যন্ত্র যখন শেখে

যন্ত্র যখন শেখে
যন্ত্র যখন শেখে

যন্ত্রের শেখা’ মানে কী? শুনতে অদ্ভুত লাগলেও বিশ্বজুড়ে গবেষকদের মধ্যে শব্দ দুটি এই সময়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। যদিও এই মেশিন লার্নিং বিষয়ে গবেষণার শুরু অনেক আগেই কিন্তু এর অনেক ক্ষেত্র এখনো অসম্পূর্ণ রয়েছে, যা নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কোম্পানিতে গবেষণা চলছে। চলুন একটু জেনে নিই এর ব্যাপারে।
মেশিন লার্নিং’-এর মূল তত্ত্ব হচ্ছে বিপুল পরিমাণ ডেটা বা তথ্য-উপাত্ত থেকে কোনো নির্দিষ্ট তথ্যের প্যাটার্ন বা ‘মডেল’ সঠিকভাবে বের করা। এরপর সেটি ব্যবহার করে নতুন কোনো তথ্যের শ্রেণীবিন্যাস করা, যেটি ‘ক্লাসিফিকেশন’ হিসেবে পরিচিত। কথা হচ্ছে, এই ক্লাসিফিকেশন কেন করা দরকার? উত্তর হচ্ছে—ধরুন আপনাকে বলা হলো এক, দুই ও পাঁচ পয়সার শ্রেণীবিন্যাস করতে, আপনি কীভাবে সেটি করবেন? একটি উপায় হচ্ছে, আপনি পয়সাগুলো তাদের পরিধি ও ওজন অনুযায়ী ভাগ করতে পারেন। কারণ, একেক পয়সার পরিধি আর ওজন একটু ভিন্নই হয়ে থাকে। এই শ্রেণীবিন্যাস জিনিসটি মানুষের জন্য হয়তোবা অনেক সহজ, কিন্তু একটি কম্পিউটার প্রোগ্রামের জন্য নয়। এই শ্রেণীবিন্যাস কোনো প্রোগ্রামারের বোঝার জন্য দরকার অনেক ডেটা, যা থেকে প্রোগ্রাম বুঝতে পারবে সঠিকভাবে পয়সার শ্রেণীবিন্যাস ও শনাক্তকরণ। মেশিন লার্নিংয়ের প্রাথমিক উদ্দেশ্য এমনই। এখন আমরা দেখি কোথায় এর ব্যবহার এবং এর গুরুত্ব কী।

এর ব্যবহার হিসেবে প্রথমেই বলা যেতে পারে গুগল বা মাইক্রোসফটের সার্চ ইঞ্জিনের কথা। যেখানে আপনি বর্তমানে কোনো কিছু খোঁজার উদ্দেশ্যে আংশিক লিখলেই দেখবেন আপনি যা চাইছেন, তার খুব কাছাকাছি শব্দ (সাজেশন) চলে আসছে বক্সে। যেমন—prothom লিখলে prothom alo, prothom alo online—এসব আসছে সাজেশনে, যেন সার্চ ইঞ্জিনগুলো বোঝে আপনি কী চাইছেন এবং এটি সম্ভব হচ্ছে অনেক বছর ধরে সংগ্রহ করা আপনার-আমার মতো ব্যবহারকারীর সার্চ কি-ওয়ার্ড ডেটার কারণে। আরও ব্যবহার হিসেবে বলা যেতে পারে, আগামী কিছুদিনের আবহাওয়া কিরূপ হতে পারে তার ধারণা দেওয়া, হাতের লেখা শ্রেণীবিন্যাস করা এবং পথচারী শনাক্তকরণ, যেটি একটি জনপ্রিয় মেশিন লার্নিংয়ের গবেষণা। এসব উদাহরণ থেকেই বোঝা যাচ্ছেএর গুরুত্ব কেমন।

গুগল, মাইক্রোসফট, ইয়াহু, অ্যামাজন ছাড়াও অনেক কোম্পানি মেশিন লার্নিংয়ে দক্ষ লোকদের অনেক প্রাধান্য দিয়ে আসছে এবং বাংলাদেশেও এর দক্ষতাকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তিকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

লেখক: তড়িৎ প্রকৌশলের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী, ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডেলেড, অস্ট্রেলিয়া