‘আমার ছেলে কলেজের বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে মাদকের সংস্পর্শে আসে। বিষয়টি জানতে পেরে প্রথমে আমি অনেক হতাশ হয়ে পড়ি। পরে আমি জানতে পারি প্রথম আলো ট্রাস্টের মাদকবিরোধী আন্দোলনের কথা। পরে এখানে এসে চিকিৎসকের পরামর্শে আমি আমার ছেলেকে মাদক থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হই।’
কথাগুলো বাসাবোর এক মায়ের। তিনি গতকাল শনিবার প্রথম আলো ট্রাস্টের ১১০তম মাদকবিরোধী পরামর্শ সহায়তা সভায় অংশ নিয়েছিলেন। প্রতি মাসে এ সভার আয়োজন করা হয়।
গতকাল ধানমন্ডির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে আয়োজিত সভা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আসা মাদকাসক্ত ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা প্রথম পর্বে চিকিৎসকের সঙ্গে একান্তে কথা বলে ব্যবস্থাপত্র নেন। দ্বিতীয় পর্বে ছিল আলোচনা সভা।
আলোচনা সভায় একজন বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র বলেন, ‘ভুল ধারণা থেকে মাদক সেবন শুরু করি। পরে নিজের ভুল বুঝতে পারি। নিজেকে শোধরানোর জন্য পরামর্শ সহায়তা সভায় আসি। এখানে এসে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে মাদকাসক্তি পুনর্বাসনকেন্দ্রে ভর্তি হই। এখন আমি ভালো আছি।’
সভায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, মাদকাসক্তি সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। অনেক মাদকাসক্ত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা মনে করেন নিরাময়প্রক্রিয়া শেষ হওয়া মানে সব শেষ, আসলে তা নয়। এখান থেকে সুস্থ হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু। নিরাময়কেন্দ্র থেকে ফিরে আসার পর থেকে পরিবারের সদস্যদের তার প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. জিল্লুর রহমান খান, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ফারজানা রহমান, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ফাতিমা মারিয়া খান ও শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. জোবায়ের মিয়া, কেন্দ্রীয় মাদকাসক্ত পুনর্বাসনকেন্দ্রের আবাসিক চিকিৎসক মো. রাহেনুল ইসলাম।
সভা সঞ্চালনা করেন প্রথম আলো ট্রাস্টের জ্যেষ্ঠ কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ফেরদৌস ফয়সাল।
আগামী ২৩ নভেম্বর বিকেল চারটায় একই জায়গায় পরবর্তী পরামর্শ সহায়তা সভা অনুষ্ঠিত হবে।