বাস করুন, আমি নিজেই ক্লান্ত।’
ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট (ডক্টর অব হিউম্যান লেটার্স) ডিগ্রি গ্রহণ করার পর তিনি এখানকার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জীবন নিয়ে কিছু উপদেশ দেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ক্যানসার চিকিৎসা ও গবেষণাকেন্দ্র খোলার জন্য ২০ কোটি মার্কিন ডলার দান করার ঘোষণা দেন ল্যারি। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় দান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ক্যানসার গবেষণাকেন্দ্রটির পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন বিখ্যাত ক্যানসার চিকিৎসক ডেভিড আগুস। তিনি ল্যারি অ্যালিসনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু অ্যাপল প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসসহ প্রখ্যাত প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের ক্যানসার চিকিৎসা করেছেন।
ল্যারি অ্যালিসন তাঁর বক্তব্যে নিজের সম্পর্কেও কিছু তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমি যখন তোমাদের বয়সী ছিলাম, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল বিভাগে পড়ার স্বপ্ন দেখতাম।’
অবশ্য অ্যালিসন ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় ও শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও কোনোটাতেই পড়াশোনা শেষ করেননি। তবে স্বশিক্ষিত হয়ে কম্পিউটার নিয়ে যে জ্ঞান অর্জন করেন তিনি, তা দিয়েই প্রযুক্তি খাতে কাজ করতে নর্দান ক্যালিফোর্নিয়া অঞ্চলে চলে যান। এরপর তৈরি করেন ওরাকল ডেটাবেইস। বর্তমানে ওরাকল বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।

একটি সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে সম্পদশালী ব্যক্তিদের তালিকায় সাত নম্বরে আছেন অ্যালিসন।
ল্যারির কিছু উদ্ধৃতি:
১. ‘একটা সময় আসবে, অর্থই সবকিছু নয়। একটা সময় আপনি সব খরচ করতে পারবেন না, বিশ্বাস করুন, আমি ক্লান্ত।’
২. ‘মানুষ যখন আপনাকে পাগল বলতে শুরু করবে, তখনই মনে করবেন জীবনের সবচেয়ে বড় উদ্ভাবন করে বসেছেন।’
৩. ‘আমাদের মনের অনেক গভীরে জীবনে গুরুত্বপূর্ণ কিছু একটা করার সুপ্ত বাসনা থাকে।’
৪. ‘টিভি বিজ্ঞাপনে সেনাবাহিনীর সদস্যদের জীবনকে চাকরির চেয়ে রোমাঞ্চকর বলে দেখানো হয়। সিলিকন ভ্যালিতে দীর্ঘদিন কাটানোর বিষয়টি আমার কাছে সে রকম রোমাঞ্চকর মনে হয়।’
৫. ‘যেকোনো চলমান রোমাঞ্চের মতো সেটি কোথায় শেষ হবে, তার ধারণা আমার নেই। কিন্তু আমি জানি তা শেষ হবে।’
৬. ‘প্রতিটি প্রজন্মের মতো তোমার প্রজন্মও পৃথিবী বদলে দেবে। তুমি নতুন প্রযুক্তি নতুন শিল্প উদ্ভাবন করে যাবে।’
৭. ‘তুমি পৃথিবীকে বদলে দেবে, আর পৃথিবী তোমাকে বদলে দেবে।’
৮. ‘তোমার আবেগের সঙ্গে যতক্ষণ কোনো চাকরি না মেলে, ততক্ষণ খুঁজতে থাকো। আমি এটাই করেছি।’ তথ্যসূত্র: বিজনেস ইনসাইডার।