মাথাও হ্যাক হয়!

.
.

মানুষের মস্তিষ্কেও হানা দিতে পারে হ্যাকাররা। মানুষের স্নায়ু-সংকেত নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়টি আয়ত্তে আসায় মস্তিষ্ক হ্যাক হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির মতো শোনালেও বিষয়টি বাস্তবতার কাছাকাছি চলে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলছেন, কৌশলে স্মার্টফোন বা কোনো ডিভাইসের অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ছবি দেখিয়ে মস্তিষ্কের কার্যকলাপ পড়ে নিতে পারে হ্যাকাররা। এ ক্ষেত্রে ব্রেইন-কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই) ব্যবহার করে মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়া রেকর্ড করে। বিসিআই হচ্ছে বিশেষ যোগাযোগ ব্যবস্থা যা মস্তিষ্ককে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে পারে। যখন এটি ব্যবহার করা হয়, তখন মস্তিষ্কের বার্তা সাধারণ পথে যায় না। ইইজির মতো সংকেতে রূপান্তরিত হয়।
বিসিআই চিকিৎসাক্ষেত্র ছাড়াও বিপণন, গেমিং ও বিনোদনশিল্পে ব্যবহৃত একটি প্রযুক্তি। মানুষের জীবনমান উন্নত করার প্রযুক্তি হিসেবে বিসিআই তৈরি করা হলেও এটি দুর্বৃত্তদের হাতে গেলে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি।

যেভাবে মস্তিষ্ক হ্যাক হয়
গবেষকেরা উদাহরণ হিসেবে বলেন, অনেক সময় ভিডিও গেম খেলার সময় অনেক পরিচিত ব্র্যান্ডের লোগো পর্দায় ভেসে ওঠে আবার তা হারিয়ে যায়। হ্যাকাররা গেমের মধ্যে ওই ধরনের ছবি প্রবেশ করায় এবং বিসিআই ব্যবহার করে মস্তিষ্কের অনিচ্ছাকৃত প্রতিক্রিয়ার বিষয়গুলো রেকর্ড করা যায়। এটি গ্রাহকদের সম্পর্কে দরকারি তথ্য সংগ্রহে বিজ্ঞাপনদাতাদের সাহায্য করতে সক্ষম। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও এটা কাজে লাগাতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের বরাতে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট মাদারবোর্ডের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দ্রুত নিরাপত্তা অবকাঠামো তৈরি করতে হবে, যাতে আমাদের মস্তিষ্ককে আমাদের বিরুদ্ধে কেউ কাজে লাগাতে না পারে। এটা ঠেকাতে হবে।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক প্রকৌশলী হাওয়ার্ড চিজেক মাদারবোর্ডকে বলেছেন, ‘খুব কম সময় আছে। আমরা যদি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে না পারি, তাহলে খুব দেরি হয়ে যাবে।

মস্তিষ্ক হ্যাকিং নিয়ে গবেষণা
ক্যালিফোর্নিয়া, অক্সফোর্ড ও জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক মানুষের মস্তিষ্ক থেকে পিন নম্বর, পাসওয়ার্ডের মতো স্পর্শকাতর তথ্য বের করে নেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করেন। তাঁরা এ কাজে সহজে পাওয়া যায় এমন সাশ্রয়ী দামের গেম কন্ট্রোলার ব্যবহার করেন। তাঁরা মস্তিষ্কের সংকেত পি৩০০ ধরে দেখিয়েছেন। মানুষ যখন পরিচিত বা অর্থপূর্ণ কোনো জিনিস দেখে তখন মস্তিষ্ক থেকে এ-সংকেত উৎপন্ন হয়। কোনো জিনিসকে চিনতে পারার ৩০০ মিলিসেকেন্ডের মধ্যে উৎপন্ন হয় বলে এর নাম পি৩০০।