আলোর পাঠশালা শিক্ষার্থীদের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

অতিথি ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে সোমবার দিনব্যাপী বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ ও বিদ্যালয় পর্যন্ত পাকা সড়কের দুধারে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীরা। ছবি: প্রথম আলো।
অতিথি ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে সোমবার দিনব্যাপী বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ ও বিদ্যালয় পর্যন্ত পাকা সড়কের দুধারে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীরা। ছবি: প্রথম আলো।

নানা আনন্দ-আয়োজন, উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অতিথি ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীরা সোমবার দিনব্যাপী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ও পাঠশালা পর্যন্ত সদ্য নির্মিত পাকা সড়কের দুধারে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করেছে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বরেন্দ্র অঞ্চলে প্রত্যন্ত ক্ষুদ্র জাতিসত্তার কোলদের গ্রাম বাবুডাইংয়ে অবস্থিত প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত এ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগিয়ে এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন বৃক্ষ প্রেমিক কার্তিক পরামানিক। এ সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবক শফিকুল আলম, স্বাস্থ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালক এএফএম সাইফুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক সাইদুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা তাজুরুদ্দিন, শংকরবাটী পোল্লাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা খাতুন, পাঠানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুকা বেগম, বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে ঘুরে ঘুরে বিদ্যা দানকারী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তরিকুল ইসলাম, গ্রামের মোড়ল কার্তিক কোল টুডু, দেবেন কোল হাসদা, বন্ধুসভার উপদেষ্টা আজিজুর রহমান, সমাজসেবী আমিনুল ইসলাম, আদিবাসী ছাত্রনেতা দিলীপ পাহান, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বন্ধুসভার সদস্যবৃন্দ।

অতিথি ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে সোমবার দিনব্যাপী বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ ও বিদ্যালয় পর্যন্ত পাকা সড়কের দুধারে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীরা। ছবি: প্রথম আলো।
অতিথি ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে সোমবার দিনব্যাপী বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ ও বিদ্যালয় পর্যন্ত পাকা সড়কের দুধারে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীরা। ছবি: প্রথম আলো।

সকাল ১০টায় বিদ্যালয়ে অতিথিরা এসে উপস্থিত হলে নিজেদের সাংস্কৃতিক রীতি অনুযায়ী মাতৃভাষায় গান গেয়ে, নেচে, নিজেদের গাঁথা মালা দিয়ে অতিথিদের বরণ করে নেয় শিক্ষার্থীরা। বৃক্ষপ্রেমিক কার্তিক পরামানিক, হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক সাইফুর রহমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেন। কার্তিক পরামানিক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মানুষের জীবনে প্রকৃতি ও গাছপালার গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, অক্সিজেন দিয়ে খাদ্য দিয়ে গাছপালা আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। আমাদেরও দায়িত্ব গাছপালাকে ভালবাসা। তিনি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ও সড়কের দুপাশে লাগানো গাছ রক্ষার জন্য নিয়মিত পরিচর্যার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীদের। সোমবার দিনব্যাপী ফুল, ফল ও ওষুধী মিলিয়ে ১৩০টি গাছ লাগানো হয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কানাই চন্দ্র দাস জানান, এক কিলোমিটার পাকা সড়কের দুধারে পর্যায়ক্রমে এই বর্ষাকালেই বিভিন্ন ধরনের এক হাজার গাছ লাগানো হবে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ বিদ্যালয়টির কারণেই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) একজন প্রকৌশলীর নজরে আসে গ্রামটি। এ ছাড়া এখানে দূর্গম যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ে প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে সড়ক নির্মাণে এগিয়ে আসে এলজিইডি। সড়কটি গ্রামবাসী ও শিক্ষার্থীদের কাছে ‘স্বপ্নের সড়ক’ এর মতই। গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা মিলে সড়কটিকে মনের মতো করে সাজাবে। এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতের সময় যেন পথচারীদের মনপ্রাণ জুড়ায়। 

বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালা প্রাঙ্গণে একটি কৃষ্ণচূড়া ফুলের গাছ লাগিয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করছেন বৃক্ষপ্রেমী কার্তিক পরামানিক। সঙ্গে রয়েছেন অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো।
বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালা প্রাঙ্গণে একটি কৃষ্ণচূড়া ফুলের গাছ লাগিয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করছেন বৃক্ষপ্রেমী কার্তিক পরামানিক। সঙ্গে রয়েছেন অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো।

প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে গ্রামের মোড়ল কার্তিক কোল টুডু (৬২) প্রথম আলোকে বলেন, হামরা স্বপনেও ভাবিনি যে এই জীবনে হামাদের গাঁয়ে পিচঢালা রাস্তা দেখ্যা যাইতে পারবো। সবই হোইলো ইসকুলটার লাগি। প্রথম আলোর লাগি। হামরা রাস্তাটা গাছ-গাছালি দিয়া সুন্দর কইর্যা সাজাবো।

বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উপলক্ষে ভূরিভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ কর্মসূচিতে গাছের চারা দিয়ে সহযোগিতা করে মনামিনা এগ্রো পার্ক ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টার।