কেন লিংকড-ইন কিনছে মাইক্রোসফট

(বাঁ থেকে) জেফ ওয়েইনার, রেইড হফম্যান ও সত্য নাদেলা
(বাঁ থেকে) জেফ ওয়েইনার, রেইড হফম্যান ও সত্য নাদেলা

২ হাজার ৬২০ কোটি ডলারে লিংকড-ইন কিনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। এ ব্যাপারে লিংকড-ইনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেফ ওয়েইনার প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের উদ্দেশে লেখা খোলা চিঠিতে উল্লেখ করেন, ‘তোমাদের কারও মনে হয়তো উত্তেজনা, কারও মনে ভয় কিংবা দুঃখ বিরাজ করছে। কারও মনে হয়তো সব অনুভূতি একসঙ্গে কাজ করছে।’ তিনি আরও লেখেন, ‘প্রতিটি কার্যনির্বাহী সদস্যদের মনে অনুভূতি ঠিক এমনই, তবু কাজটা আমাদের করতে হচ্ছে।’
বড় দুটি প্রতিষ্ঠানের এক হয়ে যাওয়া বিনিয়োগকারী এবং গ্রাহকদের মধ্যে একধরনের আগ্রহের জন্ম দেয়। প্রথমত, দুটি প্রতিষ্ঠান সফল হতে পারবে কি না, দ্বিতীয়ত কাজের পরিসর কমবে কি না, তৃতীয়ত প্রতিষ্ঠান দুটি তাদের একীভূত হওয়ার সময়টাতে করা প্রতিশ্রুতিগুলো ভবিষ্যতে রাখতে পারবে কি না। এ ঘটনার পেছনে উত্তেজনাকর বিষয় হচ্ছে এই যে দুটো প্রতিষ্ঠানের কাজের সামঞ্জস্য রয়েছে। এমনকি তারা একে অন্যের পরিপূরক ও সমকেন্দ্রিক।
লিংকড-ইন মাইক্রোসফটের সঙ্গে থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করে যেতে পারবে যেমনটা হোয়াটসঅ্যাপ ফেসবুকের সঙ্গে থেকে করে যাচ্ছে। এতে দুটি প্রতিষ্ঠানের সফলতার পথ সুগম হবে।
মাইক্রোসফটের লক্ষ্য মানুষ যেন আরও বেশি অফিস ৩৬৫, স্কাইপ, করটানার মতো ক্লাউড অ্যাপগুলো ব্যবহার করে। এ লক্ষ্য পূরণে লিংকড-ইনের ৪৩ কোটি ৩০ লাখ সদস্য এগিয়ে আসবে বলেই মনে করেন সত্য নাদেলা।
মাইক্রোসফটের এতদিন কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছিল না, লিংকড-ইন সে অভাব পূরণ করবে। অন্যদিকে মাইক্রোসফট অফিস এবং আউটলুক ব্যবহারকারীদের লিংকড-ইন প্রোফাইল হালনাগাদ করাকে আরও সহজ করতে পারবে। সুতরাং দুটি প্রতিষ্ঠানের একীভূত হওয়ার মধ্য দিয়ে ব্যবহারকারীরা বেশ উপকৃত হবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
অনামিকা মণ্ডল, সূত্র: টাইম

লিংকড–ইন
২০০৩ থেকে ২০১৬
২০০৩: পেপালের সাবেক প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা রেইড হফম্যান সহকর্মীদের নিয়ে দল গঠন করে নতুন এক প্রকল্পে কাজ শুরু করেন। এই প্রকল্পটিই ২০০৩ সালে লিংকড–ইন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
২০০৪ ও ২০০৫: ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১০ লাখে পৌঁছে। এ সময়টায় চাকরি খোঁজা এবং নিয়োগদাতাদের জন্য কর্মী খোঁজার সুযোগ চালু করে।
২০০৮ ও ২০০৯: যুক্তরাজ্যে প্রথম শাখা খোলা হয় এবং নতুন নতুন ভাষায় লিংকড–ইন চালু করা হয়।
২০১১: নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে লিংকডইনের শেয়ার বিক্রি শুরু হয়। দিন কয়েকের মধ্যেই শেয়ারমূল্য দ্বিগুণে পৌঁছে।
২০১২: হ্যাকারদের হামলার মুখে পড়ে। প্রথমে ৬০ লাখ পাসওয়ার্ড চুরি হয়েছে বলে জানালেও গত মাসে জানা যায় পরিমাণটা ছিল ১০ কোটি।
২০১৬: ফেব্রুয়ারিতে শেয়ারমূল্য ৪৪ শতাংশ কমে যায়। এতে শুধু এক দিনে প্রতিষ্ঠানটির মূল্য ১ হাজার ১০০ কোটি ডলার কমে যায়। লিংকড-ইন কিনে নেওয়ার ঘোষণা দিেল শেয়ারমূল্যে ৪৬ শতাংশ ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়।