দারিদ্র্য জয় করে এগিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা

২০১৭ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অসামান্য কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখা শিক্ষার্থীরা। তাঁরা এবার (২০১৯) এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেন। ছবি: প্রথম আলো।
২০১৭ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অসামান্য কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখা শিক্ষার্থীরা। তাঁরা এবার (২০১৯) এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেন। ছবি: প্রথম আলো।

ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিলের মাধ্যমে দরিদ্র অথচ মেধাবী, তাদের শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে আসছে। প্রথম দিকে শুধু এইচএসসি পর্যায়ের অদম্য মেধাবীদের দুই বছরের জন্য শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হতো। পরে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া অদম্য মেধাবীদের মধ্যে যাঁরা এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পাবেন, তাঁদের উচ্চশিক্ষার জন্য শিক্ষাবৃত্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট। উচ্চশিক্ষার জন্য বৃত্তি দেওয়া শুরু হয় ২০১০ সাল থেকে। প্রতিবছর নতুন করে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া ৫০ জন অদম্য মেধাবীকে এই ব্যাংকের সহায়তায় শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পর্যায়ে শিক্ষাবৃত্তি পান মোট ৫০ জন। এর মধ্যে ৪৬ জন এ বছর (২০১৯) এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। মোট ৪৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৩ জন জিপিএ-৫ অর্জন করেছেন। ৮ জন বিজ্ঞান বিভাগ থেকে, ৪ জন মানবিক বিভাগ ও বাণিজ্য বিভাগ থেকে বিভাগ থেকে ১জন এই সাফল্য ধরে রেখেছেন। এ গ্রেড পেয়েছে ১৯ জন, এর মধ্যে জিপিএ ৪.৫ বা তার ওপরে পেয়েছেন ৯ জন অদম্য মেধাবী। অবশিষ্টরা বিভিন্ন গ্রেডে পাশ করেছেন। যে ০৪ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়নি তাদের একজন ডিপ্লোমা পড়ছেন। অসুস্থতার জন্য ৩ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি। একজনের ফল স্থগিত আছে। উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই এই ফল প্রকাশ করা হয়।

ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল।
ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল।

যাঁরা ভালো ফল করেছেন তারা উচ্চশিক্ষার জন্যও বৃত্তিপ্রাপ্ত হবেন। এ রকম কয়েকজনের সঙ্গে  আলাপ করে জেনেছি তাদের পরিশ্রমের কথা। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন রাফি তার সাফল্য ধরে রেখেছেন। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়েও জিপিএ-৫ পেয়ে সেরা ফলটা করেছেন রাফি।চট্টগ্রামের পটিয়া সরকারি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে এই সফলতা পেয়েছেন তিনি। কথা হলো রাফির সঙ্গে। তিনি জানান, ‘নিময় মেনে কঠোর পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই। যেমন-আমার প্রতিবন্ধীতা আমাকে দমাতে পারেনি। আমি  জানি, আমি সফল হবই।’ রাফির মনোবল দেখে মুগ্ধই হতে হয়। রাফি ছাড়াও কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। কথা হলো লিমানা খন্দকার, আঁখি খাতুন সৌরভ চৌহানের মতো আরও অনেকের সঙ্গে। তাঁদের প্রত্যেকের সফলতার পেছনে একটি মন্ত্রই কাজ করেছে তা হলো, কঠোর মনোবল ও নিয়ম মেনে পরিশ্রম করা। প্রত্যেকের লক্ষ্যও একই। ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো বিষয়ে ভর্তি হয়ে সুনাগরিক হয়ে নিজ পরিবার ও দেশের সেবক হওয়া। সেই সঙ্গে তাঁরা ব্র্যাক ব্যাংক ও প্রথম আলো ট্রাস্টের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ।

প্রথম আলো ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগিতায় কার্যক্রমটি পরিচালিত হয়। প্রথম আলোর সাংবাদিকেরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে অদম্য মেধাবীদের নির্বাচন করেন। এ প্রকল্পের আওতায় প্রতিবছর উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়।