কুমিল্লায় ২ এসিড নিক্ষেপকারীর ১৪ বছর করে কারাদণ্ড

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার উত্তরনগর গ্রামের জবা রানীসহ একই পরিবারের চারজনকে এসিড নিক্ষেপের চাঞ্চল্যকর মামলায় দুজনকে ১৪ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক নির্মল কান্তি চৌধুরী গতকাল বৃহস্পতিবার এ রায় প্রদান করেন। এসিডদগ্ধদের জন্য গঠিত প্রথম আলো সহায়ক তহবিল থেকে মামলাটি পরিচালনার খরচ যোগানো হয়। মামলার রায়ে আসামি বাবুল হোসেন ও পলাতক আসামি গৌতম মল্লিককে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছর কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। বাবুল হোসেনের পিতা মামলার আরেক আসামি ফজলুর রহমান মাস্টারকে মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়। কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে এসিড মামলায় এটিই প্রথম রায়। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে মামলাটির রায় ঘোষণার সময় সরকার কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু ও মামলায় তার সহকারি অ্যাডভোকেট আয়েশা বেগম, এসিডদগ্ধদের জন্য প্রথম আলো সহায়ক তহবিলের সমন্বয়কারীসহ বিভিন্ন সাংবাদিক ও আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। এসিডদগ্ধদের জন্য প্রথম আলো সহায়ক তহবিলের অর্থসাহায্যে পরিচালিত এ মামলাটির আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট কাজী সুলতান আহমেদ ও অ্যাডভোকেট আয়েশা বেগম। মামলাটির প্রাথমিক অবস্থায় অ্যাডভোকেট এম এ কাশেম ও অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন টিপু বিনা পয়সায় আইনগত সহায়তা দিয়েছিলেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান ও অ্যাভভোকেট হারুন উর রশীদ। উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ১১ জানুয়ারি ভোররাতে প্রতিবেশী বাবুল হোসেনের নিক্ষিপ্ত এসিডে জবা রানী সরকার, তার দুই বড় বোন লক্ষ্মীরানী সরকার ও পূর্ণিমা রানী সরকার এবং লক্ষ্মীরানীর শিশুপুত্র সোহাগ দগ্ধ হয়। ওইদিনই এ ব্যাপারে দাউদকান্দি থানায় মামলা হয়। পরে বাবুল ও তার বাবা আদালতে হাজির হলে দুজনকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। পরে বাবুলের বাবা ফজলুর রহমান জামিন লাভ করেন। পুলিশ ২০০২ সালের ৯ এপ্রিল মামলাটির অভিযোগপত্র দায়ের করে। মামলার ব্যয় নির্বাহের পাশাপাশি প্রথম আলো সহায়ক তহবিল থেকে এসিডদগ্ধ পরিবারটির কর্মসংস্থানের জন্য দুটি গাভী দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রথম আলো কুমিল্লা অফিসের সহায়তায় এসিডদগ্ধ পূর্ণিমা রানীকে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি দেওয়া হয়।